in

ক্ষতিগ্রস্থ চুলে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে ১০টি খাবার

Food for damaged hair care

আপনার ক্ষতিগ্রস্থ চুলে প্রাণ ফিরিয়ে আনবে খুব সাধারন কিছু খাবার। বিশ্বাস হচ্ছে না? এই লেখাটি আপনার জন্যই। আমার দেখা বেশীরভাগ মানুষেরই চুল সংক্রান্ত কোন না কোন সমস্যা রয়েছে। হতে পারে সেটা চুল পড়া, খুশকি, প্রাণহীন চুল, দীপ্তিহীন ক্ষতিগ্রস্থ চুল, আগা ফাটা চুল অথবা পাতলা চুল ইত্যাদি। এই তালিকাটি কখনো আরও বড় হতে পারে। তবে বিশেষ কোন প্রসাধনী বা ব্যয়বহুল কোন হেয়ার ট্রিট্মেন্ট নয়, ক্ষতিগ্রস্থ চুলে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে খুব সাধারন কিছু খাবার যা বাজারে পাওয়া যায়।

চুলে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে কি খাওয়া উচিত?

আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য প্রয়োজন একটু বেশি সময় ও যত্নের। কারণ আমাদের এই স্পর্শকাতর অংগগুলো ক্লিনিং এজেন্ট, দূষণ, রাসায়নিক উপদানে জন্মানো ফল ও সবজি, খর পানি, স্ট্রেস ও টেনশন, পুষ্টির অভাব, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, ব্যায়াম না করা ও অপর্যাপ্ত পানি পান করা ইত্যাদি বিভিন্ন কারনে মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তবে এখুনি আশাহত হবেন না, ঘন ও স্বাস্থ্যকর চুল এখুনো সম্ভব। কিন্তু কীভাবে? খুব সহজ! এমন কিছু সুপার ফুড আছে যেগুলো আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকাতে রাখতে হবে যা আপনার চুল ও ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি জোগাবে। চলুন দেখি সেই সুপার ফুডগুলো কী কীঃ

১। মিষ্টি কুমড়ার বীজ

মিষ্টি কুমড়ার বীজে প্রচুর পরিমানে জিঙ্ক থাকে। এই উপাদানটি কেরাটিন নামক এক ধরনের প্রোটিন গঠনের জন্য সেলুলার উৎপাদন, কোষ বিভাজন ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এই কেরাটিন আমাদের চুলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি উপাদান। কারণ এটি ভেতর ও বাহির থেকে চুলকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও জিঙ্ক চুলের প্রাকৃতিক রঙ সংরক্ষন করে। মসুর ডাল, তিল বীজ, ভেড়ার মাংস এবং ছোলাতে প্রচুর পরিমানে জিঙ্ক পাওয়া যায়। জিঙ্ক খুশকি রোধ করে ও চুল পড়া রোধ করে।  

২। অ্যাভোকাডো

এই ফলটি চুলের বৃদ্ধি এবং ঘনত্বের জন্য চমৎকার কারণ এতে প্রচুর পরিমানে কপার আছে যা ত্বকের কোলাজেন এবং ইলাস্টিন তৈরি করে। এই উপাদান দুটি চুলের ফলিকল ধরে রাখে। অ্যাভোকাডো ছাড়াও গোটা শস্য, পালং শাক, মেথি, শিম এবং লেবুতে থাকা কপার হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে যাতে চুল মজবুত হয় এবং চুলের লিপিডকে শক্তিশালী করে।

৩। ডিম

ডিম চুলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে এবং চুলকে শুধু ঘনই করে না, মজবুতও করে। ডিমে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন এবং বায়োটিন থাকে যার দুটোই স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য দারুন উপকারী।

৪। তৈলাক্ত মাছ

নদীর বা সমুদ্রের তৈলাক্ত মাছ চুলের জন্য দারুন উপকারী। কারণ এই মাছে প্রচুর পরিমানে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে। এছাড়াও তৈলাক্ত মাছে ভিটামিন ডি এবং প্রোটিন থাকে যা চুলকে মজবুত করে ও মাথার ত্বককে ভালো রাখে।

