আপনি কি কর্পোরেট লাইফ পার করছেন? তাহলে এই কন্টেন্ট এ রয়েছে কর্পোরেট লাইফে সুস্থ থাকার দুর্দান্ত ১৪টি টিপস যা আপনার জীবন বদলে দিবে।
কর্পোরেট লাইফ আমাদের জীবনের বড় একটি অংশ দখল করে নিয়েছে আর ব্যক্তিগত জীবনের জন্য রয়ে গেছে খুব সামান্য কিছু সময়। সুস্থ জীবন যাপনের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখা জরুরী।
আপনিও কি অফিসের ৯-৬টা ঘড়ির কাটায় আটকে রয়েছেন? জীবনে প্রত্যাশার চেয়ে বেশী কাজ, কর্পোরেট জীবনের চ্যালেঞ্জ, নিজের জন্য খুব সামান্য সময় সব কিছু মিলিয়ে বিশ্রামহীন জীবন পার করছেন? খুব ব্যাস্ত জীবনে নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য নিচে রইলো ১৪টি টিপস।
১। সকালের নাস্তা বন্ধ করা চলবে না
সব থেকে কার্যকরী টিপস হল সকালের নাস্তা বাদ দেয়া চলবে না। যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন, সকালের নাস্তা করে বাসা থেকে বের হতে হবে। পুষ্টিকর সকালের নাস্তা আপনাকে দিনভর সতেজ রাখবে এবং মিস্টির ক্রেভিংস থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে। হাই প্রোটিন, ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যেমন ডিম, দই, ব্রাউন টোস্ট ইত্যাদি সকালের নাস্তায় খেতে পারেন।
২। সকালের ক্যাফেইন গ্রহন এড়িয়ে চলুন
যদিও চা ও কফি সকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়, তবে সকালে ক্যাফেইন পানের কারনে আপনার এনার্জি কমে যেতে পারে। তবে চা, কফির পরিবর্তে আপনি ডাবের পানি, টাটকা ফলের জুস বা যে কোন সরবত পান করতে পারেন। চায়ের এই বিকল্পগুলো আপনাকে হাইড্রেটও রাখবে আবার পুষ্টিও যোগাবে।
৩। স্ন্যাক্স গ্রহনে সতর্ক হোন
কর্পোরেট জগতে স্ন্যাক্স অনিবার্য। যেহেতু আপনি স্ন্যাক্স এড়িয়ে যেতে পারবেন না তাই এর সময় ও ধরনের উপর গুরুত্ব দিন। পুষ্টিবিদদের মতে বিকাল ৪টা থেকে ৬টার মধ্যে স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স গ্রহনের আদর্শ সময়। বাদাম, কলা ইত্যাদির মত স্বাস্থ্যকর খাবার স্ন্যাক্সে খাওয়া যেতে পারে।
৪। নিয়মিত বিরতি নিন
দীর্ঘ সময় ধরে একটানা কাজ করা শরীর এবং মনের উপর চাপ সৃষ্টি করে। প্রতি ৩০-৪০ মিনিট পরপর ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিন। চোখ বিশ্রাম দিন, দাঁড়িয়ে একটু হাঁটাহাঁটি করুন বা হালকা স্ট্রেচিং করুন।
৫। স্বাস্থ্যকর খাবার খান
অফিসের দ্রুতগতির জীবনে ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন। স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস, ফলমূল, বাদাম এবং প্রচুর শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন। চিনি এবং অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চললে আপনি বেশি ফোকাসড থাকতে পারবেন।
৬। পর্যাপ্ত পানি পান করুন
হাইড্রেটেড থাকা গুরুত্বপূর্ণ। কর্পোরেট জীবনে অনেকেই পর্যাপ্ত পানি পান করতে ভুলে যায়, যা ক্লান্তি এবং মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৭। দৈনিক হাঁটাহাঁটির অভ্যাস করুন
অফিসে দীর্ঘ সময় বসে থাকার কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশে সমস্যা দেখা দেয়। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার চেষ্টা করুন, এবং সম্ভব হলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন, লিফটের পরিবর্তে।
৮। ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করুন
নিয়মিত শরীরচর্চা এবং যোগব্যায়াম মানসিক চাপ কমায় এবং শরীরকে কর্মক্ষম রাখে। সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ দিন ২০-৩০ মিনিটের ব্যায়াম বা যোগব্যায়ামের সময় বের করুন।
৯। ভালো ঘুম নিশ্চিত করুন
মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত এবং ভালো ঘুম অপরিহার্য। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ঘুমানোর আগে মোবাইল বা ল্যাপটপ থেকে দূরে থাকুন।
১০। স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট
কাজের চাপ এবং ডেডলাইনগুলো স্ট্রেস তৈরি করতে পারে। স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের জন্য মেডিটেশন, শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন, বা হালকা সঙ্গীত শোনার অভ্যাস করতে পারেন।
১১। সঠিক অঙ্গবিন্যাস বজায় রাখুন
কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করার সময় সঠিক অঙ্গবিন্যাস বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চেয়ার ও ডেস্কের উচ্চতা ঠিক রাখুন, এবং পিঠ সোজা রাখার চেষ্টা করুন। ভুল অঙ্গবিন্যাস শরীরে ব্যথা এবং ক্লান্তি বাড়ায়।
১২। চোখের যত্ন নিন
কম্পিউটারে দীর্ঘক্ষণ কাজ করলে চোখের উপর চাপ পড়ে। প্রতি ২০ মিনিট পরপর ২০ সেকেন্ডের জন্য দূরের কোনো কিছু দেখুন। এটি চোখকে শিথিল করবে এবং চাপ কমাবে।
১৩। ব্যক্তিগত সময়ের যত্ন নিন
কাজের বাইরে নিজের জন্য সময় বের করুন। পরিবার, বন্ধুবান্ধবদের সাথে সময় কাটান এবং এমন কিছু করুন যা আপনাকে আনন্দ দেয়, যেমন বই পড়া, মুভি দেখা বা ভ্রমণ।
১৪। সঠিক সময়ে কাজ শেষ করুন
ওভারটাইম বা অতিরিক্ত কাজের চাপ স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। কাজের সময়সীমা ঠিক করুন এবং কাজ শেষে কাজকে পেছনে ফেলে ব্যক্তিগত জীবনে মন দিন। এই টিপসগুলো মেনে চললে কর্পোরেট জীবনও হতে পারে স্বাস্থ্যকর ও সুখী।
GIPHY App Key not set. Please check settings