শীতকাল এখন দোরগোড়ায়। গ্রামেগঞ্জে এখনই সকাল সকাল কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে যায় সব। তবে শীত এলে সবাইকে যে সাধারণ সমস্যায় পড়তে হয়, তা হলো ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়া। এসময় সর্দি-কাশি যেন পিছুই ছাড়তে চায় না।
বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের তো ভোগান্তির শেষই থাকে না! হয়তোবা এটা পুরোপুরি নির্মুল করা সম্ভব নয়। কিন্তু, কিছু নিয়ম মেনে চললেই সর্দিকাশি এড়িয়ে চলা সম্ভব। আজকের এই ব্লগে আমরা শীতের সময় সর্দিকাশি এড়ানোর জন্য যে নিয়মগুলো মেনে চলা জরুরি, তা সম্পর্কেই জানবো।
১. শারীরিক পরিস্থিতিকে অবহেলা করবেন না
শীতের সময় সামান্য সর্দি কাশি সাধারণ সমস্যা। কিন্তু, এটাকে অবহেলা করা যাবে না। বরং, সামান্য সমস্যা হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। কোনো সমস্যা দেখা দিলে এড়িয়ে না গিয়ে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
২. খাবারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে
সর্দিকাশি এড়িয়ে চলার জন্য অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেয়, এমন খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। অতিরিক্ত তেলমশলা যুক্ত খাবারগুলো দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। কারণ, অত্যাধিক জাঙ্ক ফুড কিংবা মসলাদার খাবার গ্রহনের ফলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
৩. পানি ব্যবহারে সতর্কতা
শীতের সময় পানি বেশ ঠান্ডা থাকে। এজন্য, গোসল করার ক্ষেত্রে সবসময় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা উচিত। প্রতিদিন সকালে দাঁত ব্রাশ করার পর হালকা গরম পানি দিয়ে গার্গল করা উচিত। কোনো কাজ করতে গিয়ে শরীরর পোশাক ভিজে গেলে দ্রুত সে পোশাক পরিবর্তন করা উচিত।
৪. পরিমিত ঘুম বা বিশ্রাম
ঘুমের কারণে কিংবা পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেয়ার কারণে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে, সর্দি কাশির সমস্যা এড়িয়ে চলতে সঠিক পরিমাণে বিশ্রাম নেয়ার প্রয়োজন। এসময় যেকোনো ভারী কাজ করা, অত্যাধিক চাপ নেয়া থেকে বিরত থাকুন।
৫. গলার যত্ন নেয়া জরুরি
ঠান্ডার সবচেয়ে বড় ধরনের উপসর্গ হলো গলা ব্যাথা। গলা ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে গলায় সবসময় স্কার্ফ বা মাফলার পেঁচিয়ে রাখতে হবে। কুসুম গরম পানি পাম করতে হবে। পাশাপাশি, লবনযুক্ত পানি দিয়ে গার্গল করতে হবে। সামান্য লেবুর রস ও মধু মিশ্রিত কুসুম গরম পানি পান করলে গলা ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৬. উষ্ণ পরিবেশে থাকতে চেষ্টা করুন
সর্দিজ্বর হলে উষ্ণ পরিবেশে থাকার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে রুম হিটার ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া, হালকা ঠান্ডা পড়লেও চেষ্টা করবেন কিছুটা ভারী পোশাক পরিধান করার। এতে উষ্ণ অনুভূত হবে।
৭. ধুলাবালি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন
ধুলাবালি নাকের মধ্যে প্রবেশের ফলে সর্দির সমস্যা বেড়ে যায় কয়েকগুন। চেষ্টা করবেন, রাস্তাঘাটে কম বের হওয়ার। এমনকি, খুব দরকারে বের হতে হলেও মাস্ক বা স্কার্ফ ইউজ করতে হবে। যাতে নাক-মুখে কোন ধুলাবালি প্রবেশ করতে না পারে।
৮. পোশাক নির্বাচন
গরমকালে সাধারণত অনেকেই সাদা রঙের জামা পরিধান করেন। কারণ, সাদা রঙ আলো প্রতিফলিত করায় গরম কম অনুভূত হয়। তেমনি শীতকালে একটু গাঢ় রঙের পোশাক পরলে ঠান্ডা কম অনুভূত হয়। কালো, গাঢ় নীল, লাল, গাঢ় সবুজ এই রঙগুলো তাপ শোষণ করে নেয়। ফলে শরীর কিছুটা উষ্ণ থাকে। এজন্য সর্দিকাশির সমস্যাও দেখা দেয় না।
৯. পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার গ্রহন
খাবার গ্রহনের ক্ষেত্রে শাক, সবজি এবং ফলমূলকে প্রাধান্য দিতে হবে। ভিটামিন সি গ্রহন করতে প্রচুর পরিমাণে। লেবু, কমলালেবুর মতো ফলগুলোকে দৈনিক খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে।
১০. পর্যাপ্ত পানি পান
অনেকের ধারণা সর্দি-জ্বরের সময় পানি পান করলে এটার প্রভাব আরো বেড়ে যায়। কিন্তু, এটা একদমই ভুল ধারণা। বরং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার ফলে, আমাদের শরীর; বিশেষ করে বৃক্ক সুস্থ থাকে। ফলে সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
উপরিউক্ত এই নিয়মগুলো মেনে চললেই শীতের শুরুতে সর্দিকাশি এড়িয়ে চলা যায়।
GIPHY App Key not set. Please check settings