৫। বেরি

বেরিতে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যার কারনে একে চুলের জন্য সুপারফুডও বলা চলে। উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের ফলিকলকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি এবং ক্যানবেরি ইত্যাদি রসালো ফলগুলোতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সী থাকে যা কোলাজেন উৎপাদন এবং আয়রন শোষণে সাহায্য করে। এই দুটি উপাদানই চুলের বৃদ্ধির জন্য অনেক জরুরী।

৬। মিষ্টি আলু

একটি মাঝারি সাইজের মিষ্টি আলুতে পর্যাপ্ত পরিমানে বিটা-ক্যারোটিন থাকে যা আপনার প্রতিদিনের ভিটামিন এ এর চাহিদার চারগুনের বেশী। তাই আপনার চুলের জাদুকরী উন্নতি দেখতে চাইলে এই সবজিটি আপনার খাদ্য তালিকায় প্রতিদিনই রাখুন।

৭। পালং শাক

পুষ্টিবিদদের পছন্দের তালিকার এক নাম্বারে যে সবজিটিকে পাওয়া যায় তা হল পালং শাক। এটি ভিটামিন এ, সি, আয়রন এবং ফোলেটের মত পুষ্টিগুনে ভরপূর। এমনকি পালং শাক উদ্ভিদ ভিত্তিক আয়রনের একটি অন্যতম উৎস। এটি রক্তের লোহিত কণিকাগুলোকে সারা শরীরে অক্সিজেন বহন করতে সাহায্য করে। এটি চুলের বৃদ্ধিতে এবং ড্যামেজ রিপেয়ারে ভালো কাজ করে।

৮। সয়াবিন

সয়াবিনে থাকা স্পার্মিডিন নামক একটি যৌগ চুলের বৃদ্ধির জন্য দারুন কার্যকর। তাই একে আপনার চুলের জন্য একটি অপরিহার্য প্রাকৃতিক সাপ্লিমেন্ট হিসেবে গ্রহন করতে পারেন। চুলের স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধির জন্য আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকাতে নিয়মিত সয়াবিনের তৈরি স্ট্যু, স্যুপ, সালাদ বা অন্যান্য রেসিপি রাখতে পারেন।

৯। খনিজ পানি

খনিজ ও ধাতু আমাদের শরীরের ইতিবাচক পরিবর্তনের সবসময়ই প্রভাব ফেলে। তাই প্রাচীনকাল থেকেই সোনা, রুপা ও পরবর্তীতে কাঁসা, পিতলের তৈরি পাত্রে পানি পান করার প্রথা প্রচলিত হয়ে আসছে। শুধু তাই নয়, কিছু গবেষণা থেকে জানা যায় যে, সারারাত তামার পাত্রে রাখা পানি সকালে পান করলে চুলের বৃদ্ধি ভালো হয়, এবং চুলের ফলিকলগুলোকে দারুন মজবুত করে।

১০। মাংস

মাংস প্রোটিনের সবচেয়ে বড় উৎসগুলোর একটি। আর আমরা জানি যে চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রোটিন কতটা জরুরী। বিশেষ করে লাল মাংস আয়রনের একটি চমৎকার উৎস যা চুলের স্বাস্থকর বৃদ্ধিতে সাহায্য করে তাই সপ্তাহে ৩-৪ বার লাল মাংস আপনার ডায়েটে রাখতে পারেন।

আশাকরি আপনার ক্ষতিগ্রস্থ চুলে প্রান ফিরিয়ে আনতে কী কী খাবার খাওয়া উচিত তা জানতে পেরেছেন। এই খাবারগুলো প্রকৃতপক্ষেই আপনার চুলের উপর দারুন ভালো প্রভাব ফেলতে পারে। উপরে উল্লেখিত কোন খাবারগুলো আপনার ডায়েট থেকে বাদ পড়ছে তা খুঁজে দেখুন আর তাৎক্ষনিক তা যুক্ত করুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

What do you think?

Written by সানজিদা আলম

একজন ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটার। টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, প্রোডাক্ট রিভিউ এবং ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। লেখালেখির পাশাপাশি ভালোবাসি পড়তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

USB-Docking-Station

ইউএসবি ডকিং স্টেশন, ডাটা হাব: শখের ডিভাইসের সমন্বয়

Xiaomi C1 smart instant hot water dispenser review

শাওমি সি-ওয়ান স্মার্ট ইনস্ট্যান্ট হট ওয়াটার ডিসপেন্সার