in

LoveLove

রেটিনলের উপকারিতা ও সঠিকভাবে ব্যবহারের নিয়ম

Retinol

অনেকেই ত্বকের যত্নে রেটিনলের ভূমিকা এবং কিভাবে রেটিনল ব্যবহার করতে হয় ইত্যাদি জানতে চান। তাদের জন্য এ লেখাটি অবশ্যই উপকারে আসবে।

রেটিনল এমন একটি কার্যকরী উপাদান যা আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। তবে সঠিকভাবে রেটিনল ব্যবহার না করা হলে ত্বকে বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আজকের লেখায় আপনাদের জানাবো রেটিনলের উপকারিতা ও কিভাবে এটি ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত।

রেটিনল সম্পর্কে কিছু তথ্য

রেটিনল হলো ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত অন্যতম জনপ্রিয় একটি অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট। অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট হলো সেসব উপাদান যেগুলো ব্যবহার করলে আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে ত্বক সুন্দর রাখা যায়। রেটিনল হলো এক ধরণের রেটিনয়েড, অন্যভাবে বলতে গেলে এটি ভিটামিন এ এর একটি ধরণ। মূলত অ্যান্টি এজিং উপাদান হিসেবে পরিচিত হলেও রেটিনলের আছে হরেক রকমের উপকারিতা।

আপনারা মার্কেটে রেটিনল রয়েছে এমন বিভিন্ন ধরনের ফেইস ক্রিম, আই ক্রিম, সিরাম, এসেন্স অথবা মাস্ক খুঁজে পাবেন। সাধারণত বিভিন্ন স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টে ০.০০১৫% থেকে ০.৩% এর মধ্যে রেটিনলের কনসেন্ট্রেশন রাখা হয়। মোটামুটি সবাই রেটিনল ব্যবহার করতে পারলেও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি ব্যবহার করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

কেন আপনাদের রেটিনল ব্যবহার করা উচিৎ?

রেটিনল সম্পর্কে তো জেনে নিলেন, চলুন এবার জেনে নেয়া যাক রেটিনলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।

০১। রেটিনলকে ন্যাচারাল স্কিন এক্সফোলিয়েটর বলা হয়ে থাকে। কারণ এটি আমাদের স্কিন সেলের টার্নওভার বাড়িয়ে দেয়, অর্থাৎ এটি ব্যবহার করলে আমাদের ত্বকে জমে থাকা ডেডসেল সহজেই দূর হয়ে যায়। এতে করে ত্বকের ছোট ছোট বাম্পস, ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইটহেডস দূর হয় এবং ত্বকের টেক্সচার হয়ে ওঠে মসৃণ।

মার্কেটে রেটিনল রয়েছে এমন বিভিন্ন ধরনের ফেইস ক্রিম, আই ক্রিম, সিরাম, এসেন্স অথবা মাস্ক খুঁজে পাবেন। সাধারণত বিভিন্ন স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টে ০.০০১৫% থেকে ০.৩% এর মধ্যে রেটিনলের কনসেন্ট্রেশন রাখা হয়। মোটামুটি সবাই রেটিনল ব্যবহার করতে পারলেও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি ব্যবহার করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

০২। যাদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা রয়েছে, তারা চোখ বন্ধ করে রেটিনল ব্যবহার করতে পারেন। সাধারণত যখন আমাদের লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায়, তখনই ব্রণের সমস্যা হয়। যেহেতু রেটিনল আমাদের ত্বক ভেতর থেকে এক্সফোলিয়েট করে, তাই এটি ব্যবহার করলে লোমকূপগুলো কখনোই বন্ধ হয় না। ফলে ব্রণের সংখ্যাও ধীরে ধীরে কমে যেতে শুরু করে। আবার রেটিনল ত্বকের অতিরিক্ত অয়েল প্রোডাকশনও নিয়ন্ত্রণে রাখে, ফলে নতুন করে ব্রণ ওঠা বন্ধ হয়।

দ্যা অর্ডিনারি ব্র্যান্ডের রেটিনল সিরাম কেনার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন

০৩। অনেকেরই রোদের তাপ বা বিভিন্ন হরমোনজনিত কারণে মেলানিন বেড়ে গিয়ে ত্বকের বিভিন্ন স্থানে হাইপারপিগমেন্টেশন দেখা দেয়। বিশেষ করে ঠোঁটের দুই পাশ কিংবা চোয়ালের দিকে অনেকেরই কালো ছোপ ছোপ দাগ থাকে। রেটিনল মেলানিনের এই অতিরিক্ত প্রোডাকশন বন্ধ করতে সহায়ক হওয়ার কারণে এটি ব্যবহার করলে ত্বকের এই হাইপারপিগমেন্টেশন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।

