in ,

ব্যস্ত জীবনে সুস্থ থাকার উপায়

ব্যস্ত জীবন

বর্তমান কর্মব্যস্ত জীবনে স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো ধরে রাখা খুবই কঠিন। আপনি যখন দীর্ঘ সময় কাজের চাপে থাকেন এবং ব্যস্ত থাকেন তখন সহজ উপায় ভেবে ফাস্ট ফুড দিয়ে লাঞ্চ সেরে নেন কিংবা একেবারে শেষ সম্ভাব্য মিনিট পর্যন্ত ঘুমিয়ে নেন, তাই তো? কিন্তু এভাবে ধীরে ধীরে আপনি আপনার শরীরের সুস্থতা হারিয়ে ফেলছেন তা কি জানেন? সময় মত ঘরে খাবার তৈরি করা, সুযোগ পেলে ব্যায়াম করা, এবং স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের জন্য নিজেকে পুরুস্কৃত করার মাধ্যমে কর্মব্যস্ত জীবনেও নিজেকে সুস্থ রাখতে পারবেন। এখানে আমরা শত ব্যস্ততার মাঝেও নিজেকে ফিট রাখার কিছু টিপস নিয়ে আলোচনা করবো।

১। ঝটপট স্বাস্থ্যকর খাবারের ব্যবস্থা

সারাদিন স্কুল-কলেজ অথবা অফিসে দারুন ব্যস্ততার পর ক্ষুধায় কাতর হয়ে লোভে পড়ে আমরা অনেকেই অনলাইনে পিজ্জা বা ফাস্ট ফুড অর্ডার করে বসি। এই সমস্যা থেকে পরিত্রানের জন্য সময়ের আগেই খাবার রান্না করে রাখার চেষ্টা করুন। চর্বি ছাড়া মুরগীর বুকের মাংস অথবা অল্প তেলে হালকা করে ভাজা সবজি ইত্যাদি রান্না অল্প সময়েই করে ফেলতে পারবেন। অল্প সময়ে স্বাস্থ্যকর রান্নার জন্য-

  • স্লো কুকার বা রাইস কুকার ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনি কম সময় দিয়েই রান্না করতে পারবেন এবং খাবার দীর্ঘ সময় গরমও থাকবে।
  • সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে কয়েক দিনের রান্না একসাথে করে নিতে পারেন। এর পর ছোট ছোট ঢাকনা দেয়া বক্সে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। পরে প্রয়োজন মত খাওয়ার আগে শুধু গরম করে নিয়ে খেতে পারবেন।  
  • বর্তমানে আমাদের দেশে ঘরোয়াভাবে অনেক ফুড ডেলিভারি সার্ভিস শুরু হয়েছে। এদের কাছে আপনি অনেকটা ঘরের তৈরি খাবারের মতই টাটকা খাবার পাবেন। প্রয়োজন হলে এই ধরনের সার্ভিসও গ্রহন করতে পারেন।

২। আগের দিন রাতেই পরের দিনের লাঞ্চ রেডি করে নিন

সকালে যদি লাঞ্চ তৈরির সময় না পান তবে সম্ভব হলে আগের দিন রাতেই তা তৈরি করে রাখুন। দুপুরে ভারী কিছু খেতে চাইলে আগের দিন রাতে তরকারি রান্না করে রাখতে পারেন আর সকালে শুধু ভাত বা রুটি তৈরি করতে পারেন। আর যদি হালকা খাবার খেতে চান তবে চর্বি ছাড়া মুরগীর মাংস দিয়ে স্যান্ডউইচ, অথবা টুনা স্যাল্যাড তৈরি করতে পারেন।

ভালো থাকা মানে কিন্তু শুধু শারীরিকভাবেই ভালো থাকা নয় মানসিকভাবেও ভালো থাকা। তাই শরীরের পাশাপাশি মনেরও যত্ন নিতে হবে। ইতিবাচক চিন্তা করুন এবং কোন পরিস্থিতিতেই আশাহত হওয়া চলবে না। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে উৎসাহিত করতে নিজেকে নিজেই পুরুস্কৃত করুন।

৩। সকালের নাস্তা অবশ্যই করতে হবে

আপনি যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন সকালের নাস্তা কখনই এড়িয়ে যাবেন না। সকালে খালি পেটে কাজ শুরু করলে আপনি অল্প সময়ের মধ্যেই ক্লান্ত হয়ে পড়বেন, অলসতা ভর করবে এবং অল্পতেই চাপ অনুভব করবেন। ফলে আপনার কাজের গতিশীলতা হ্রাস পাবে। সকালের নাস্তা স্বাস্থ্যকর হওয়া জরুরী। তাজা ফল, ডিম সিদ্ধ, অল্প তেলে রান্না সবজি সাথে লাল আটার রুটি, অথবা ওটস ইত্যাদি সকালের নাস্তায় খেতে পারেন।

