in

ত্বকের জন্য উপকারী কিছু ভিটামিন কে সমৃদ্ধ খাবার

Vitamin K for Skin Care

আমাদের ত্বক সুস্থ, পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল থাকার জন্য অনেক পুষ্টির প্রয়োজন। এর মানে হল আমাদের স্বাস্থ্যকর খাবার সঠিক পরিমানে খাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। খাদ্যে থাকা নানারকম ভিটামিনের মধ্যে, আপনি হয়ত ইতোমধ্যে ত্বক এবং চুলের জন্য ভিটামিন বি এর উপকারিতা সম্পর্কে শুনেছেন। এই ভিটামিনগুলোর মধ্যে আরেকটি রয়েছে যেটির দিকেও আপনার মনোযোগ দেওয়া উচিত, আর সেটা হল ভিটামিন কে। এটি একটি চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন, যার দুটি রূপ রয়েছে: কে১ এবং কে২। ভিটামিন কে সুস্থ হার্ট এবং হাড়ের জন্য  প্রয়োজনীয়। কিন্তু এটি ত্বক ভালো রাখতেও অনেক জরুরী। নীচে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা হলঃ 

ত্বকের জন্য ভিটামিন কে কেন গুরুত্বপূর্ন?

১। ভিটামিন কে ক্ষত সারাতে এবং দ্রুত শুকাতে সাহায্য করতে পারে।  

২। যেহেতু এটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ করে, তাই এটি আপনার ত্বককে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে।

৩। এই ভিটামিনটি ত্বকের ফোলাভাব, প্রদাহ এবং লালভাব কমাতে পারে।

৪। এটি শুষ্ক ত্বক এবং ডার্ক সার্কেল প্রতিরোধেও সাহায্য করতে পারে।

৫। ভিটামিন কে ত্বকের বার্ধক্যের দৃশ্যমান দিকগুলো অর্থাৎ বলিরেখাকে ধীর করতেও সাহায্য করে।

এখানে ভিটামিন কে সমৃদ্ধ কিছু খাবার নিয়ে আলোচনা করা হল যা আপনার ত্বকের জন্য ভাল:

১। ব্রকলি

ভিটামিন কে১ বা ফাইলোকুইনোন সাধারণত সবুজ শাক-সবজিতে পাওয়া যায়। ব্রোকলি ত্বকের জন্য বিশেষভাবে ভালো, কারণ এতে অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ভিটামিন এ এবং সি এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমানে জিঙ্ক পেতে চাইলে ব্রোকলি খাওয়া বেশ সহজ একটি উপায়। ব্রোকলিতে অ্যান্টি-এজিং উপাদান রয়েছে, কারণ এর লুটেইন উপাদান অক্সিডেটিভ ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। এতে সালফোরাফেনও রয়েছে, যা আপনার ত্বককে সূর্যের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

২। পালং শাক

এই পাতাযুক্ত গাঢ় সবুজ শাক খাওয়ার ফলে ত্বকের উন্নতির পাশাপাশি আরো অনেক উপকার পাওয়া যায়। আধা কাপ রান্না করা পালং শাক থেকে প্রায় ৪৪০ মাইক্রো গ্রাম ভিটামিন কে পাওয়া যায়। এই সবজিতে ভিটামিন এ, বি এবং সি এর পাশাপাশি ফোলেটও রয়েছে। এটি  প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টেও আছে। স্বল্পমেয়াদে এবং দীর্ঘমেয়াদে পরিষ্কার, উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যকর ত্বক পাওয়ার জন্য এই সবই অপরিহার্য। পালং শাক আপনার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে পারে এবং কোলাজেনের উত্পাদনকে বৃদ্ধি করতে পারে এবং এটিকে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল এবং ইউভি ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে।

