আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ কি শীতকালীন সর্দি-কাশিতে ভুগছেন? বছরের এই সময়টায় বাতাসের আদ্রতা ও ঋতুর পরিবর্তন আমাদের শরীরকে এই সাধারণ সংক্রমণের জন্য সংবেদনশীল করে তোলে। তাই শীতকালে সর্দি-কাশি প্রতিরোধে ডায়েটিশিয়ানদের দেয়া কিছু ঘরোয়া প্রতিকার বেশ কার্যকর। যদিও সিজিনাল সর্দি-কাশির চিকিৎসার জন্য খুব সাধারন কিছু ওষুধ যে কোন ঔষধের দোকানে পাওয়া যায়। তবে আপনিও হয়তো জানেন যে এই ওষুধগুলো পুরোপুরি সারিয়ে তুলতে বেশ কিছুটা সময় নেয় ফলে শারীরিক অসুস্থ্যতার সাথে দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ এই সময় যে কেবল সর্দি এবং কাশি থাকে তা নয়, এর সাথে ক্লান্তি, তন্দ্রা, শরীর ব্যথা, জ্বর, মাথাব্যথা, বন্ধ নাক এবং গলা চুলকানি ইত্যাদি শারীরিক সমস্যা সব কিছুকে আরও খারাপ করে তোলে। আপনিও কি এইসব উপসর্গগুলোর সাথে লড়াই করছেন? তাহলে চলুন, আপনাকে সাহায্য করা যাক।
এখানে আমরা উপরে উল্লেখিত সিজিনাল শারীরিক সমস্যাগুলো দূর করতে কিছু সাধারন ঘরোয়া প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করবো। এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলো আপনাকে দ্রুত এই উপসর্গগুলো থেকে মুক্ত করতে সাহায্য করবে এবং স্বাভাবিকভাবেই সর্দি ও কাশি প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
আমাদের রান্নাঘর হল এমন একটি জায়গা যেখানে ঘরোয়া প্রতিকারের প্রায় সকল উপকরণই পাওয়া যায়। প্রখ্যাত ভারতীয় ডায়েটিশিয়ান তানভী টুটলানি তার ইনস্টাগ্রাম পেজে এমনই কিছু কিছু ঘরোয়া প্রতিকারের পরামর্শ দিয়েছেন যা ওষুধের পাশাপাশি সেবন করলে সর্দি এবং কাশির উপসর্গগুলো উপশম করতে বেশ সহায়ক হতে পারে। এমনকি এই সব ঘরোয়া প্রতিকার আপনাকে দ্রুত পূর্বের মত শারীরিকভাবে ফিট করতেও সাহায্য করবে। চলুন দেখি সেগুলো কি।
১। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার
ডায়েটিশিয়ান তানভী টুটলানি সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবারের মাঝখানে নাস্তার জন্য সাইট্রাস ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পরিচিত এবং সাইট্রাস ফলের প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে। লেবু, মাল্টা, কমলালেবুর মত সাইট্রাস ফল আপনি আপনার ডায়েটে যোগ করতে পারেন।
আমাদের রান্নাঘর হল এমন একটি জায়গা যেখানে ঘরোয়া প্রতিকারের প্রায় সকল উপকরণই পাওয়া যায়। প্রখ্যাত ভারতীয় ডায়েটিশিয়ান তানভী টুটলানি তার ইনস্টাগ্রাম পেজে এমনই কিছু কিছু ঘরোয়া প্রতিকারের পরামর্শ দিয়েছেন যা ওষুধের পাশাপাশি সেবন করলে সর্দি এবং কাশির উপসর্গগুলো উপশম করতে বেশ সহায়ক হতে পারে। এমনকি এই সব ঘরোয়া প্রতিকার আপনাকে দ্রুত পূর্বের মত শারীরিকভাবে ফিট করতেও সাহায্য করবে।
২। আদা চা
আদা তার শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এই কারণেই আমরা অনেকেই আমাদের গলার খুসখুসে ভাব দূর করতে চায়ে আদা যোগ করি। কাশি উপসম করতে আদা, দারুচিনি, লবঙ্গ থেতো করে দিয়ে মশলা চা বানিয়ে খেতে পারেন। এই চা খেতেও সুস্বাদু আর সর্দি কাশির জন্যেও দারুন উপকারী। তবে আপনি যদি চা পানে অভ্যস্ত না হন তাহলে চায়ের পরিবর্তে শুধু পানিতে আদা জ্বাল করে নিয়ে সেই আদা পানিও খেতে পারেন। প্রয়োজনে এতে সামান্য মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। এছাড়াও আদা পানি পানের বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে যেমনঃ
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে
- ওজন কমাতে সাহায্য করে
- ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো
৩। স্যুপ
গরম স্যুপ তাৎক্ষনিকভাবে আমাদের গরম করে এবং যে কোন অসুস্থতায় খুব দ্রুত শরীরে শক্তি জোগায়। স্যুপ অত্যন্ত সহজপাচ্য খাবার। তাই এটি খুব দ্রুত হজম হয়ে শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান দেয়। আপনি আপনার পছন্দমত মুরগি, সবজি, টমেটো, কর্ণ ইত্যাদির স্যুপ খেতে পারেন তবে এতে যথেষ্ট পরিমানে রসুন এবং আদা যোগ করতে ভুলবেন না।
৪। হলুদ দুধ
হলুদ দুধ বা গোল্ডেন মিল্ক এর স্বাস্থ্য উপকারীতা অনেক। তাই এই জনপ্রিয় পানীয়টির আলাদা করে কোনো পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। হলুদ দুধ শুধুমাত্র বাংলাদেশ বা ভারত নয়, সারা বিশ্ব জুড়েই তার অপরিসীম স্বাস্থ্য-উপকারী বৈশিষ্ট্যের জন্য সমাদৃত। হালকা গরম দুধের সাথে হলুদের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানগুলো মৌসুমী সংক্রমণ থেকে অনেক উপশম দেয়। এক কাপ গরম দুধে এক চিমটি হলুদ যোগ করুন এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য পান করুন।
৫। মধু
মধু এমন একটি খাবার যার স্বাস্থ্য উপকারিতা গুনে শেষ করা যাবে না। এই ঋতুতে আপনার উচিত প্রতিদিন অন্তত ১ চামুচ করে মধু পান করা। লেবু পানি, চা, দুধের সাথে মিশিয়েও মধু খেতে পারেন। মধু ভেতর থেকে আপনার শরীরকে গরম করে এবং সর্দি কাশি উপসমে দারুন কাজ করে।
এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলো ঠান্ডা এবং কাশি থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে নিশ্চিতভাবে সাহায্য করতে পারে এমনকি এগুলো সংক্রমণ প্রতিরোধেও বিস্ময়কর কাজ করতে পারে। এই সহজলভ্য উপকরণগুলো আমাদের সবার রান্না ঘরেই থাকে। তাই এই শীতে আপনিও আপনার পরিবারের সদস্যদের সিজিনাল সর্দি-কাশি থেকে নিরাপদে রাখতে ঘরোয়া প্রতিকারগুলো গ্রহন করতে পারেন।
GIPHY App Key not set. Please check settings