৪। প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন

চা বা কফি খাওয়ার পরিবর্তে প্রচুর পরিমানে পানি পান করা শুরু করুন। এতে আপনার ক্যালোরি গ্রহনের মাত্রাও কমে যাবে। অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যাফেইন এবং চিনি গ্রহন করলে আপনার ক্লান্তি বাড়তে পারে এবং শরীরে শক্তির পরিমান কমতে পারে। পানি পানের পরিমান বাড়ানোর জন্য হাতের কাছে একটি পানির বোতল রাখতে পারেন।

৫। ব্যায়ামের জন্য সময় বের করুন

প্রতিদিনের রুটিনে ব্যায়ামের জন্য কিছুটা সময় আলাদা করে রাখুন। সময় বের করতে পারলে জিমে গিয়ে ব্যায়াম করতে পারেন। তবে সেটা যদি একেবারেই সম্ভব না হয় তবে ঘরেই প্রতিদিন কিছুটা সময় বের করে ব্যায়াম করে নিতে পারেন। সকালে বা সন্ধ্যায় সময় পেলে ঘন্টাখানেক হেটেও নিতে পারেন। এতেও বেশ উপকার পাবেন।

৬। কোন কাজটিকে অগ্রাধিকার দিবেন তা ঠিক করুন

আমাদের জীবনে এমন অনেক কাজের দায়িত্ব নিতে হয় যার বেশীরভাগই করা প্রয়োজন। কিন্তু একজনের পক্ষে সব কাজ সুষ্ঠভাবে করা সম্ভব নয়। তাই কোন কাজটিকে অগ্রাধিকার দিবেন সেটা ঠিক করে নিন। ধরুন অফিস টাইমের পরে আপনি কোন ট্রেইনিং সেন্টারে ট্রেইনিং প্রদান করেন বা কোন ভাষা শিক্ষা ক্লাসে কাস করেন। আপনার কোন কাজটি সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ন সেটাকে অগ্রাধিকার দিন। যেমন অফিসের কাজ সবচেয়ে জরুরী। এখন অফিস টাইমের পর কঠিন মনে হলে ট্রেইনিং অথবা ভাষা শিক্ষা যে কোন একটি কাজ কিছুদিনের জন্য অফ রাখতে পারেন। পরে অফিসের চাপ কমে গেলে আবার শুরু করতে পারেন।

৭। পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমান

অতিরিক্ত ব্যস্ততার কারনে অনেকেই ঘুমের পরিমান কমিয়ে দিয়ে থাকেন যেটা একেবারেই ঠিক কাজ নয়। কারনে এতে আপনার লাভের পরিবর্তে ক্ষতিই বেশী হবে। আপনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন এবং আপনার স্ট্রেসের পরিমান বেড়ে যেতে পারে এবং কর্ম স্পৃহা কমে যেতে পারে। তাই আপনি দিনে যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন রাতে ৭ থেকে ৯ ঘন্টা অবশ্যই ঘুমাতে হবে।

পরিশেষে, শত ব্যস্ততার মাঝেও সুস্থ ও ফিট থাকার জন্য উপরে আলোচিত টিপসগুলো অনুস্বরণ করতে পারেন। মনে রাখবেন ভালো থাকা মানে কিন্তু শুধু শারীরিকভাবেই ভালো থাকা নয় মানসিকভাবেও ভালো থাকা। তাই শরীরের পাশাপাশি মনেরও যত্ন নিতে হবে। ইতিবাচক চিন্তা করুন এবং কোন পরিস্থিতিতেই আশাহত হওয়া চলবে না। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে উৎসাহিত করতে নিজেকে নিজেই পুরুস্কৃত করুন। সবকিছু সহজভাবে গ্রহন করতে শিখুন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।

What do you think?

Written by সানজিদা আলম

একজন ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটার। টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, প্রোডাক্ট রিভিউ এবং ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। লেখালেখির পাশাপাশি ভালোবাসি পড়তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

শাওয়াল মাসের ছয় রোজা

শাওয়াল মাসের ছয় রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত

আইফোন কভার

ফোন কভারঃ কেনার আগে যা অবশ্যই জানা দরকার