in ,

৩০ এর পরে মেটাবলিজম বাড়ানোর দুর্দান্ত কিছু উপায়

মেটাবলিজম বৃদ্ধির উপায়
মেটাবলিজম বৃদ্ধির উপায়

ওজন কমানো এমন একটি প্রক্রিয়া যা নানা রকম বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হয় আর এর মধ্যে অন্যতম হল মেটাবলিজম রেট। আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে মেটাবলিজম রেট ধীরে ধীরে কমতে থাকে। যার কারনে ওজন বাড়তে থাকে এবং এনার্জি লেভেল কমতে থাকে। যায়হোক, ভয়ের কিছু নেই। মেটাবলিজম রেট বাড়ানোর অনেক সহজ ও কার্যকর উপায় আছে। এমনকি আপনার বয়স যদি ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যেও হয় তাহলেও মেটাবলিজম বাড়াতে পারবেন। আপনার জীবনযাত্রায় সামান্য কিছু পরিবর্তন, দৈনন্দিন রুটিনে কিছু সহজ প্র্যাকটিস অন্তর্ভূক্ত করে আপনি আপনার এনার্জি  লেভেলকে অনেক বেশী বাড়িয়ে নিতে পারবেন এবং আপনার ওজনও নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন।

৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সে এসে মেটাবলিজম বাড়ানোর ১০টি কার্যকর ও সহজ উপায়ঃ

১। স্ট্রেংথ ট্রেনিংকে অগ্রাধিকার দিন

আপনার বয়স বাড়ার সাথে সাথে আপনার পেশীর শক্তি স্বাভাবিকভাবেই হ্রাস পায়, যা আপনার মেটাবলিজমকে ধীর গতির করে দিতে পারে। তাই প্রতিদিনের রুটিনে স্ট্রেংথ ট্রেনিং ব্যায়াম রাখা উচিত । কারন এতে পেশি শক্তি ফিরে পাবে এবং ধীরে ধীরে মেটাবলিজম রেট বাড়তে থাকবে। চর্বিহীন শক্তিশালি পেশী তৈরি করতে এবং তা ধরে রাখতে স্কোয়াট, লাঞ্জ এবং পুশ-আপের মতো ওজন বহন করার ব্যায়ামগুলো নিয়মিত করতে পারেন।

২। হাইড্রেটেড থাকুন

একটি স্বাস্থ্যকর মেটাবলিজম রেট বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। কারণ ডিহাইড্রেশন, হজম এবং ক্যালোরি বার্ন সহ শারীরিক বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপকে ধীর গতির করে দিতে পারে। তাই হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে ও মেটাবলিজম রেটকে বাড়াতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে। এছাড়াও তাজা ফলের জুসের পাশাপাশী তরল খাবার পর্যাপ্ত পরিমানে খেতে হবে।

স্ট্রেংথ ট্রেনিং, সঠিক হাইড্রেশন, পুষ্টিকর খাবার, ভালো ঘুম এবং একটিভ থাকার মাধ্যমে আপনি কার্যকরভাবে আপনার এনার্জি বার্ন করতে পারেন এবং ৩০ এর পরেও স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখতে পারবেন। মনে রাখবেন ইতিবাচক পরিবর্তনের কোন পারফেক্ট বয়স নেই, তাই এখুনি ভালো থাকা শুরু করুন।

৩। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান

কার্বোহাইড্রেট এবং চর্বির তুলনায় প্রোটিনের একটি হায়ার থার্মিক প্রভাব রয়েছে, যার অর্থ হল আপনার শরীর প্রোটিন হজম করতে অনেক বেশি শক্তি ব্যয় করে। তাই আপনার মেটাবলিজমকে প্রাকৃতিকভাবে বৃদ্ধি করতে আপনার খাবারে মুরগির মাংস, মাছ, টোফু এবং অন্যান্য চর্বিহীন প্রোটিন অন্তর্ভুক্ত করুন।   

৪। খাবার এড়িয়ে যাবেন না

ওজন কমানোর যুদ্ধে এই ভুলটা অনেকেই করে। মনে করে যে কোন এক বেলা খাবার না খেলেই হয়ত সহজে ওজন কমে যাবে। কিন্তু বিষয়টা এতটাও সহজ না। বরং খাবার এড়িয়ে যাওয়ার অর্থ হল আপনার শরীরকে সংকেত দেয়া যে আপনার মেটাবলিজমকে ধীর করতে হবে কারণ শক্তি সংরক্ষণ করতে হবে। তাই নিয়মিত, সুষম খাবার গ্রহন করুন এবং সারা দিন আপনার মেটাবলিজম ক্রিয়াকে সক্রিয় রাখতে স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস গ্রহন করুন।

