বাহিরের আবহাওয়া এখন একেবারেই শুষ্ক। শুধু আবহাওয়াই নয়, এখনকার বাতাসও অনেকাংশেই শুষ্ক। তাই দাবদাহ দিন দিন বেড়েই চলেছে। গরম এড়িয়ে চলতে অনেকেই বাহিরে বের হলে ছাতা ব্যবহার করেন। কেউ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি এবং খবার স্যালাইন পান করেন৷ তবে, তীব্র গরম থেকের রেহাই পেতে শুধু এগুলো যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু নিয়ম অবলম্বন করতে হবে। চলুন, জেনে নেই এমনই দরকারি ৬টি উপায় সম্পর্কে।
১. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
তীব্র গরমে সবারই যে সাধারণ সমস্যাটি দেখা যায়, তা হল অতিরিক্ত ঘাম হওয়া। অতিরিক্ত ঘামানোর ফলে আমাদের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়। এমনকি অতিরিক্ত পানি বের হওয়ার কারণে অনেক সময় ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়।
তবে, শরীর থেকে পানি বের হওয়ার কারণে আমাদের শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে। এই গরমে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়লে, শরীর দূর্বল হয়ে পড়বে। তাই অবশ্যই এসময় প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ লিটার পানি পান করার চেষ্টা করতে হবে।
প্রয়োজনে লেবুর শরবত পান করতে হবে। এবং চাইল স্যালাইনও পান করতে পারেন। তবে, অতিরিক্ত পরিমাণে স্যালাইন পান করবেন না। বরং পানি পান করুন।
২. হালকা রঙের পোশাক পরিধান করুন
রঙ কিন্তু গরমের ক্ষেত্রে বড় একটা প্রভাব ফেলে। মনে করুন, আপনি যদি এই তীব্র গরমে কালো রঙের পোশাক পরেন, তাহলে অন্যদের তুলনায় আপনার গরম অনেক বেশি লাগবে। এর কারণ, কালো রঙ সব কিছু শোষণ করে নেয়। এই যে সূর্যের তীব্র তাপটা আসে, এটাকে কালো রঙ টেনে নেয়। ফলে যে কারো গরম বেশি লাগবে, এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু, অন্যদিকে কোনো ব্যক্তি যদি সাদা রঙের কিংবা হালকা গোলাপী, হালকা আকাশী এসব রঙের পোশাক পড়েন, তাহলে তিনি সহজেই গরমকে এড়িয়ে চলতে পারবেন। কারণ, সাদা কিংবা এজাতীয় হালকা রঙগুলো তাপকে শোষণ করেনা। উল্টো এগুলোর প্রতিফলন ঘটিয়ে দেয়। তাই শরীরে তাপ প্রবেশ করতে পারে না বলে গরম কম লাগে।
৩. ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
বাহিরে গেলে ত্বক সহজেই এই গরমে নষ্ট হয়ে যাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে সমাধান আছে। গরমে বাইরে যাওয়ার সময় ত্বকে সানস্ক্রিন ব্যবহার করে বের হোন। এতে ত্বক সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে। প্রয়োজনে চেষ্টা করুন গাড়ি দিয়ে চলাচল করার।
৪. গ্রীষ্মকালীন ফলের তৈরি জুস পান করুন
গ্রীষ্মকালে নানারকম মুখরোচক ফল পাওয়া যায়। এর মধ্যে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু এর মত রসালো ফলগুলো অন্যতম। এগুলো দিয়ে জুস তৈরি করে খেতে পারেন।
প্রয়োজনে একত্রে অনেকটা জুস বানিয়ে তা ফ্রিজে রেখে দিন। ১ ঘন্টা পর পর একটু একটু করে পান করার চেষ্টা করুন। শরীরে এটা প্রশান্তি আর শক্তি দুটোই এনে দেবে।
৫. মাছ মাংস এড়ানোর চেষ্টা করুন
এই গরমে মাছ, মাংস খেলে শরীরে কিছুটা সমস্যা দেখা দেয়া স্বাভাবিক। কারণ, এগুলোতে প্রচুর ফ্যাট থাকে। তাছাড়া, মাছ, মাংস রান্না করতে গেলে প্রচুর মশলার দরকার পড়ে। গরমে অতিরিক্ত মশলা আর তেল চর্বি খেলে শরীরে অশান্তির সৃষ্টি হবে।
৬. শাকসবজি এবং তাজা ফলমূল খাওয়ার চেষ্টা করুন
এসময় মাছ, মাংসকে ‘না’ বলে বেছে নিন শাকসবজিকে। বিশেষ করে লাউ শাক, কুমড়া শাক, পালং শাক এবং অন্যান্য পানি আছে এমন শাক খান। বিভিন্ন সবজি খান।
প্রচুর পরিমাণে ফলমূল খান। এগুলো শরীরের পুষ্টির চাহিদার পাশাপাশি পানির চাহিদাও মেটাবে। যাদের পানি পান করতে অনীহা, তারা প্রচুর পরিমাণে ফল খেতে পারেন। এতে পানির ঘাটতি কমবে।
এই তীব্র গরম থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য যতই চেষ্টা করুন বা কেন, গরমকে এড়াতে পারবেন না। এমনকি সারাক্ষণ একটি কক্ষে এসির মাঝে বসে থাকলেও লাভ নেই। বাসা থেকে ৫ মিনিটের জন্য বাহিরে বের হলেও, এই গরম সহজেই যেকোনো ব্যাক্তিকে কাবু করে ফেলবে। কেউ গরম থেকে বাঁচতে ঠান্ডা পানির বোতল বালতিতে ভিজিয়ে রুমের মাঝখানে ফ্যানের নিচে রেখে দেন। কেউ বা অন্য কোনো পদ্ধতির আশ্রয় নেন। তবে উপরোক্ত নিয়ম ৬টি মানার চেষ্টা করতে হবে অবশ্যই। এরকম আরো উপকারী লেখা পেতে ফলো করে রাখুন আমাদের ব্লগ সাইটটি।
GIPHY App Key not set. Please check settings