in

নকল পণ্য কিনে প্রতারিত না হওয়ার টিপস

আসল নকল চেনার উপায়

আজকালকার বাজারদরের ওঠানামার সাথে বেড়েছে পণ্যের গুণগত মানের হেরফের। সম্প্রতি বাংলাদেশের বেশ কিছু কসমেটিক্স ইম্পোর্টারদের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার আইনের প্রেক্ষিতে অভিযোগ আনা থেকেই তা প্রমাণিত হয়। শুধু কসমেটিক্স না, খাদ্যদ্রব্যেও নকলের ছড়াছড়ি। আসল ব্র‍্যান্ডের নাম ভাঙিয়ে দেদারসে চলছে এমন অন্যায্য ব্যবসা।

এই কঠিনতম সময়ে তাহলে কি পণ্য কিনে ঠকে যাওয়ার ভয় পাচ্ছেন? পাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি যদি চিনতে পারেন কোন পণ্য আসল, কোন পণ্য নকল তাহলে নিশ্চয়ই প্রতারিত হওয়ার ভয় নেই। আজকে আপনাদের জানাবো নকল জিনিস কিনে প্রতারিত না হওয়ার কিছু চমৎকার কার্যকরী কৌশল। নকল জিনিস কিনে প্রতারিত না হওয়ার টিপস-

ব্র্যান্ডের পণ্য

নামি-দামি ব্র‍্যান্ডের পণ্যই বেশিরভাগ সময় নকল করা হয়। কিন্তু সে নকল জিনিসের সাথে আসল জিনিসের আকাশ-পাতাল তফাৎ যা ব্যবহারের পর বোঝা যায়। তাহলে করণীয় কী? করণীয় হচ্ছে আপনার যে পণ্য পছন্দ তা কিনুন ব্র‍্যান্ডের শোরুম অথবা কোন অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে যারা ঐ ব্যান্ডের পণ্যটি বিশ্বস্ততার সাথে সেল করে আসছে।

যেমন – Wet n Wild এর কিছু ফাউন্ডেশন কিনতে ইচ্ছে করছে। লোকাল মার্কেটে বেশ খানিকটা কম প্রাইসে পাচ্ছেন। এই ফাউন্ডেশন নকল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এর চেয়ে যেসব ইকমার্স সাইট এবং শোরুমগুলো অনেকদিন যাবৎ সততার সাথে কাজ করে আসছে তাদের থেকেই কিনুন। প্রতারিতও হলেননা, অভিজ্ঞতাও সুন্দর হলো। অল্প দামে একবার লাভ করতে গিয়ে যদি নিজের বড়সড় ক্ষতি হয় তবে তা স্বেচ্ছায় প্রতারিত হওয়া।

প্যাকেজিং সমাচার

একেকটা জিনিসকে আলাদাভাবে চিনি কী করে? অবশ্যই প্যাকেজিং দেখে। নতুন নতুন প্যাকেজিং এ সাজিয়ে পণ্য আনা একরকমের মার্কেট স্ট্র‍্যাটেজি বলা চলে। প্রশ্ন হচ্ছে এই প্যাকেজিংই যদি নকল পণ্যের জারিজুরি ফাঁস করে দেয় কেমন হবে বলুন?

আপনি যাতে প্রতারিত না হন সেটার চেষ্টা ব্র‍্যান্ড চালিয়েই যাবে। যেসব অসাধু ব্যবসায়ী নকল জিনিসের কারখানা দিয়ে বসে আছে তাদের হাতে অতটাও উন্নত প্রযুক্তি নেই। যা আছে তাতে ডিজাইন, লেখার ধরন, মোড়কের ইলাস্টিসিটি সবকিছু এক হলেও আসল জিনিসের মতো লোগো, বারকোড এগুলো কোনোমতেই তারা তৈরি করতে পারবেনা। তৈরি করলেও তা দেখাবে অগোছালো। টাকা খরচ করে জিনিস যখন কিনবেন, একটু দেখেশুনেই কিনুন বরং।

বারকোড স্ক্যানিং

খেয়াল করে দেখবেন বিভিন্ন সুপার শপ থেকে শুরু করে লোকাল দোকানেও যে জিনিস পাবেন, প্যাকেটজাত হলে তাতে বারকোড অথবা কিউআর কোড থাকবে। এই কোডের কাজ কী? কোডের কাজ হলো পণ্যের প্রকৃত ডিটেইলস যা ব্র‍্যান্ড বা উৎপাদক পক্ষ থেকে দেয়া হয় তা আপনার সামনে নিয়ে আসা। কাজেই পণ্য হাতে নিয়ে মোবাইলে থাকা বারকোড স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করে নিলে আসল বা নকল পণ্য নিহ্নিত করা সহজ হয়ে যায়।

রঙ গন্ধের সমীকরণ

অংক ভালোবাসেন কে কে ? ভালো না বাসলেও একটা বয়স অব্দি সবাইকে অল্প বিস্তর এই অদ্ভুতুড়ে জিনিস শিখতে হয়। তবে জিনিসটা কাজের। একের পর এক সমীকরণ দিয়ে সমাধান হয় জটিল সব সমস্যার। নকল জিনিস কিনে প্রতারিত হওয়া সেরকমই কোনো সমস্যা নয় কী ? এ সমস্যার সমাধান মিলবে রঙ ও গন্ধের সমীকরণ সমাধানে।

খাবারের রঙ দেখে যেমন আন্দাজ করে ফেলা হয় হলুদ বেশি হয়েছে কি ঝাল বেশি হয়েছে, খেতে স্বাদ হবে বা হবে না; জিনিসের ক্ষেত্রেও তাই। আসল জিনিস কোম্পানির নিজস্ব প্রসেসিং সিস্টেমে তৈরি হওয়ায় তারা চেষ্টা করে সর্বোচ্চ ইউনিক রাখার। নকল কারখানা সেসব মেইনটেইন করতে পারে না। তাই পণ্যের রং ও প্যাকেজিং বদলে যায়।

আর প্রসাধনী ও ফ্রোজেন জাতীয় জিনিসের ক্ষেত্রে গন্ধ যাচাই করেই বুঝে যাবেন জিনিসটা নকল কী না। রাসায়নিক নানা দ্রব্যাদী কসমেটিক্স জাতীয় পণ্যে যোগ করা থাকে। যেমন – শ্যাম্পু, সাবান, লোশন, মেকাপ আইটেম ইত্যাদি। এগুলোর সঠিক ব্যালেন্স বজায় না থাকলে রঙ ও গন্ধ দুটোই উৎকট হয়ে ওঠে। তাই সহজ টিপস! চট করে এই দুটো পরীক্ষা সেরে ফেলুন ও প্রতারিত হওয়া থেকে বাঁচুন।

গ্যাজেটে গণ্ডগোল

নিত্যদিনকার জিনিসের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কী? গ্যাজেট। আজকাল গ্যাজেট ছাড়া চলা দায়। বলা বাহুল্য সেখানেও শুরু হয়ে গিয়েছে নকলের জয়জয়কার। যেমন কিছু স্বনামধন্য মোবাইল কোম্পানি নিজস্ব পেনড্রাইভ তৈরি করেনা। কিন্তু তাদের নামে হরহামেশা বের হচ্ছে পেন্ড্রাইভের নমুনা। শুধু কি পেন্ড্রাইভ? ল্যাপটপ সহ ছোট ছোট অনেক চিপ বাজারে নকল পাওয়া যাচ্ছে।

বাংলাদেশে স্মার্ট গ্যাজেট এবং স্মার্ট ইলেকট্রনিক্সের পণ্যের বাজার দখল করে আছে চায়নার কোম্পানিগুলো। এদের মধ্যে কোয়ালিটি গ্যাজেট পণ্য বিক্রি করে তুমুল জনপ্রিয় হয়েছে এমন কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শাওমি, বাসাস, জেবিএল, ওয়ানপ্লাস, উইউ (WiWU), এ্যাংকর ইত্যাদি।

এগুলোর বাহিরেও অসংখ্য নন-ব্র্যান্ড গ্যাজেট পণ্য বাজারে পাওয়া যায় যেগুলোর মান এবং দাম দুটোই কম। আবার ব্র‍্যান্ডের নাম ভাঙিয়ে ছাড় দেয়ার লোভ দেখিয়ে অনেকে অল্প দামে খারাপ বা নকল জিনিস ক্রেতাদের হস্তগত করে দেয়ার চেষ্টায় থাকে। এখন বলুন, নকল জিনিস অল্প দামে কিনে পস্তাবেন নাকি একটু বেশি দাম দিয়ে আসল জিনিস খুঁজে নেবেন? সিন্ধান্ত আপনার।

আশা করছি, নকল জিনিস কিনে প্রতারিত না হওয়ার বেশ কিছু ভালো টিপস আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিতে পেরেছি। আরও জরুরি তথ্য পেতে আমাদের সাথে থাকুন।

What do you think?

Written by নুসরাত জাহান

পেশায় একজন নার্স হলেও ইসলামিক বিষয় নিয়ে পড়তে ও লিখতে ভালো লাগে। আমার লেখা থেকে যদি কেউ বিন্দুমাত্র উপকৃত হয় তবেই আমার প্রশান্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

ডিপ্রেশন মুক্তির উপায়

ডিপ্রেশন রোগ থেকে মুক্তির সহজ উপায়

Laptop Power Bank Buy in Bangladesh

ল্যাপটপেরও পাওয়ার ব্যাংক হয়!