পরিকল্পনা আর চিন্তাভাবনা দুটোই গুরত্বপূর্ণ বিষয়। তবে পরিকল্পনাকে কাজে বাস্তবায়ন করতে না পারলে আমরা সবসময়ই পরিকল্পনা আর চিন্তাভাবনার ভেতরেই আটকে থাকব। আমাদের উদ্দেশ্য যদি কখনো বাস্তবায়িত না হয়, তাহলে আমাদের অবশ্যই অ্যাকশন নেওয়া শুরু করতে হবে। সব সময় ভাবনা-চিন্তা করে কাজে দেরি করলে অনেক সময় কাজ শুরু করাই অসম্ভব হয়ে দাঁড়াতে পারে, তাই আপনি কাজ শুরু করে দিন এখনই। কিন্তু কিভাবে করবেন? চলুন কিছু সমাধান দেখা যাক।
সিদ্ধান্ত নিন কোন কাজটা আপনি সত্যিই করতে চান
আপনি আসলে কি চান সে ব্যাপারে আপনার একটা সাধারণ আইডিয়া থাকা প্রয়োজন। আমরা মাঝে মাঝেই অনেক কিছু করার কথা ভাবি, যেমন নতুন কোনো চাকরি খোঁজা, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ টক্সিক হলে সেখান থেকে বেরিয়ে আসা, নতুন কোনো স্কিল শেখা কিংবা নতুন কোনো শখ খুঁজে বের করা। কিন্তু মাঝে মধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না, কাজে এগোতে পারি না, কারণ আমরা আসলে বর্তমান অবস্থায় হয়তো অনেকটাই মানিয়ে নিয়েছি, আছি কিছুটা স্বস্তিতেই।
আপনার জীবন যদি একদম পারফেক্ট গতিতেও চলে, এরপরেও সেটাকে সে সেভাবেই রাখতে হবে এমন কোনো কথা নেই। হয়তো আপনার নতুন একটা চ্যালেঞ্জ প্রয়োজন। আপনি যদি কিছু চান, আর যদি নিশ্চিত জানেন যে আপনি কি চান, তাহলে সে পথে এগিয়ে চলুন। এ জন্য পরিস্থিতি খারাপ হওয়া বা বদলানোর জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। আপনিই সিদ্ধান্ত নিয়ে দেখুন ভবিষ্যত কেমন হয়।
পরিস্থিতি হয়তো আপনার অনুকূলে নয়, তবুও করুন
আমরা সবাই যে কমন একটা কাজ করি তা হল, আমরা নির্দিষ্ট একটা সময়ের জন্য বা নির্দিষ্ট কিছু ঘটার জন্য অপেক্ষা করি। নতুন বছর শুরুর অপেক্ষা করি, নতুন সপ্তাহের অপেক্ষা করি, টাকা হাতে আসার জন্য অপেক্ষা করি কিংবা অপেক্ষায় থাকি অবসর পাওয়ার। কিন্তু এই সিচুয়েশনগুলো তো জীবনে না-ও আসতে পারে। অথবা আপনি যেভাবে কল্পনা করেছেন সেভাবে না-ও আসতে পারে। সব সময় এমন কিছু না কিছু থাকবেই যা আপনাকে পেছনে টেনে ধরে রাখবে। আপনার সময় আর এনার্জি কেড়ে নেবে, আপনার ভেতর তৈরী করবে কেমন এক ক্লান্তি।
সিচুয়েশন পারফেক্ট হওয়ার জন্য অপেক্ষা না করে যদি বর্তমান অবস্থাতেই কাজটা করে ফেলা সম্ভব হয়, তাহলে করে ফেলুন। পারফেক্ট সিচুয়েশন বলতে কিছু নেই। আপনি যদি কোনো কাজ না করার অজুহাত খুঁজতে থাকেন, সব সময় একটা না একটা অজুহাত পেয়েই যাবেন। কিন্তু কিছু শুরু করতে চাইলে আজকেই শুরু করতে পারেন। অল্প করে হলেও শুরু করুন।
আপনার দায়িত্ব আজকের থেকে কখনই কমবে না, তাই শুরু করে দিন
সময়ের সাথে সাথে আপনার দায়িত্ববোধ আরও বাড়তেই থাকবে। আজকে সন্তান না থাকলে কাল তা হতে পারে। আজকে স্বামী/বউ না থাকলেও সামনে হতে পারে। হ্যাঁ, আপনার বাচ্চাকাচ্চারা একদিন বড় হবে। তাদের দায়িত্ব আপনার ওপর থেকে যদি কমেও যায়, কিন্তু একদিন নাতি-পুতি তো হবে, অথবা আপনি নতুন চাকরি পাবেন, অথবা নতুন ব্যবসা দাঁড়া করাতে চাইবেন। বয়সের সাথে সাথে আপনার দায়িত্বও বৃদ্ধি পাবে। তখন আপনি বুঝতে পারবেন, আগে দায়িত্ব কত কম ছিল আর এখন দায়িত্ব কত বেড়ে গেছে।
এসব চিন্তা অনেক সময় আপনাকে হতাশাগ্রস্ত করে দিতে পারে। কিন্তু আপনি যদি পজিটিভ দিকে তাকান তাহলে দেখবেন, নতুন কাজে হাত দেওয়ার দ্বারা আপনি জীবনটাকে আরো সুন্দর করছেন, নিজেকে আরো উচ্চতর অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। যদি জীবনে সুন্দর কোনো উপাদান যোগ করতে চান, তাহলে অপেক্ষায় থাকবেন না। কারণ, কাজটা ভবিষ্যতে সহজ হওয়ার বদলে আরো জটিলই হবে।
আপনি কখনই শতভাগ কনফিডেন্ট হবেন না, তাই কাজটা করে ফেলুন
আপনি হয়তো একটু নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন। হয়তো আপনি একটি নতুন ব্যবসা শুরু করতে বা একটি নতুন কোর্স শুরুর জন্য প্রস্তুত বোধ করছেন না। কিন্তু অপেক্ষা করলে এর সমাধান হবে না। কমপ্লিট স্বাচ্ছন্দ্যবোধের অবস্থা আপনার জীবনে কখনো না-ও আসতে পারে। তাই এই চিন্তা করে পেছনে থেমে থাকার কোনো প্রয়োজন নেই।
সংশয় আসবেই মনের ভেতর। এটা স্বাভাবিক। সর্বোপরি আপনাকে নিজের কাজের পরিণতিগুলো বিবেচনা করতে হবে। আপনার যদি নিজেকে অনিরাপদ লাগে, কাজ করতে ইচ্ছা না করে তবে সম্ভবত আপনি নিজের সক্ষমতাকেই সীমাবদ্ধ করছেন, খাটো করে দেখছেন। কোনো ঝুঁকি নেওয়ার আগে শতভাগ কনফিডেন্ট বোধ করতে হবে এই ধারণাকে আপনি দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিন। নয়তো কাজ শুরু করা আপনার দ্বারা কখনই সম্ভব হবে না।
GIPHY App Key not set. Please check settings