এই দুটি ছাড়াও, বাধাকপি, সরিষার শাক, শালগম শাক, লেটুস, ফুলকপি ইত্যাদির মতো শাকসবজিও ভিটামিন কে১ এর চমৎকার উৎস। এইভাবে, আপনার খাদ্যতালিকায় বেশি বেশি সবুজ শাক সবজি রাখার মাধ্যমে খুব সহজ উপায়ে ভিটামিন কে গ্রহন করতে পারবেন। কারণ এই খাবারগুলোতে অন্যান্য খাবারের তুলনায় এই ভিটামিনের পরিমান অনেক বেশি থাকে। যায়হোক, শুধুমাত্র সবুজ শাকসবজি দিয়ে খাদ্য তালিকা পূর্ন করা যাবে না, সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন সুষম খাদ্য গ্রহণের। চলুন তাহলে দেখি আর কোন কোন খাদ্য থেকে ভিটামিন কে পাওয়া যেতে পারে।

৩। ডালিম

ফলের মধ্যে, ডালিমে ভিটামিন কে তুলনামূলকভাবে বেশি পাওয়া যায়। ডালিম ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা কোলাজেন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ফলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো প্রদাহ কমাতে এবং আপনার ত্বকের সামগ্রিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে। এটি আপনাকে অকাল বার্ধক্য এড়াতেও সাহায্য করতে পারে। উপরন্তু, ডালিমের বীজ এবং রস দুটোই ত্বকের যত্নে বাহ্যিকভাবে ব্যবহার করা যায়।

৪। সয়াবিন তেল

২০১৪ সালে পরিচালিত একটি গবেষণা থেকে জানা যায় যে, সয়াবিন তেলে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন কে পাওয়া যায় যা আমাদের হাড়ের ঘনত্ব ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ১ টেবিল চামচ সয়াবিন তেল থেকে ২৫মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত ভিটামিন কে পাওয়া যায়। এই কারনে গবেষকরা বলেছেন যে, সয়াবিন তেল মানবদেহের হাড়ের মিনারেলগুলো ভারসাম্য রক্ষা করতে ভূমিকা রাখতে পারে।

৫। দুগ্ধজাত পন্য

ভিটামিন কে২ বা মেনাকুইনোন কিছু নির্দিষ্ট ফার্মেন্টেড খাবার ও কিছু প্রানীজ খাবারে পাওয়া যায়। দুগ্ধজাত দ্রব্য যেমন পূর্ণ চর্বিযুক্ত দুধ, ডিম, এবং নির্দিষ্ট ধরনের পনিরে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন কে২ পাওয়া যায়। এই খাবারগুলো অন্যান্য ভিটামিন, খনিজ এবং পুষ্টিতেও সমৃদ্ধ যা আমাদের স্বাস্থ্যজ্জ্বল ত্বকের জন্য অনেক জরুরী। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, অনেকেরই দুগ্ধজাত পন্যে এলার্জি সহ আরো অন্যান্য সমস্যা হতে পারে। তাই এই খাবারগুলোতে কোন সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে হবে।

পরিশেষে, ত্বকের জন্য উপকারী কিছু ভিটামিন কে সমৃদ্ধ খাবার নিয়ে আমরা আলোচনা করলাম। এই খাবারগুলো ছাড়াও মাছ ও বাদামে অল্প পরিমানে ভিটামিন কে পাওয়া যায়। আপনার পছন্দ অনুযায়ী খাবারগুলো প্রতিদিনের মেনুতে যুক্ত করুন। মনে রাখবেন সাপ্লিমেন্ট গ্রহন করার চেয়ে প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায় এমন খাবার থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন গ্রহন করা অনেক নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর।

What do you think?

Written by সানজিদা আলম

একজন ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটার। টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, প্রোডাক্ট রিভিউ এবং ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। লেখালেখির পাশাপাশি ভালোবাসি পড়তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

why we drink black coffee to loss weight

ওজন কমাতে ব্ল্যাক কফি কেন খাবেন?

Korean skincare routine steps

কোরিয়ান স্কিনকেয়ার রুটিনের ধাপগুলো কী কী?