in

শপিংয়ে খরচ বাচানোর দুর্দান্ত ৮টি টিপস

8-great-tips-to-save-money-while-shopping

শপিং করতে গিয়ে বেশুমার খরচ করে চলে আসা আমাদের অনেকের অভ্যাস। তাই শপিং করা চাই স্মার্টভাবে। শপিং করাটাও একটা আর্ট, যা শিখে নিতে হয়। আসুন আপনাদের সাথে আমি আটটি শপিং টিপস শেয়ার করি। আশা করি এগুলো আপনার উপকারে আসবে।

১. শপিংয়ে যাওয়ার আগে শপিং লিস্ট করুন

এটাই আপনাদের জন্য এক নম্বর টিপস। আমরা শপিংয়ে যেয়ে প্রায়ই বাড়তি খরচ করে ফেলি অথবা এমন জিনিস কিনি যা কেনার কোনো পরিকল্পনা বা ইচ্ছা আমাদের ছিল না। ওসব জিনিসের কোনো প্রয়োজনও হয়তো ছিল না, ফলে সেগুলো অব্যবহৃতই পড়ে থাকে। আপনার কষ্টার্জিত টাকা আর মূল্যবান সময় নিশ্চয়ই ফালতু কিছু কেনায় ব্যয় করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তাই কিছুটা প্রিপারেশন নিয়েই শপিংয়ে যান। দেখে নিন আপনার বাসায় কি আছে আর কি প্রয়োজন। এরপর সে অনুযায়ী একটা লিস্ট বানিয়ে নিন। শপিংয়ে যেয়ে কেবল লিস্ট দেখে দেখে বাজার করবেন।

২. বাজেট সেট করুন

বাজেট। এটাও গুরত্বপূর্ণ। অনেকেই এমন জিনিস কেনায় অতিরিক্ত ব্যয় করে যা কেনার ইচ্ছা, প্রয়োজন বা ব্যবহার কোনোটাই ছিল না। তারা এটা করে কারণ শুরুতে শপিংয়ের বাজেট তারা সেট করে নেয়নি। তারা সামনে যা পায় তা-ই কেনে। আপনাকে আগেই যাচাই করে নিতে হবে যে আপনি কতখানি টাকা শপিংয়ে ব্যয় করবেন, কতখানি খরচ করলে আপনার সমস্যা হবে না। নিশ্চয়ই চাইবেন না, অতিরিক্ত ব্যয় করার পর রিসিপ্ট দেখে আকাশ থেকে পড়তে। কখনো সামর্থ্যের বাইরে যেয়ে কিছু কিনবেন না। লিস্টের মতো বাজেটের বাইরেও কখনো যাবেন না। বাজেট ফুল হয়ে গেলেই শপিং বন্ধ, ব্যস!

৩. টাকা দিয়ে পেমেন্ট করুন, কার্ডে নয়

আমরা যখন ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করি, তখন ক্যাশের চাইতে প্রায় ২০-৫০% বেশি খরচ করি। যেহেতু টাকাটা সরাসরি হাত দিয়ে গুণে গুণে দেওয়া লাগছে না, তাই বড় বড় কেনাকাটায় পেমেন্ট করলেও বুকের ব্যথা হয় না। ক্রেডিট কার্ডের টাকাকে আসল টাকা মনে হয় না। অথচ টাকাগুলো কাগজের টাকার মতোই বাস্তব। তাই বাজেট করার পর সেই পরিমাণ ক্যাশ টাকা নিয়েই শপিংয়ে যান। এতে আপনার শপিং অভিজ্ঞতাও ভালো ও বাস্তবসম্মত হবে।

৪. শপিংয়ের সময় বেঁধে নিন

শপিং সেন্টারে যেয়ে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাঘুরি করবেন না। অনেকেই আছে যাদের কাছে শপিং সেন্টারে যাওয়াটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা অনেক বিকেল শপিং মলে ঘোরাঘুরি করে কাটিয়ে দেয়। এটা মোটেও ভালো কিছু না। স্মার্ট শপাররা এই কাজ করে না! তারা বেহুদা ঘোরাঘুরি করে সময় অপচয় করে না। আপনি শপিংয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় সেট করে নিন। আপনি সেই সময়ের ভেতর যেভাবেই হোক শপিং শেষ করবেন। একটু এদিক সেদিক হতেই পারে। সময় শেষ মানেই বাড়ির পথে হাঁটা ধরবেন। আপনার সময়ের দাম আছে। ঘুরে ঘুরে সময় অপচয়ের কোনো মানে হয় না। সব কেনা হয়ে গেলে সেদিনের মনোযোগ অন্য দিকে দিন।

