in

২০১১ সালে নজর কেড়েছে যেসব প্রযু্ক্তি পণ্য

২০১১ সাল প্রযুক্তি বিশ্বের জন্য নিয়ে এসেছে নানান চমক জাগানো সব প্রযুক্তি আর পণ্য। এসবের মধ্যে অনেক আলোচিত পণ্য যেমন সাড়া ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে, তেমনি অনেক প্রযুক্তি এবং পণ্য বছর জুড়ে ছিল আলোচনার শীর্ষে। এই বছরের তেমন কিছু আলোচিত প্রযুক্তি পণ্য ও ডিভাইস নিয়ে সাজানো হলো এই লেখাটি।

আইপ্যাড ২

অ্যাপল’র আইপ্যাড ছিল ২০১০ সালের প্রযুক্তি বিশ্বের সেরা পণ্য। কম্পিউটিং-এর ধরণ পাল্টে দেয়া এই আইপ্যাডকে বলা হয় প্রযুক্তি ইতিহাসের অন্যতম চমক জাগানো পণ্য। আই প্যাড-এর সাফল্যের ধারাবাহিকতায় অ্যাপল চলতি বছরের বাজারে নিয়ে আসে নতুন সংস্করণে আইপ্যাড ২। আগের আইপ্যাডের সাথে আরও নতুন কিছু ফিচার আর উন্নত গ্রাফিক্স একে ট্যাবলেট পিসি’র জগতে করে তোলে অনন্য। বাজারে নানান ব্র্যান্ডের ট্যাবলেট পিসি থাকলেও সার্বিক বিচারে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সফল ট্যাবলেট পিসি’র নাম ওই আইপ্যাড।iPad

আইবিএম ওয়াটসন

সুপার কম্পিউটার তৈরিতে বরাবরই এগিয়ে রয়েছে আইবিএম। চলতি বছর তারা তাদের সুপার কম্পিউটারের চমক হিসেবে নিয়ে আসে ‘ওয়াটসন’কে। জনপ্রিয় কুইজ শো ‘জিওপারডি’তে অংশ নিয়ে তাক লাগিয়ে দেয় এই সুপার কম্পিউটার। ‘জিওপারডি’ ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দুই প্রতিযোগী ব্রাড রাটার এবং জেন কেনিংস-এর সাথে তিন দিনব্যাপী প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়ে তাদের বিরাট ব্যবধানে পরাজিত করে ‘ওয়াটসন’। এই প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়ার জন্য ওয়াটসনের স্মৃতিতে সংরক্ষিত ছিল প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাতার সমমানের নানান ধরনের তথ্য। তবে প্রতিযোগিতার সময় তাতে ইন্টারনেট সংযোগ ছিল না। সুপার কম্পিউটার ওয়াটসন তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে আইবিএম-এর ৭৫০ সার্ভার। এতে রয়েছে ২৮৮০টি পাওয়ার৭ প্রসেসর কোর এবং ১৬ টেরাবাইট র্যাম। আর এর সফটওয়্যার তৈরিতে করা হয়েছে জাভা, সি++, প্রোলগ-এর মতো ল্যাঙ্গুয়েজের সমন্বয়। ibm-watson-jeopardy

অ্যামাজন’র কাইন্ডল ফায়ার

অনলাইন জায়ান্ট অ্যামাজন তাদের ই-বুক রিডার ‘কাইন্ডল’ দিয়ে বাজার মাত করেছে অনেক আগেই। কাইন্ডল’র আদলেই তারা এবছর বাজারে নিয়ে আসে তাদের প্রথম ট্যাবলেট পিসি ‘কাইন্ডল ফায়ার’। ট্যাবলেট পিসি’র রাজত্বের এই যুগে অ্যাপল’র আইপ্যাড আর স্যামসাং-এর গ্যালাক্সি ট্যাব ছাড়া অন্য সব ট্যাবলেট তেমন একটা সাড়া ফেলতে ব্যর্থ হলেও কাইন্ডল ফায়ার সাড়া ফেলতে সমর্থ হয় বাজারে। আইপ্যাড’র শক্ত একটি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ইতোমধ্যেই তারা বাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করে ফেলেছে। দামেও তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় এর বিক্রির পরিমাণও বাড়তির দিকেই রয়েছে।kindle-fire

মাইক্রোসফট-এর কাইনেক্ট

গেম কনসোলের রাজ্যে মাইক্রোসফটের সাড়া জাগানো এক সংযোজনের নাম কাইনেক্ট। এটি প্রথম বাজারে আসে ২০১০ সালের একদম শেষভাগে। তবে ২০১১ সাল ধরেই এটি জনপ্রিয়তা পেয়ে এসেছে। তাই ২০১১ সালের পণ্য না হয়েও চলতি বছরের সেরা পণ্যগুলোর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে এটি। মানুষের শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সঞ্চলনার গতির উপর নির্ভর করে তৈরি করা এই ডিভাইসটি প্রথম দুই মাসের মধ্যেই বিক্রি হয়েছে প্রায় ৮ মিলিয়ন ইউনিট। যা একে সবচেয়ে দ্রু বিক্রি হওয়া ইলেকট্রনিক ডিভাইসে পরিণত করেছে।microsoft-kinect