০৪। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের ত্বকে কোলাজেন নামক প্রোটিনের প্রোডাকশন কমে যাওয়ার কারণে ফাইন লাইনস বা রিংকেলস দেখা দেয়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে অল্প বয়সেও এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। রেটিনল কোলাজেন প্রোডাকশন বাড়াতে সহায়তা করে বলে এটিকে কার্যকরী অ্যান্টি এজিং উপাদান বলা হয়ে থাকে। তাই বিশেষজ্ঞরা ২৫ বছরের পর থেকেই নারীদের রেটিনল ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যদি আপনারা নিয়মিত রেটিনল ব্যবহার করেন, তাহলে আপনাদের ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ পড়বে না। 

০৫। রেটিনল আমাদের ত্বকের উজ্জলতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করে এবং এটি ব্যবহার করলে ত্বক সবসময় থাকে হেলদি ও গ্লোয়িং!

কিভাবে রেটিনল ব্যবহার করতে হবে?

যদি আপনারা নিজেদের স্কিন কেয়ার রুটিনে রেটিনল অ্যাড করতে চান, তাহলে এমন কোনো প্রোডাক্ট বেছে নিন যেটিতে কম কনসেনট্রেশানে রেটিনল রয়েছে। এতে করে রেটিনলের কারণে আপনার ত্বকে কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে না এবং ত্বকের সাথে সহজেই এটি মানিয়ে যাবে।

এবার আসি ব্যবহার করার নিয়মে। যারা প্রথমবার রেটিনল ব্যবহার করবেন, তারা সপ্তাহে এক থেকে দুইবারের বেশি এটি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। অন্ততপক্ষে আগে এক মাস আপনার ত্বকের সাথে এই উপাদানটি খাপ খাইয়ে নিতে দিন। এরপর যদি দেখেন আপনার ত্বকে রেটিনল স্যুট করে গেছে, তাহলে সপ্তাহে তিন দিন করে ব্যবহার করতে পারেন।

বিউটি ফর্মুলা ব্র্যান্ডের রেটিনল অ্যান্টি এ্যাজিং জেল ক্লিনজার কিনতে এই লিংকে ক্লিক করুন

রেটিনল ব্যবহার করার জন্য শুরুতেই মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিজের পছন্দের ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এবার ময়েশ্চারাইজারের ওপর রেটিনল সিরাম বা ক্রিম ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে কখনোই খুব বেশি পরিমাণে ব্যবহার করতে যাবেননা, বরং পী সাইজ বা একটি মটরশুঁটির আকারের সমানুপাতে নিয়ে তা পুরো মুখে ব্যবহার করুন।

একটি কথা সবসময় মাথায় রাখবেন, সেটি হলো রেটিনল কখনোই দিনের বেলা ব্যবহার করতে যাবেননা। বরং রেটিনলের আসল কার্যকারিতা পেতে চাইলে রাতে ঘুমানোর আগে এটি ব্যবহার করুন।

রেটিনল ব্যবহার করা শুরু করলে ত্বক সূর্যের প্রতি বেশ সংবেদনশীল হয়ে যায়। তাই দিনের বেলা অন্তত এসপিএফ ৫০ যুক্ত ভালো মানের সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। তা না হলে ত্বকে ব্রণ, লালচে ফুসকুড়ি কিংবা চামড়া উঠে যেতে পারে।

লেখার শেষে সবাইকে পরামর্শ হিসেবে বলবো, অনেকের ক্ষেত্রে রেটিনল ব্যবহার করার শুরুর দিকে ব্রণের সমস্যা হতে পারে। এটিকে পার্জিং বলা হয়। এমন হলে চিন্তার কিছু নেই। কারণ এটি কিছুদিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়। সেই সাথে আরো জেনে রাখা ভালো,রেটিনল ব্যবহার করে কাঙ্খিত ফলাফল পেতে চাইলে আপনাদেরকে কমপক্ষে তিন থেকে ছয় মাস অপেক্ষা করতে হবে। তাই কেউ এক সপ্তাহের ভেতরেই নিজের ত্বকে পরিবর্তন দেখবেন -এই আশা রাখবেন না। বরং ধৈর্য্য ধরে ব্যবহার করতে থাকুন, দেখবেন অবশ্যই ভালো ফলাফল পাবেন।

What do you think?

Written by সুমাইয়া রহমান দোলা

লেখালেখি শুরু করেছিলাম শখের বশেই৷ এখন এটি আমার নেশা, আবার পেশা ও বটে। প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি এখন ভালো লেখক হয়ে ওঠার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

চুলের আগা ফাটা

চুলের আগা ফাটা দূর করার খুব সহজ উপায়গুলো জানুন

hot and cold drinks for healthy skin

স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য ১০ টি গরম এবং ঠান্ডা পানীয়