৫. শপিংয়ের জন্য ভালো সময় বেছে নিন

শপিং করা সবসময় আনন্দদায়ক না-ও হতে পারে। বরং অনেক সময় ক্লান্তি এসে ভর করে এই দোকান আর সেই দোকান ঘুরতে ঘুরতে। তাই আপনাকে উপযুক্ত সময় বুঝে শপিংয়ে যেতে হবে। যেসব দিনে বেশি ভিড় থাকে সেগুলো পরিহার করে চলার চেষ্টা করুন। বেশি ভিড় থাকলে আপনার মেজাজ খারাপ হয়ে যেতে পারে। মেজাজ খারাপ নিয়ে আর যাই হোক, স্মার্ট শপিং হবে না। বাহ্যিক পরিবেশ দ্বারা আমরা প্রভাবিত হই। বেশি ভিড়, গ্যাঞ্জাম এগুলোতে ভালোমতো চিন্তাভাবনা করা যায় না। তাই যে সময়টায় সাধারণত আপনার মন ভালো থাকে, আপনি অ্যালার্ট থাকেন তখনই শপিংয়ে যান।

৬. একা শপিং করুন

শপিং পার্টনার নিয়ে যাওয়াটা কখনো কখনো আপনার পকেট খালি হওয়ার কারণ হতে পারে। তারা আমাদের দিয়ে এমন কিছু কিনিয়ে নিতে পারে যেটা হয়তো আমাদের প্রয়োজন নেই বা কেনার ইচ্ছাও নেই। আমাদের দিয়ে কোনো কিছু কিনিয়ে নেওয়ার পেছনে তাদের গুপ্ত দুরভিসন্ধিও (অনিচ্ছাকৃত) থাকতে পারে। তবে যাই থাকুক না কেন, সেটার পরিণতি আপনার ভোগ করা মোটেও উচিত হবে না। সামাজিক কাজ বা রিক্রিয়েশন হিসেবে যদি শপিংয়ে যেতে চান সেটা ঠিক আছে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে কেনাকাটা বাদ দিন, কেবলই সামাজিক কাজ হিসেবেই জিনিসটাকে দেখুন। দুয়েকটা দোকান একসাথে ঘুরে দেখুন, পারলে রেস্টুরেন্টেও খান, কিন্তু কেনাকাটা হবে শুধুই একাকী।

৭. ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত, একাকী, বিরক্ত অবস্থায় শপিং করবেন না  

কিছু কিছু মানসিক অবস্থায় মানুষ অধিক পরিমাণে, বলতে গেলে অতিরিক্ত কেনাকাটা করে এবং এমন জিনিস কিনে ফেলে যা তাদের প্রয়োজন বা দরকার নেই। এতে স্মার্টভাবে কেনাকাটা করা সম্ভব হয় না। আপনার ভেতর শপিংয়ের সময় যদি এরকম ইমোশন কাজ করে, যেমন আপনার ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত, একাকী, বিরক্ত লাগে, তাহলে ভুলেও শপিংয়ে যাবেন না। বরং মানসিক অবস্থাকে ঠিক করার জন্য অন্য কাজ করুন। এরপর যখন ঠিক হবেন তখন যান।

৮. মনে রাখবেন, দোকানদারের কাজই বিক্রি করা

দোকানদার যতই ফ্রেন্ডলি বা ভালো হোক কেন, একটা সত্য কখনই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব না। সেটা হলঃ দোকানদারের কাজ বিক্রি করা। আপনার জন্য অপ্রয়োজনীয় হলেও সেটা বিক্রি করা তার উদ্দেশ্য। সে কখনই চাইবে না যে আপনি খালি হাতে বেরিয়ে যান। এ জন্যই তাদেরকে বেতন দিয়ে রাখা হয়েছে। কিছু একটা আপনাকে বিক্রি করতে হবে, নয়তো অন্তত আপনার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করতে হবে যেন আপনি পরে কখনো এসে তাদের কাছে কেনাকাটা করেন। এটাই তাদের ব্যবসা। দোকানদাররা যতই বাকপটু বা বন্ধুসুলভ হোক না কেন, আমাদের বন্ধু হওয়া তাদের কাজ না। তারা বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করবে, কিন্তু উদ্দেশ্য একটাইঃ কিছু একটা বিক্রি করা। তাই এই বিষয়টা মাথায় রাখবেন যে প্রয়োজনের বাইরে যেন দোকানদারের কথায় প্ররোচিত হয়ে কিছু না কেনেন।

What do you think?

Written by শাহেদ হাসান

আমি লেখালেখি করতে বরাবরই ভালোবেসেছি। বর্তমানে গ্রন্থ অনুবাদ ও মৌলিক লেখার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন ব্লগেও লেখালেখি করছি। পড়াশোনা করছি রাজশাহী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

Mental health and testosterone hormone

মানসিক স্বাস্থ্যে টেস্টোস্টেরন হরমোনের প্রভাব

skin care for teenagers problems and solutions

টিনএজারদের ত্বকের যত্ন: সমস্যা ও সমাধান