শিরশিরে ঠান্ডা বাতাস আর পাতলা কুয়াসার চাঁদর এখুনি জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই জাঁকিয়ে শীত নামতে শুরু করবে। উত্তরের ঠান্ডা বাতাস হাড়ে কাঁপন ধরাতে শুরু করবে। শুরু হবে নানারকম পিঠাপুলি খাওয়ার ধুম।
মিষ্টি খেজুর রস আর রংবেরঙের সবজি আমাদের খাবারের আনন্দকে অনেক বেশী বাড়িয়ে তোলে। তবে হাড় কাঁপানো শীতে কষ্টও হয় অনেক। বিশেষ করে ছোট শিশু এবং বয়স্ক মানুষেরা বেশী কষ্ট পায়। তাই এই সময়ে প্রয়োজন রুম হিটারের। হ্যা, ছোট্ট এই ডীভাইসটি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ঘরের বাতাসকে উষ্ণ করে তোলে ফলে ঘরের পরিবেশ হয়ে উঠে আরামদায়ক। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং মডেলের রুম হিটার রয়েছে। এদের ফিচারেও রয়েছে অনেক বেশী পার্থক্য। আজকে আমরা রুম হিটারের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলবো। চলুন তাহলে শুরু করি।

রুম হিটার কেনার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল করবেনঃ
১। তাপমাত্রা সেটিং এর অপশন
এই ধরনের ডিভাইসে তাপমাত্রা সেটিং এর একাধিক অপশন থাকে। অপশন বেশী আছে এমন রুম হিটার পছন্দ করা উচিত। কেননা অনেক অপশন থাকলে ঘরের তাপমাত্রা বাড়ানো কমানো সহজ হবে।
২। ডিভাইসের ওজন ও আকার
রুম হিটার ছোট একটি ডিভাইস। একে প্রয়োজনমত এক ঘর থেকে আরেক ঘরে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তাই এর আকার ও ওজন দেখে কেনা উচিত। আকারে বড় ও ওজন বেশী হলে বহন করতে অসুবিধা হতে পারে।
৩। ডিভাইসের ওয়াট
ওয়াট বেশী মানে ইলেক্ট্রিসিটি বিলও বেশী। তাই চটকদার বিজ্ঞাপনে না ভুলে এনার্জি রেটিং দেখে ডিভাইস কিনুন।
৪। পাওয়ার কাট ফিচার
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য এই ফিচারটি অনেক উপকারী। অনেক ডিভাইসই নির্ধারিত তাপমাত্রায় পৌছে গেলে স্বয়ক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এতে অপ্রয়োজনে অতিরিক্ত বিল আসে না।
৫। ডিভাইসের আলো
রুম হিটার চালু থাকা অবস্থায় আলো জ্বলে। যদি আলোর তীব্রতা বেশী হয় তাহলে রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তাই আলো কম হয় এমন ডিভাইস পছন্দ করা ঠিক হবে।
৬। ডিভাইসের সেফটি গ্রিল
যে কোন ইলেকট্রিক ডিভাইস কেনার সময় তার সেফটি নিয়ে সচেতন থাকা জরুরী। তাই রুম হিটার কেনার সময় এর সেফটি গ্রিল দেখে কেনা উচিত যাতে আপনার বাড়ি ছোট শিশু এবং পোষা প্রাণী নিরাপদ থাকে।

রুম হিটার ব্যবহারে সতর্কতা
প্রচন্ড শীতে রুম হিটার ঘরে আরামদায়ক উষ্ণতা তৈরি করতে খুবই উপকারী। কিন্তু এই ডিভাইসটির যে কেবল শুধু উপকারীতা আছে তা নয়, এর কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। তাই রুম হিটার ব্যবহারের সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী। চলুন দেখি সেগুলো কি-
১। রুম হিটারে যে গরম বাতাস তৈরি হয় তা ঘরের আদ্রতা শুষে নিতে পারে। এমনকি ঘরের অক্সিজেন লেভেলও কমিয়ে দিতে পারে। এই কারনে যাদের হাঁপানি বা অন্য কোন শ্বাসতন্ত্রের রোগ আছে তাদের রুম হিটার ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
২। ঘর গরম করার জন্য রুম হিটার গরম বাতাস বের করে আর এই গরম বাতাস আপনার ত্বককে রুক্ষ ও শুষ্ক করে তুলতে পারে। এমনিতেই শীতে ত্বক শুষ্ক হয় তার উপর রুম হিটারের গরম বাতাস আপনার ত্বক মারাত্বক রকম শুষ্ক হতে পারে।
৩। ঘরের বাতাসে অক্সিজেন ও আদ্রতা কম হওয়ার কারনে মাথাব্যথা, অনিদ্রার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও যাদের এলার্জির সমস্যা আছে তাদের জন্যেও রুম হিটার ক্ষতিকর।
৪। শীত যতই বেশী লাগুক, রুম হিটারের একেবারে পাশে বসা থেকে বিরত থাকুন। শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা থাকলে বা হাঁপানি থাকলে হিটার থেকে অবশ্যই দূরত্ব বজায় রাখুন। এছাড়াও পরিবারে কারো যদি সাইনাস ও ব্রংকাইটিসের সমস্যা থাকে তাহলেই হিটার ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে।
কোথায় পাবেন রুম হিটার?
দেশের যেকোন বাজারে এবং অনলাইন মার্কেটেও এখন বেশ ভালো মানের রুম হিটার পাওয়া যাচ্ছে। দাম এবং ফিচারের সাথে মিল রেখে আপনার পছন্দের হিটারটি বেছে নিতে পারেন।
দেশীও ব্র্যান্ডের মধ্যে ওয়াল্টন, ভিশনের ভালো রুম হিটার রয়েছে। আর বিদেশী ব্র্যান্ডের মধ্যে শাওমি, বাসাস, মিয়াকো, নোভা ইত্যাদি ব্র্যান্ডের রুম হিটার বাজারে সহজলভ্য। এগুলোর মধ্যে শাওমি রুম হিটার সবচেয়ে জনপ্রিয়।
GIPHY App Key not set. Please check settings