in ,

কিশোর-কিশোরীদের মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে এমন খাবার

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০২২

foods-that-help-teens-stay-mentally-healthy

বয়ঃসন্ধিকাল শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধি এবং মানসিক বিকাশের একটি দ্রুততম পর্যায়। কিশোর-কিশোরীদের সুস্থ শারীরিক বিকাশের জন্য যথাযথ পুষ্টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক বৃদ্ধিকে অব্যাহত রাখার পাশাপাশি, ভাল খাবার মানসিক সুস্থতার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে এটা খুবই স্পষ্ট যে প্রক্রিয়াজাত খাবার, রিফাইন করা চিনিযুক্ত খাবার ইত্যাদি খাবারে পুষ্টির ঘাটতি রয়েছে। দুঃখজনকভাবে বর্তমান সময়ে টিনেজারদের মধ্যে এই সমস্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার বেশী খাওয়ার প্রবনতা রয়েছে যার ফলে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি থেকে যায়। আর এই কারনেই বিষণ্ণতা, নেতিবাচক মনোভাব, মানসিক ট্রমা ইত্যাদির শিকার হচ্ছে এখনকার কিশোর-কিশোরীরা।

মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় খাদ্যের ভূমিকা

প্রতিবছর অক্টোবর মাসের ১০ তারিখ বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালিত হয়। এই দিবসটি মূলত মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই পালিত হয়। বয়ঃসন্ধিকাল মানবজীবনের এমন একটি গঠনমূলক সময় যখন শিশু যৌবনে পা রাখে। এই সময়ের মধ্যে, তারা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে শুরু করে এবং বিভিন্ন সামাজিক এবং মানসিক গঠনমূলক অভ্যাসও শিখে। এটি জীবনের এমন একটি পর্যায় যখন জীবনের বিভিন্ন সমস্যা কীভাবে মোকাবেলা করতে হবে, সমস্যার সমাধান কিভাবে করতে হবে এবং কিভাবে ইন্টারপার্সোনাল স্কিল বাড়াতে হবে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন প্রয়োজন হয়। এই সময় শিশুরা নিজের আবেগের উপর নিয়ন্ত্রন করতে শিখতে শুরু করে। আর এখানেই প্রয়োজন পুষ্টিকর খাদ্যের। কারণ বিভিন্ন গবেষণা থেকে এখন এটা প্রমানিত যে, পুষ্টিকর খাদ্য যে কেবল শারীরিক বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন তা নয়, মানসিক বৃদ্ধির জন্যেও অনেক জরুরী। এমনকি ইতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং মানসিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার জন্য সরাসরি খাদ্যের ভূমিকা রয়েছে। চলুন দেখি আপনার সন্তানের মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য খাদ্যাভাস কেমন হওয়া উচিত।

বয়ঃসন্ধিকাল মানবজীবনের এমন একটি গঠনমূলক সময় যখন শিশু যৌবনে পা রাখে। এই সময়ের মধ্যে, তারা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে শুরু করে এবং বিভিন্ন সামাজিক এবং মানসিক গঠনমূলক অভ্যাসও শিখে। এটি জীবনের এমন একটি পর্যায় যখন জীবনের বিভিন্ন সমস্যা কীভাবে মোকাবেলা করতে হবে, সমস্যার সমাধান কিভাবে করতে হবে এবং কিভাবে ইন্টারপার্সোনাল স্কিল বাড়াতে হবে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন প্রয়োজন হয়। এই সময় শিশুরা নিজের আবেগের উপর নিয়ন্ত্রন করতে শিখতে শুরু করে। আর এখানেই প্রয়োজন পুষ্টিকর খাদ্যের।

১। কিছু বাজে খাবার পরিহার করুন

উচ্চ মাত্রায় লবন, ও চিনি যুক্ত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর আর এটি একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। কারণ এই খাবারগুলো মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিনের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।  