৫। যথেষ্ট ঘুম প্রয়োজন

একটি স্বাস্থ্যকর মেটাবলিজমর রেটের জন্য মানসম্পন্ন ঘুম অপরিহার্য। ঘুমের অভাব হরমোনের ভারসাম্য ব্যাহত করতে পারে এবং ওজন বাড়াতে পারে। আপনার শরীরের মেটাবলিক প্রসেসকে সাপোর্ট করার জন্য প্রতি রাতে ৭ থেকে ৯ ঘন্টা বিশ্রাম ও ঘুম নিশ্চিত করুন।

৬। হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং (HIIT) অন্তর্ভুক্ত করুন

HIIT ওয়ার্কআউটগুলো হল ভারী ব্যায়ামের সংক্ষিপ্ত রূপ। এই ধরনের ব্যায়ামগুলোতে নির্দিষ্ট সময় পর পর বিশ্রাম নেয়া হয়। এই ওয়ার্কআউটগুলো শুধুমাত্র ক্যালোরি পোড়ায় না বরং ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ধরে আপনার বিপাকীয় হারও বাড়িয়ে দেয়।   

৭। আপনার খাবারে কিছু মশলা যোগ করুন

কিছু মশলা, যেমন লাল মরিচ এবং হলুদে এমন কিছু যৌগ থাকে যা সাময়িকভাবে আপনার বিপাককে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই আপনার খাবারে এই মশলাগুলো যোগ করা উচিত। কারণ এগুলো অল্প হলেও আপনার মেটাবলিজম রেট বাড়াবে এবং আপনার এনার্জি বার্নের উপর একটি ছোট কিন্তু লক্ষণীয় প্রভাব ফেলবে।

৮। সারাদিন সক্রিয় থাকুন

সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা, অল্প হাঁটা বা কাজের বিরতিতে চট জলদি কিছু ব্যায়ামকে আপনার দৈনন্দিন রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করে নিন। এমনকি ছোট ছোট মুভমেন্টও আপনার সারাদিনের কাজের ফাঁকে চালিয়ে যেতে পারেন যাতে মেটাবলিজম রেট বাড়তে পারে।

৯। স্ট্রেস কম করুন

দীর্ঘস্থায়ী চাপ হরমোনের ভারসাম্যহীনতার দিকে পরিচালিত করতে পারে যা আপনার মেটাবলিজমকে ধীর করে দেয়। আপনার বিপাক নিয়ন্ত্রণে রাখতে মেডিটেশন, গভীর শ্বাস বা ইয়োগার মতো স্ট্রেস-কমানোর কৌশলগুলো অনুশীলন করুন।

১০। সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকুন

আপনার মেটাবলিজমকে বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সামঞ্জস্যতা গুরুত্বপূর্ণ। উপরে আলোচিত উপায়গুলো আপনার দৈনন্দিন রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করুন এবং দীর্ঘস্থায়ী ফলাফল পেতে সময়ের সাথে সাথে এই অনুশীলনগুলো চালিয়ে যেতে থাকুন।

পরিশেষে, এটা ঠিক যে বয়সের সাথে সাথে আমাদের মেটাবলিজম রেট কমতে থাকে তবে একে একটিভ ও এনার্জেটিক রাখার অনেক রকম উপায় রয়েছে। স্ট্রেংথ ট্রেনিং, সঠিক হাইড্রেশন, পুষ্টিকর খাবার, ভালো ঘুম এবং একটিভ থাকার মাধ্যমে আপনি কার্যকরভাবে আপনার এনার্জি বার্ন করতে পারেন এবং ৩০ এর পরেও স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখতে পারবেন। মনে রাখবেন ইতিবাচক পরিবর্তনের কোন পারফেক্ট বয়স নেই, তাই এখুনি ভালো থাকা শুরু করুন।

What do you think?

Written by সানজিদা আলম

একজন ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটার। টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, প্রোডাক্ট রিভিউ এবং ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। লেখালেখির পাশাপাশি ভালোবাসি পড়তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

Super food available in Bangladesh

দেশে সহজলভ্য সুপার ফুড ও তাদের উপকারিতা

green tea benefits

গ্রিন টির উপকারিতা এবং সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি