in

ডায়াবেটিস রোগীরা কোন জুস খাবেন কোনটা খাবেন না

ডায়াবেটিস রোগীর জুস পান সম্পর্কে ডায়াটেশিয়ানের পরামর্শ

juice for diabetic patients

চলছে গ্রীষ্মকাল, প্রচন্ড দাবদাহে অতীষ্ট জনজীবন। এই গরমে সবচেয়ে কষ্টে থাকে বয়স্ক ব্যক্তিরা। কেননা তারা আগে থেকেই নানারকম শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত থাকেন। তাই আজকে আমরা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু জুস নিয়ে আলোচনা করব যা এই তীব্র গরমে শীতল অনুভূতি দেয়ার পাশাপাশি পুষ্টিও যোগাবে।

গরমে হাইড্রেটেড থাকার জন্য এবং পুষ্টির চাহিদা পূরনের জন্য রিফ্রেশিং ড্রিংস সবচেয়ে নিরাপদ। এই জ্বলন্ত গরম থেকে নিরাপদ ও সুস্থ থাকার জন্য আমাদের খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমানে পানীয় ও পুষ্টিকর খাবার থাকা দরকার। ঠিক এই পরিস্থিতিতেই আমাদের জুসের প্রয়োজন। জুস নানারকম ফল ও সবজি থেকে তৈরি করা যেতে পারে। কেননা তীব্র গরমে জুস স্বাস্থ্যের জন্য দারুন উপকারী। নানারকম ফলের সরবত তৃষ্ণা দূর করতে ও গরমের অনুভূতি কমিয়ে শরীরকে শীতল করতে ভালো কাজ করে। তবে যেহেতু সরবতে প্রাকৃতিক মিষ্টি স্বাদ থাকে তাই সব ধরনের জুস ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সুবিধাজনক নয়। এগুলো রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি আরো নানারকম শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাহলে কী ডায়াবেটিস রোগীরা এই তীব্র গরমে একেবারেই কোন জুস পান করবেন না?

বিষয়টা মোটেও সেরকম নয়, প্রখ্যাত ভারতীয় ডায়েটিশিয়ান স্বেতা জে পাঞ্চাল ডায়াবেটিস রোগীরা কোন কোন জুস এড়িয়ে চলবেন সে বিষয়ে তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। একইসাথে এই রোগীরা কোন ধরনের পানীয় গ্রহন করতে পারবেন তার একটি তালিকাও শেয়ার করেন। চলুন দেখা যাকঃ 

ডায়াবেটিস রোগীরা যেসব জুস এড়িয়ে চলবেন

১. পাকা আমের জুস

ডায়েটিশিয়ান পাঞ্চালের মতে ডায়াবেটিস রোগীদের পাকা আমের জুস পান করা উচিত নয়। কেননা পাকা আমের জি আই ইনডেক্স লাইন প্রায় ৫০-৫৬ এর আশেপাশে। তাই আপনার সুগার লেভেল যদি নিয়ন্ত্রনে থাকে তাহলে সপ্তাহে ৩টি পাকা আম খেতে পারবেন। তবে আমের জুস নয়।

২. তরমুজের জুস

তরমুজের জি আই ইনডেক্স ৭২ এর আশেপাশে। আর তাই ডায়াটেশিয়ানের মতে যে কোন অবস্থাতেই তরমুজের জুস ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ নয়। এমনকি আপনার সুগার লেভেল যদি নিয়ন্ত্রনেও থাকে তারপরেও পরিমিত পরিমানেই আপনি তরমুজ খেতে পারবেন। 

৩. আখের জুস

ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের আখের রস খাওয়া ঠিক নয় কেননা এতে গ্লুকোজের পরিমান অনেক বেশী থাকে। ডায়াটেশিয়ান আমাদের দাদা-নানাদের উদাহরণ দিয়ে বলেন যে তাদের জীবন অনেক সক্রিয় ছিলেন বিধায় তাদের জন্য আখের রস অনেক উপকারী ছিল। কিন্তু এখন আমাদের জীবন যাপনের পদ্ধতি এমন হয়ে গেছে যে, এখানে আমাদের সক্রিয়তা অনেক কম। কায়িক শ্রম কম হওয়ার কারনে এখন অনেক খাবারই আমাদের শরীরের জন্য আর উপকারী নয়। আখের রসও ঠিক তেমনই।

ডায়াবেটিস রোগীরা যেসব জুস খেতে পারবেন

আমরা এতক্ষন প্রখ্যাত ভারতীয় ডায়াটেশিয়ান স্বেতা পাঞ্চালের মতে ডায়াবেটিস রোগীদের কোন পানীয়গুলো পান করা উচিত নয় তা দেখলাম। এখন চলুন দেখি তিনি কোন পানীয়গুলো পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন।

১. ডাবের পানি  

ডাবের পানির জি আই ইনডেক্স ৫৪। ডায়েটিশিয়ানের মতে নারিকেলের শাঁস ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়া উচিত নয়। তবে ডাবের পানির অনেক স্বাস্থ্য উপকারীতা রয়েছে। এটি ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে, খুব দ্রুত হজম হয়ে যায়, হাইড্রেশন বাড়াতে পারে, এমনকি হ্যাংওভার কাটাতেও সাহায্য করে।

২. ফ্রুট কুলার

ফ্রুট কুলার গরমে শরীর ঠান্ডা করার জন্য ও রিফ্রেশ হওয়ার জন্য দারুন কাজ করে। যদিও ফ্রুট কুলার ফল দিয়ে তৈরি তবে সাধারন ফলের জুসের চেয়ে এর এটি কিছুটা ভিন্ন। কেননা এটি খুব অল্প কয়েক টুকরা ফল ব্যবহার করা হয়। এবং প্রচুর পরিমানে বরফ কুচি থাকে। সেই সাথে এতে কোন প্রকার চিনি ব্যবহার করা হয় না। তাই প্রচন্ড গরমে এটি রিফ্রেশ করার জন্য খুবই কার্যকর।

৩. বাটার মিল্ক বা ঘোল

বাটার মিল্ক যাকে আমরা সাধারনত ঘোল বলে থাকি তা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। দুধ থেকে মাখন বের করা হলে যে তরলটি থাকে তাকেই মূলত ঘোল বলা হয়। এটি পেটের জন্য খুবই হালকা আর হজমের জন্য খুবই ভালো। পানীয়টিকে সুস্বাদু ও রিফ্রেশিং করতে লবন ও মশলা যোগ করুন।

৪. লেবু পানি

লেবু পানি ভিটামিন সি-এর গুণাগুণে ভরপুর। লেবু পানি হল একটি সতেজ এবং শক্তিদায়ক পানীয় যা আপনাকে গ্রীষ্মের গরমের সাথে লড়াই করার শক্তি যোগাবে। এতে আপনি আপনার পছন্দমত কিছু মশলা যোগ করে আরো সুস্বাদু করতে পারেন।

পরিশেষে, এখন গ্রীষ্মের চলমান তাপ প্রবাহে জন জীবন অতীষ্ঠ হয়ে পড়েছে। শারিরীক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জুস অনেক উপকারী। তবে রোগের তীব্রতা নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য জুস পানের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরী যা আমরা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি ডায়াবেটিস রোগীরা এই আর্টিকেলটি থেকে উপকৃত হবেন।

What do you think?

Written by সানজিদা আলম

একজন ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটার। টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, প্রোডাক্ট রিভিউ এবং ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। লেখালেখির পাশাপাশি ভালোবাসি পড়তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

হিট ওয়েব

হিট ওয়েব কি? হিট ওয়েভ থেকে বাঁচার উপায়