বিষণ্ণতার শিকার রোগীদের মধ্যে এই প্রোটিন কম পাওয়া যায়। কিশোর-কিশোরীদের খাবার সম্পর্কে সচেতন করা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই বয়সে তাদের নিজস্ব রুচি তৈরি হয়। টিভি, বিজ্ঞাপন, সমবয়সীদের চাপ ইত্যাদি কারনে কিশোর কিশোরীরা অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অভ্যস্ত হতে পারে। তাই একজন অভিভাবক হিসেবে, স্বাস্থ্যকর ও তাজা খাবার যাতে আপনার সন্তানের খাদ্যতালিকায় থাকে সে বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত।

২। অন্ত্রের দিকে খেয়াল রাখুন  

আমাদের অন্ত্রে বসবাসকারী অণুজীব মাইক্রোবায়োটা এবং মস্তিষ্কের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে। একে অন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। আর এটি স্বীকৃত যে এই অনুজীব স্নায়বিক রোগে কিছুটা ভূমিকা রাখে। তাই অন্ত্রকে সুস্থ রাখতে প্রচুর পরিমানে ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়া জরুরী। প্রোবায়োটিক খাবার যেমন দইও অন্ত্রের জন্য অনেক উপকারী।

এছাড়াও শুধু খাবার খাওয়া জরুরী না, খাবার যেন সঠিকভাবে হজম হয় সেদিকেও খেয়াল রাখা জরুরী। তাই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে যেমন ডাইনিং টেবিলে খাবার খাওয়া, খাওয়ার সময় মোবাইল, টিভি ইত্যাদি পরিহার করা, ভালোভাবে খাবার চিবিয়ে খাওয়া ইত্যাদি। খাবার যদি ভালোভাবে হজম হয় তাহলে পুষ্টিও সম্পূর্নভাবে শোষিত হয়।  

৩। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট গ্রহন করতে হবে

ওমেগা ৩ মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য অসাধারন কাজ করে। এটি মস্তিষ্কের রসায়ন বাড়ায়, প্রদাহ কমায় এবং মুডকে প্রফুল্ল রাখে ও বিষণ্নতা প্রতিরোধ করে। বর্তমানে কিশোর- কিশোরীরা অনেক বেশী শরীর সচেতন এবং তাদের ওজন কমানোর চেষ্টায় চর্বি জাতীয় খাবার একেবারেই বাদ দিয়ে দেয়। কিন্তু সব চর্বি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। যেমন ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ন। সামুদ্রিক মাছ যেমন স্যামন, চিয়া সীড, আখরোট ও অন্যান্য বাদামে এই ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়।

৪। ভিটামিন ডি গ্রহন করুন

ভিটামিন ডি এর অভাব উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং মুড পরিবর্তনের সাথে যুক্ত। বর্তমানে পড়াশুনা, টিউশনি, সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি ইত্যাদির কারনে টিনেজাররা বেশীরভাগ সময় ঘরের ভেতর কাটাচ্ছে। তাই পিতামাতা হিসাবে, আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার সন্তান যেন ঘরের বাইরে রোদে কিছুটা সময় কাটায়, বিশেষ করে ব্যায়াম করে।

৫। আইরন পর্যাপ্ত পরিমানে গ্রহন করতে হবে

ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখার প্রচেষ্টার কারণে কিশোরী মেয়েদের মধ্যে রক্তশূন্যতা খুব পরিচিত একটি সমস্যা। তবে বর্তমানে ছেলেদের মধ্যেও রক্তশূন্যতা দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে বেশিরভাগই অপুষ্টিজনিত রক্তাস্বল্পতা। অ্যানিমিয়া শুধুমাত্র শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে না, মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলে। তাই মাংস, মাছ, মুরগি, সবুজ শাক, শুকনো ফল, পেয়ারা ইত্যাদি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরী। সুস্থ শরীর মানেই সুস্থ মন। তাই আপনার টিনেজ সন্তানের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করুন।

What do you think?

Written by সানজিদা আলম

একজন ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটার। টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, প্রোডাক্ট রিভিউ এবং ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। লেখালেখির পাশাপাশি ভালোবাসি পড়তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

unique gadgets in BD

৪টি অসাধারণ গ্যাজেট যা সম্পর্কে অনেকের কোন ধারনা নেই!

5-seeds-that-must-be-included-in-a-healthy-diet

৫ টি বীজ জাতীয় খাবার যা হেলদি ডায়েটে রাখা আবশ্যক