in , ,

CryCry

স্ক্রিন টাইম: ভয়ানক এক আসক্তির নাম

স্ক্রিন টাইম: ১ম পর্ব

Screen-Time

প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল এই যুগে আমরা নির্ভরশীলতাকে ছাড়িয়ে আরো একধাপ ভেতরে চলে গেছি। এখন এমন একটা পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে যে আমরা আগের স্বাভাবিক জীবনযাপনও আর করতে পারছি না। বর্তমানে যে বিষয়টা সবচেয়ে সাংঘাতিক হয়ে পড়েছে তা হল স্ক্রিন টাইম। ছোট থেকে শুরু করে বয়স্ক পর্যন্ত আমাদের প্রায় সকলেরই স্ক্রিন টাইম ভয়ানক হারে বেড়ে গেছে। এমনকি স্ক্রিন টাইম, এক ভয়ানক আসক্তির নাম হয়ে গেছে। আমাদের দেশে এখনো এই বিষয়ে তেমন কোন আলোচনা হচ্ছে না তবে আমাদের দেশেও স্ক্রিনে আসক্ত ব্যক্তির সংখ্যা নেহাত কম নয়। আর সে সংখ্যা বর্তমানে আশংকাজনকভাবে বেড়েই চলেছে। তাই এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আলোচনা হওয়া জরুরী।  

স্ক্রিন টাইম কি?

স্মার্টফোন, কম্পিউটার, টেলিভিশন বা ভিডিও গেম ইত্যাদির মতো স্ক্রিন সহ একটি ডিভাইস ব্যবহার করে ব্যয় করা সময়ের পরিমাণকেই স্ক্রিন টাইম বলে। নতুন এই ধারণাটি ডিজিটাল মিডিয়ার ব্যবহার এবং মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য ধারণাগুলোর সাথে উল্লেখযোগ্য গবেষণার অধীনে রয়েছে। স্ক্রীন টাইম শিশুর বিকাশে সরাসরি মানসিক ও শারীরিক ক্ষতির সাথে সম্পর্কযুক্ত। স্ক্রিন টাইমের প্রভাব মানব জীবনে ইতিবাচক হবে নাকি নেতিবাচক তা এর বিষয়বস্তু এবং ব্যবহারের মাত্রার উপর নির্ভর করে। তবে বিষয়বস্তু যেমনই হোক, ব্যবহারের মাত্রা অতিরিক্ত হলে তা যে কোন বয়সের জন্যই মারাত্বক ক্ষতিকর হতে পারে।

এখন এমন একটা পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে যে আমরা আগের স্বাভাবিক জীবনযাপনও আর করতে পারছি না। বর্তমানে যে বিষয়টা সবচেয়ে সাংঘাতিক হয়ে পড়েছে তা হল স্ক্রিন টাইম। ছোট থেকে শুরু করে বয়স্ক পর্যন্ত আমাদের প্রায় সকলেরই স্ক্রিন টাইম ভয়ানক হারে বেড়ে গেছে। এমনকি স্ক্রিন টাইম, এক ভয়ানক আসক্তির নাম হয়ে গেছে।

স্ক্রিন টাইম কখন আসক্তিতে রূপ নেয়?

স্ক্রিন যুক্ত বিভিন্ন ডিভাইস আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজে সর্বদা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে ডিভাইস বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে তা হল স্মার্টফোন। এছাড়াও টিভি, ট্যাব, ভিডিও গেম, ল্যাপটপ ইত্যাদি ডিভাইসের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এই সমস্ত স্ক্রিন ভিত্তিক ডিভাইসে যখন মানুষ কোন প্রকার কারণ ছাড়াই দিনের একটা বড় সময় নিয়মিত ব্যয় করতে থাকে এবং স্ক্রিন ব্যবহারের সুযোগ না পেলে অসস্তি বোধ করে তখনি তাকে আমরা আসক্তি বলে থাকি।

স্ক্রিন টাইম আসক্তিতে রূপ নিলে কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে?

সারাদিনে প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে অল্প সময়ের জন্য এই সব ডিভাইস ব্যবহার করলে তেমন কোন ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু যদি মাত্রার চেয়ে বেশী হয়ে যায় তাহলে শারীরিক ও মানসিক মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে। চলুন দেখি সেগুলো কি?

