in

টিনএজারদের ত্বকের যত্ন: সমস্যা ও সমাধান

skin care for teenagers problems and solutions

টিনএজারদের জন্য উপযোগী ত্বকের যত্ন কেমন হতে পারে তা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন রয়েছে। অন্য বয়সের তুলনায় টিনএজার বা বয়ঃসন্ধিকালের মেয়েদের ত্বকের সমস্যা একটু ভিন্ন তাই সমাধানটাও আলাদা। আশা করি আজকের লেখাটি পড়লে আপনারা সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

ছোট থেকে বড় হয়ে ওঠার মধ্যবর্তী সময়টুকু, অর্থাৎ বয়ঃসন্ধিকাল বা টিনএজ লাইফ প্রত্যেকের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় বিভিন্ন হরমোনজনিত কারণে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন তো আসেই, সেই সাথে ত্বকে রুক্ষতা, ব্রণ, হোয়াইটহেডস বা ব্ল্যাকহেডসের মতো সমস্যাও দেখা দেয়। সঠিকভাবে স্কিনকেয়ার করা হলে ত্বকের এ সমস্যাগুলো থেকে দ্রুতই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

শুরুতেই বলে রাখা ভালো, যেহেতু টিনএজারদের ত্বক এমনিতেই একটু সেনসিটিভ থাকে, তাই তাদের খুব বেশি প্রোডাক্ট ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই, কারণ অতিরিক্ত প্রোডাক্টের কারণে ত্বকের সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে। তাদেরকে নিজের ত্বকের ধরন ও সমস্যা বুঝে অল্প কিছু প্রোডাক্টের সমন্বয়ে বেসিক স্কিনকেয়ার রুটিন মেইনটেইন করতে হবে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেয়া যাক টিনএজার ফ্রেন্ডলি স্কিনকেয়ার রুটিনের ধাপগুলো সম্পর্কে।

০১। মাইল্ড ফেইসওয়াশ ব্যবহার করতে হবে

টিনএজারদের দিনের একটা লম্বা সময় স্কুল-কলেজ কিংবা কোচিংয়ের জন্য বাইরে থাকতে হয়। তাই বাইরের ধুলাবালি থেকে ত্বক পরিষ্কার রাখতে ফেইসওয়াশ তো ব্যবহার করতেই হবে৷

ফেইসওয়াশের ক্ষেত্রে টিনএজারদের অবশ্যই মাইল্ড ফর্মুলার যেকোনো ফেইসওয়াশ ব্যবহার করতে হবে, যেটি কোনো ড্রাইনেস বা ইরিটেশন ছাড়াই তাদের ত্বক ভেতর থেকে ক্লিন করতে সাহায্য করবে৷

Simple ব্র‍্যান্ডের Kind to Skin Moisturising Smooth & Healthy Facial Wash – এ ফেইসওয়াশটি ব্যক্তিগতভাবে আমার বেশ পছন্দের। এটিতে ভিটামিন বি৫ ও ভিটামিন ই থাকায় এটি নিয়মিত ব্যবহার করলেও ত্বকে কোনো ড্রাইনেস অনুভূত হয় না। তাছাড়া এটির ফর্মুলা মাইন্ড হওয়ার কারণে টিনএজারদের ত্বকেও খুব ভালো স্যুট করবে।

০২। লাইট ময়েশ্চারাইজার

বেশিরভাগ টিনএজারদের ত্বকেই ন্যাচারাল অয়েলের প্রোডাকশন বেশি থাকার কারণে লোমকূপ বন্ধ হয়ে ব্রণের সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। তাই তাদের ত্বকের জন্য লাইট ময়েশ্চারাইজার সবচেয়ে উপযোগী।

সাধারণত লাইট ময়েশ্চারাইজার ওয়াটার বেইজড হওয়ার কারণে এটি খুব দ্রুত ত্বকের সাথে মিশে যায় এবং ত্বকে ভারীও অনুভূত হয় না। সেই সাথে লাইট ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বক ঘামেওনা। তাই দিনের বেলা স্কুল কলেজে যেতে হলেও নিশ্চিন্তে এটি ব্যবহার করা যায়।

রিজনেবল প্রাইসের মধ্যে Ponds এর Light Gel Moisturizer টি টিনএজারদের ত্বকের জন্য বেশ ভালো। নন অয়েলি ফর্মুলার এই ময়েশ্চারাইজারটিতে গ্লিসারিন ও ভিটামিন ই থাকায় দীর্ঘসময় এটি ত্বক ময়েশ্চারাইজড রাখে। যেকোনো স্কিনটাইপেই এটি ব্যবহার করা যায়।

০৩। ভালো প্রটেকশনের সানস্ক্রিন

সান ট্যানিং এমন একটি সমস্যা যে সমস্যায় টিনএজারসহ কম বেশি সবাই ভুগে থাকে। সানস্ক্রিন ব্যবহার না করলে মুখে, হাতে ও পায়ে রোদে পুড়ে ট্যানিং হয়, যা থেকে হাইপারপিগমেন্টেশন, রেডনেস বা ইচিং হতে পারে। সেই সাথে সূর্যের আলোর নিচে বেশিক্ষণ থাকলে ব্রণের সমস্যা বেড়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।

তাই টিনএজারদের স্কিনকেয়ার রুটিনে অবশ্যই ভালো প্রটেকশনের একটি সানস্ক্রিন থাকতে হবে। টিনএজাররা ফিজিক্যাল বা কেমিক্যাল দুই ধরনের সানস্ক্রিনই ব্যবহার করতে পারে। তবে যেটিই ব্যবহার করুক না কেন, তাদেরকে অন্তত এসপিএফ ৩০ রয়েছে এমন সানস্ক্রিন বেছে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

০৪৷ সপ্তাহে ১/২ দিন ত্বক এক্সফোলিয়েট করতে হবে

যদি ত্বকের ভেতর ডেড স্কিনসেল জমে থাকে, তাহলে কোনো স্কিন কেয়ার রুটিনই সঠিকভাবে কাজ করে না। তাই টিনএজারদের ধীরে ধীরে ত্বক এক্সফোলিয়েট করার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। সপ্তাহে এক থেকে দুইবার ফিজিক্যাল অথবা কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করলে ত্বকের ডেডসেলগুলো দূর হয় এবং এতে করে ব্রণ, হোয়াইটহেডস অথবা ব্ল্যাকহেডসের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়।

তবে যদি ত্বকে ব্রণ থাকে, তাহলে ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করা যাবেনা। ও হ্যাঁ, কখনোই সপ্তাহে এক থেকে দুইবারের বেশি এই ধাপটি অনুসরণ করা যাবে না। কারণ প্রয়োজনের বেশি এক্সফোলিয়েট করলে ত্বক খুবই সেনসিটিভ হয়ে যায়, যা থেকে অ্যালার্জিক রিয়্যাকশন হতে পারে।

০৫। ত্বকের পাশাপাশি ঠোঁটের যত্ন

ত্বকের যত্নে অনেক কিছু করতে গিয়ে ঠোঁটেরও যে যত্নের প্রয়োজন রয়েছে, তা কিন্তু আমরা ভুলেই যাই৷ বিশেষ করে টিনএজারদের ক্ষেত্রে ঠোঁটের যত্ন নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা না হয়ে ঠোঁট ফেটে যাওয়া কিংবা ঠোঁট কালো হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই টিনএজারদের জন্য পরামর্শ থাকবে, বাইরে যাওয়ার সময় এসপিএফযুক্ত লিপবাম ব্যবহার করার। সেই সাথে প্রতি সপ্তাহে একবার চিনি ও মধু একসাথে মিশিয়ে ঠোঁটে স্ক্রাব করলে ঠোঁট কোমল ও গোলাপি করে তোলা সম্ভব হয়।

এটুকুই ছিলো আজকের আলোচনা। অনেক সময় দেখা যায়, কৌতূহলের বশে টিনএজাররা অনেক ধরনের স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে শুরু করে এবং না বুঝেই ত্বকের ক্ষতি করে ফেলে। এই কাজটি করা যাবেনা। আমি আজকে যে কয়েকটি প্রোডাক্টের কথা বলেছি সেগুলোই টিনএজারদের স্কিন কেয়ারের জন্য যথেষ্ট। তাই এই প্রোডাক্টগুলোই নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক ভালো রাখা সম্ভব হবে। আর যদি ত্বকের সমস্যা খুব বেশি বেড়ে যায়, তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

What do you think?

Written by সুমাইয়া রহমান দোলা

লেখালেখি শুরু করেছিলাম শখের বশেই৷ এখন এটি আমার নেশা, আবার পেশা ও বটে। প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি এখন ভালো লেখক হয়ে ওঠার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

8-great-tips-to-save-money-while-shopping

শপিংয়ে খরচ বাচানোর দুর্দান্ত ৮টি টিপস

প্রাকৃতিকভাবে টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধির উপায়

প্রাকৃতিকভাবে টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধির পাঁচ উপায়