স্যামসাং গ্যালাক্সি ফোন

সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় প্রযুক্তি পণ্যের নাম স্মার্টফোন আর এই স্মার্টফোনকে জনপ্রিয় করে তুলতে যে প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছর জুড়ে বাজার মাত করেছে, তার নাম স্যামসাং। স্যামসাং-এর গ্যালাক্সি সিরিজের সব স্মার্টফোন নিয়ে সারা বছর বাজার ধরে রেখেছে তারা। এই গ্যালাক্সি সিরিজের হাই এন্ড সব স্মার্টফোন থেকে শুরু করে রয়েছে অপেক্ষাকৃত সব কম দামের স্মার্টফোন। গ্যালাক্সি এস, গ্যালাক্সি এম, গ্যালাক্সি ওয়াই সহ বিভিন্ন রেঞ্জের স্মার্টফোন বছর জুড়েই বিক্রি হয়েছে প্রযুক্তি পরিমাণে। এমনকি তারা স্মার্টফোন বিক্রিতে পেরিয়ে গেছে অ্যাপলকেও। বছরের শেষ ভাগে তারা গ্যালাক্সি সিরিজের নতুন চমক হিসেবে নিয়ে আসে সর্বশেষ সংস্করণের অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের গ্যালাক্সি নেক্সাস।samsung-galaxy

ইন্টেল দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রসেসর

প্রসেসর এবং চিপ তৈরিতে এক কথায় বিশ্বের সেরা প্রতিষ্ঠানটির নাম ইন্টেল। বরাবরই তারা প্রসেসরের জগতে নিয়ে এসেছে নতুন নতুন চমক। এই চমকের ধারাবাহিকায় ইন্টেল তাদের প্রসেসর সিরিজে চলতি বছরে যুক্ত করে তাদের দ্বিতীয় প্রজন্মের স্যান্ডিব্রিজ প্রসেসর। নতুন এই প্রসেসর সিরিজের বিশেষত্ব হচ্ছে এই প্রসেসরে একই সাথে বিল্ট-ইন হিসেবে রয়েছে গ্রাফিকাল ইউজার ইন্টারফেস বা জিপিইউ। গ্রাফিক্স বিল্ট-ইন থাকায় এক্সটার্নাল গ্রাফিক্স কার্ডের প্রয়োজন অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে এই স্যান্ডিব্রিজ প্রসেসর। ৩২ ন্যানোমিটার ডাই প্রযুক্তির এই প্রসেসরে রয়েছে হাইপার থ্রেডিং এবং টারবো বুস্ট প্রযুক্তি। এতে করে প্রসেসরে নিয়মিত ক্লক স্পিডের চেয়েও পারফরম্যান্সের চাহিদা অনুযায়ী এই গতি বাড়তি পাওয়া সম্ভব। নতুন এই প্রসেসরের মাধ্যমে পিসি’র পারফরম্যান্স পুরোনো প্রসেসরের তুলনায় দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পাওয়া সম্ভব। চমক জাগানো এই প্রসেসর রাজত্ব করছে এখনও সমানতালে।SONY DSC

এএমডি ফিউশন প্রসেসর

ইন্টেলের দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রসেসরের মতো চলতি বছরে এএমডি বাজারে নিয়ে আসে একই প্রসেসরে সিপিইউ-এর সাথে বিল্ট-ইন জিপিইউ। আর তারা তাদের নতুন এই প্রসেসর সিরিজের নাম দেয় ‘ফিউশন ফ্যামিলি’। ইন্টেল স্যান্ডিব্রিজ প্রসেসরের মতন এই ফিউশন প্রসেসরগুলোতেও বিল্ট-ইন গ্রাফিক্স ইউনিট থাকায় এর মাধ্যমে এক্সটার্নাল গ্রাফিক্স কার্ড ছাড়াও উন্নতমানের গ্রাফিক্যাল আউটপট পাওয়া যায়। আর এতেও হাইপার থ্রেড প্রযুক্তি থাকার ফলে প্রসেসরের নিয়মিত গতির বাইরেও বাড়তি গতি পাওয়া সম্ভব। বছর জুড়ে ইন্টেলের প্রসেসরে সাথে সমানতালেই বাজার দখলে রেখেছে এই ফিউশন প্রসেসর।amd-fusion

What do you think?

Written by রাজা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

আপনার সম্পর্কে ১০টি চরম সত্য ঘটনা যা আমি জানি

আপনার সম্পর্কে ১০টি চরম সত্য ঘটনা যা আমি জানি!

জেনে নিন ফরমালিন বিহীন মাছ চেনার উপায়