in

বয়স ৩০ পেরিয়েছে? গর্ভধারনে হতে পারে কিছু সমস্যা

over age 30 years old pregnancy problems

বিশেষজ্ঞদের মতে নারীদের গর্ভধারনের সঠিক বয়স ২০ থেকে ৩০ বছর। কেননা ৩০ বছর পর্যন্ত নারীদের সন্তান ধারনের ক্ষমতা বেশ ভালো থাকে। এর পর তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। তাই ৩০ বছর পেরুনোর আগেই অন্তত একটি সন্তান গ্রহন করা উচিত। কিন্তু, সময়ের সাথে সাথে আমাদের চিন্তাধারা ও জীবনধারায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। উচ্চশিক্ষা শেষ করে প্রতিষ্ঠিত না হয়ে এখন কেউ আর পরিবার গঠনে আগ্রহী হয় না। ফলে বেলা গড়িয়ে কখন ৩০ পেরিয়ে যায় তা খেয়াল থাকে না। শেষে গর্ভধারনে দেখা যায় নানারকম জটিলতা। বয়স ৩০ বছর পেরিয়ে গর্ভধারনে মহিলাদের কী কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তা নিয়ে আজকে আমরা আলোচনা করবো।

প্রজনন ক্ষমতা কেন কমে?

পুরুষরা জন্মগতভাবে শুক্রাণু সহ জন্মগ্রহন করে না। সময়ের সাথে সাথে তাদের শরীরে শুক্রাণু তৈরি হতে থাকে। কিন্তু নারীর ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। নারী শিশু নির্দিষ্ট কিছু ডিম্বাণু নিয়েই জন্মগ্রহন করে এবং এই পুঁজি নিয়েই তাকে মাতৃত্বের যাত্রা সম্পন্ন করতে হয়। পরিপক্ক বয়সে প্রতিমাসে ঋতুশ্রাবের সাথে একটি পরিপক্ক ডিম্বাণু এবং আরো কিছু অপরিপক্ক ডিম্বাণু নষ্ট হয়ে যেতে থাকে। এভাবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে মহিলাদের গর্ভধারনের সম্ভাবনা কমতে থাকে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, নারীদের ২০ থেকে ৩০ বছর বয়স সন্তান ধারনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। তাই প্রথম সন্তান ৩০ বছর বয়স হওয়ার আগেই নেয়া উচিত। এখন চলুন দেখি ৩০ বছর পর গর্ভ ধারনে কী কী জটিলতা হতে পারে।

১। স্বাস্থ্যকর ডিম্বানুর সংখ্যা কমতে শুরু করে

আগেই বলেছি নারীরা একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ডিম্বাণু নিয়ে জন্মগ্রহন করে এবং প্রতিমাসে সেখান থেকে কিছু পরিপক্ক ও অপরিপক্ক ডিম্বাণু নষ্ট হতে থাকে। তাই বয়স বাড়ার সাথে সাথে নারীদের স্বাস্থ্যকর ডিম্বাণু কমতে থাকে এবং গর্ভধারনের সম্ভাবনা কমতে থাকে।

২। মিসক্যারেজের সম্ভাবনা বেড়ে যায়

নারীদের বয়স বাড়ার সাথে স্বাস্থ্যকর ডিম্বাণু কমতে থাকে তাই ৩০এর পরে গর্ভধারন করলে আগাম গর্ভপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই বেশী বয়সে গর্ভধারনে মা ও শিশু উভয়েই ঝুঁকির মধ্যে থাকেন।

৩। গর্ভধারনে সময় লাগে বেশী

প্রথম সন্তান ৩০ বছরের পরে নেয়ার পরিকল্পনা করলে এই বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। যেহেতু বয়সের সাথে সাথে নারীর উর্বরতা কমতে শুরু করে তাই গর্ভধারনে সময় বেশি লাগতে পারে। স্বাভাবিক ক্ষেত্রে দেখা যায় নারীরা সব ঠিক থাকলে ২/১ মাসের চেষ্টাতেই গর্ভবতী হয়ে পরেন কিন্তু ৩০ এর পরে এসে সব ঠিক থাকলেও খুব সহজে গর্ভ সঞ্চার হয় না।

৪। অন্যান্য শারীরিক সমস্যা তৈরি

পুরুষের মত নারীদেরও বয়সের সাথে সাথে নানারকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। যেমন হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম, ফেলোপিওন টিউব ব্লক, জরায়ুতে টিউমার ইত্যাদি। এই ধরনের শারীরিক সমস্যা থাকলে কনসিভ করতে সমস্যা হয়। এমনকি কনসিভ হওয়ার পরেও নানারকম জটিলটা সৃষ্টি হতে থাকে। সময়ের আগেই প্রসব হতে পারে আবার নবজাতকের প্রসব কালীন জটিলতার কারনে শারীরিক ক্ষতি হতে পারে।

৫। ভ্রুনের সমস্যা থাকতে পারে

যেহেতু বয়স বাড়ার সাথে সাথে মায়ের শারীরিক সমস্যা তৈরি হতে পারে এবং তা ভ্রুনের জন্যেও ঝুকিপূর্ন হতে পারে। শিশুর ক্রোমোজোমাল অস্বাভাবিকতা যেমন ডাউন সিনড্রোম মায়ের বয়স বাড়ার সাথে বৃদ্ধি পেতে পারে। শুধু তাই নয়, একসাথে একাধিক ভ্রুন অর্থাৎ মাল্টিপল প্রেগনেন্সির ঝুঁকিও বেড়ে যায়। এমন অবস্থায় সময়ের আগেই প্রসব করানোর প্রয়োজন হতে পারে যেটা মা ও শিশু উভয়ের জন্যই ঝুকিপূর্ন।

সতর্কতা

গর্ভধারনকালে মায়ের বয়স যদি ৩০/৩৫ হয় তাহলে কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী। গর্ভধারনের আগে থেকেই মাকে পারীক্ষা নিরিক্ষা করে শারীরিক কোন রোগ বা সমস্যা আছে কিনা তা নির্নয় করতে হবে। যদি কোন সমস্যা যেমন হাই ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস, থাইরয়েডের সমস্যা থাকে তাহলে গর্ভধারনের আগেই চিকিৎসা নিয়ে সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে। নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং গর্ভাবস্থায় প্রতি মাসে চেক আপ করাতে হবে।

পরিশেষে,

মাতৃত্ব যে কোন নারীর জন্যই সবচেয়ে আকাংক্ষিত বস্তুর একটি। তাই কোন অসচেতনতা বা অসাবধানতায় যেন তা ক্ষতিগ্রস্থ না হয়ে যায় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা পরিবারের সকলেরই দায়িত্ব। বয়স ৩০ পেরিয়েছে তাই বলে মাতৃত্বের স্বাদ থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে বিষয়টা তা নয়। বেশি বয়সে গর্ভধারনের কারনে মা ও শিশুর যেন কোন ক্ষতি না হয় তাই সর্বাধিক সচতনতা ও ডাক্তারের নির্দেশনা মেনে চলা একান্ত জরুরী।

What do you think?

Written by সানজিদা আলম

একজন ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটার। টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, প্রোডাক্ট রিভিউ এবং ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। লেখালেখির পাশাপাশি ভালোবাসি পড়তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

হাত পায়ের কালো দাগ

হাত ও পায়ের কালো দাগ দূর করার সহজ উপায় জানুন

Success-motivation

ভালোলাগার কাজটি শুরু করে দিন, সফলতা আসবে