ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের খাবারের পরিবর্তনও ঘটতে থাকে। গ্রীষ্মকাল মানে প্রচুর পরিমানে ঠান্ডা পানীয় যা শরীরকে নিমিষেই ঠান্ডা করতে পারবে আর শীতকাল মানে ঠাণ্ডাকে কাবু করার জন্য উষ্ণ পানীয়। আপনি যদি ত্বকের সুরক্ষা নিয়ে অনেক বেশী সচেতন হয়ে থাকেন তাহলে এই সব পানীয় গ্রহনের ব্যাপারেও আপনার জানা জরুরী। অবশ্যই আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে তবে এর পাশাপাশী সুস্বাস্থের জন্য এবং সারাদিন হাইড্রেটেড থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর পানীয় পান করা প্রয়োজন। আজকে আমরা গ্রীষ্ম ও শীত উভয় ঋতুর জন্যই উপযোগী স্বাস্থ্যকর কিছু পানীয় নিয়ে আলোচনা করবো যা আপনার ত্বকের জন্য জন্য খুবই উপকারী।
আপনার ত্বকের জন্য কোন পানীয়টি ভালো আপনি জানেন কি? আপনার সুবিধার জন্য এখানে স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য ১০টি গরম এবং ঠান্ডা পানীয় নিয়ে আলোচনা করা হল।
শীতকালের জন্য ৫টি গরম পানীয়ঃ
১। গ্রীন টি
গ্রিন টিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে এটা এখন আমরা সবাই জানি। এটি ব্রণ এবং সেইসাথে ত্বকে বার্ধক্যজনিত প্রভাবগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করতে পারে। তাই আপনি যদি তারুণ্য এবং কোমল ত্বক চান, তাহলে এই চায়ের কাপ দিয়ে আপনার দিন শুরু করুন।
২। ভেষজ চা
পুদিনা চা, মোরিঙ্গা চা, গোলাপ চা ইত্যাদিকে ভেষজ চা বলা হয়। এই চাগুলো যেমন সুস্বাদু ঠিক তেমনি ত্বকের জন্য উপকারী। এগুলোতে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আপনাকে উজ্জ্বল ত্বক পেতে সাহায্য করতে পারে। এই চাগুলো শরীরকে ডিটক্সিফাই করতেও সাহায্য করে, যা ত্বকের জন্য খুবই জরুরী।
৩। মশলা পানি
মশলা পানি বলতে আমাদের দেশে পাওয়া যায় এমন খুব সাধারন কিছু মশলা যেমন জিরা, মৌরি, মেথি, কিসমিস ইত্যাদি ভেজানো পানির কথা বলা হয়েছে। আসলে এই ধরনের পানীয়গুলো ত্বকের জন্য দারুন ভালো কাজ করে। আপনি তাই আপনার পছন্দমত দারুচিনি, জিরা, কিসমিস, মেথি অথবা হলুদ ফোটানো পানি পান করতে পারেন।
৪। হলুদ দুধ
শুধু হলুদের পানি নয়, হলুদ দেয়া দুধও আপনার ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। হলুদের আশ্চর্যজনক সব গুনের কারনে একে সুপার ফুড বলা হয়। তাই প্রাচীনকাল থেকেই নানারকম শারীরিক সমস্যার থেকে বাঁচতে হলুদের নানারকম রেসিপি ব্যবহার করা হয়। তাই হলুদ দেয়া দুধ কেবল শীতকালে নয় বরং সারা বছরই পান করা উচিত।
৫। বাদাম দুধ
দুধের আরো একটি মজার রেসিপি হল বাদাম দুধ। বিভিন্ন রকম বাদাম আমাদের দেশে প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। আপনার পছন্দের বাদাম গুড়ো বা পেস্ট করে গরম দুধের সাথে মিশিয়ে পান করতে পারেন। তবে অনেকের বাদামে এলার্জি হতে পারে তাই বাদাম খাওয়ার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
গ্রীষ্মকালের জন্য ৫টি ঠান্ডা পানীয়
১। লেবু পানি
লেবু পানি পছন্দ করে না এমন মানুষ আমাদের দেশে একজনও হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবে না। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু ঠিক তেমনি ত্বকের জন্য উপকারী। এর ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনে ভুমিকা রাখে। এটি ত্বকের বলি রেখা ও দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
২। তেতুলের সরবত
এটি আরেকটি জনপ্রিয় গ্রীষ্মকালীন পানীয় যা আপনাকে অবশ্যই আপনার নিয়মিত খাদ্যের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। কারণ তেঁতুল ত্বককে ময়শ্চারাইজ করতে এবং কালো দাগ এবং ট্যানিং কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৩। টক দই এর সরবত
এই সরবতে প্রোটিন, ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই শীতল পানীয়টি হজমশক্তি বাড়াতে কার্যকর, যা পরোক্ষভাবে আপনার ত্বককেও দাগ মুক্ত ও উজ্জ্বল করে।
৪। সবজির জুস
ফ্রেস তাজা সবজির জুস হল ত্বকের উপকারী পুষ্টিগুনের পাওয়ার হাউস। গাজর, বিট রুট, শসা, পালং শাক ইত্যাদি সবজির জুস পছন্দমত আপনার খাদ্যতালিকাতে রাখতে পারেন। সরাসরি সবজি ব্লেন্ড করে কিছু বরফের টুকরো দিয়ে ঠান্ডা এই পানীয় পান করতে পারেন।
৫। ডাবের পানি
ডাবের পানি এমন একটি শরীর শীতলকারী পানীয় যেটা প্রকৃতি থেকে আমরা সরাসরি খাওয়ার উপযোগী হিসেবে পাই। এটি হাইড্রেটেড থাকার এবং শরীরকে ডিটক্সিফাই করার সবচেয়ে সহজ একটি মাধ্যম। এটি ত্বকের জন্যেও খুবই উপকারী।
পরিশেষে, এই স্বাস্থ্যকর পানীয়গুলোকে আপনার দৈনন্দিন খাদ্যের অংশ করে নিন আর আপনার ত্বকের উপর এর প্রভাব লক্ষ্য করুন। আশা করি কয়েক দিনের মধ্যেই আপনি ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন। আপনার আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।
GIPHY App Key not set. Please check settings