১। ঘুমের সমস্যা

অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম সবার আগে যে ক্ষতিটা করে তা হল আমাদের ঘুম কমিয়ে দেয়। আমাদের মধ্যে অনেকেই বিশেষ করে তরুনরা বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় রাতে অনেক বেশী সময় কাটায়। ফলে ধীরে ধীরে রাতের ঘুম কমতে থাকে এবং এক সময় রাতে ঘুম কম হওয়ার বা না হওয়ার সমস্যা তৈরি হয়ে যায়। স্ক্রিন থেকে আসা আলোক রস্মি আমাদের মস্তিস্কের উপর গভীর চাপ সৃষ্টি করে যেটা পরবর্তিতে নানাবিধ শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে পারে।

২। চোখের সমস্যা

চোখ আমাদের দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন অংগগুলোর একটি। স্ক্রিন যুক্ত ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের এই অংগটিকে খুব দ্রুত নষ্ট করতে পারে। মোবাইল, ট্যাব, বা ল্যাপটপ ইত্যাদি থেকে নির্গত আলো চোখের উপর অনেক বেশী চাপ তৈরি করে। ফলে চোখের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

৩। মানসিক চাপ ও উদ্বেক বৃদ্ধি

বিভিন্ন ধরনের সোস্যাল মিডিয়ায় অনেক সময় একই খবর নানাভাবে বার বার উপস্থপিত হতে থাকে। এই সব খবরের মধ্যে অনেক নেতিবাচক বা ভিন্ন ধরনের খবর থাকে যেমন কারো মৃত্যুর খবর, দুর্ঘটনার খবর যা বার বার দেখতে বা পড়তে থাকলে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বৃদ্ধি পায়। মানুষের মধ্যে নেতিবাচক চিন্তা ও অস্থিরতা বেড়ে যায়।

৪। কাজে মনোযোগের অভাব

স্ক্রিন টাইম যখন অনেক বেড়ে যায় তখন ঐ মানুষটির স্বাভাবিক কাজে মনোযোগের ঘাটতি দেখা যায়। এই পরিস্থিতিতে কোন কাজে ফোকাস করা কঠিন হয় পড়ে। বিশেষ করে স্ক্রিন যখন আসক্তিতে পরিনত হয় তখন সাধারন প্রতিদিনের কাজগুলোও বিঘ্নিত হতে থাকে। পড়ালেখা থেকে শুরু করে অফিস বা সাংসারিক কাজ সবকিছুই এলোমেলো হতে থাকে। স্ক্রিন টাইম আমাদের দেশেও ধীরে ধীরে এক ভয়ানক আসক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনই যদি একে নিয়ে সচেতনতা তৈরি না করা হয় তবে সামনের দিনগুলো হবে আরো ভয়াবহ। দুঃখের বিষয় হল আজকাল বড়দের পাশাপাশি শিশুদের মধ্যেও স্ক্রিনে আসক্তি অনেক বেশী বেড়ে গিয়েছে। এমনও দেখা যায় যে, শিশু এখনো স্কুলেই ভর্তি হয় নি কিন্তু দিনের দীর্ঘ সময় সে মোবাইল, ট্যাব ইত্যাদিতে ইউটিউব, বিভিন্ন গেম অথবা টিভি দেখে সময় কাটাচ্ছে। তাই আসুন সচেতন হই, নিজে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের এই ভয়াল নেশা থেকে মুক্ত রাখি।

স্ক্রিন টাইম সম্পর্কে ধারাবাহিক লেখার আজ প্রথম পর্ব। পরবর্তী লেখা পড়তে আমাদের সাথে থাকুন।

What do you think?

Written by সানজিদা আলম

একজন ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটার। টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, প্রোডাক্ট রিভিউ এবং ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। লেখালেখির পাশাপাশি ভালোবাসি পড়তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

জেঁকে আসছে শীত, রুম হিটারের খোজ নিয়েছেন তো?

Screen-Time-Addiction

সন্তান অতিমাত্রায় স্ক্রিনে আসক্ত হলে করণীয় কী