ঠোঁট আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই ঠোঁটকে সাজাতে নানান রকমের লিপস্টিক, লিপবাম ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এগুলো আমদের ঠোঁটকে রুক্ষ করে তোলে। আবার শীতের কারনেও অনেকের ঠোঁট ফেটে যায়, এ ধরনের সমস্যা থেকে কি করে ঘরোয়া উপায়ে মুক্তি পেতে পারেন তাই নিয়ে আমদের আজকের লেখা।
কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের নাম এবং ব্যবহার নিচে দেয়া হলো, যেগুলো আপনার ঠোঁটকে ভালো রাখবে।
মধু: ত্বক হোক বা ঠোঁট, সবকিছুরই যেকোনো সমস্যা সমাধানে মধুর কথা প্রথমেই আসে। এটি আমাদের ঠোঁটকে নরম, মসৃণ এবং গোলাপী করে তোলে। এতে রয়েছে গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ, ম্যান্টোজ, অ্যামিনো অ্যাসিড, এনজাইম এবং অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। এই উপাদানগুলো আমাদের ঠোঁটের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মধুর ব্যবহার:
- আপনি প্রতিদিন ঠোঁটে মধু ম্যাসাজ করতে পারেন।
- ১ টেবিল চামচ মধুর সাথে ১ চা চামচ লেবুর রস, ২ চা চামচ মধু ও কয়েক ফোটা গোলাপ জল মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
- আবার ১ চা চামচ মধুর সাথে ১ চা চামচ অলিভ অয়েল ও ২ চা চামচ চিনি মিশিয়েও প্যাক বানাতে পারেন।এই প্যাকটি ঠোঁটে ব্যবহার করে ৩ – ৪ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপর ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
শসা: এটি ঠোঁটের জন্য খুবই সহায়ক। এটি আমাদের ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে। এটি শীতকালে আমাদের ঠোঁটকে আর্দ্র রাখে। এতে রয়েছে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৫, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস এবং আরও অনেক ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। এতে এমন কোনো উপাদান নেই যা আমাদের জন্য ক্ষতিকর।
শসার ব্যবহার:
- শসার টুকরো ঠোঁটে ম্যাসাজ করতে পারেন। সেজন্য একটি শসার টুকরো নিয়ে ৫-৬ মিনিট ধরে ঠোঁটে ম্যাসাজ করুন। এটি আপনার ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করবে।
- শসার সাথে গ্লিসারিন মিশিয়ে স্ক্রাব বানিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। সেজন্য প্রথমে একটি পাত্রে ২ চা চামচ শসার রস ও কয়েক ফোটা গ্লিসারিন নিন। তারপর এ দুটি উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করুন। এই মিস্রনটি কিছুক্ষণ ঠোঁটে স্ক্রাব করে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এটি ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করবে।
- ২ চা চামচ শসার রসের সাথে কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
গোলাপ: ঠোঁটের যত্নে এটি একটি খুব বিখ্যাত ভেষজ উপাদান। আমরা সবাই এর সাথে পরিচিত। গোলাপের গন্ধে যেমন মন ভরে যায়, তেমনি এর ব্যবহার ত্বক,ঠোঁটের সমস্ত সমস্যাও দূর করবে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি যা ঠোঁটের যত্নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গোলাপের ব্যবহার:
- গোলাপের পাপড়ির রস বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। সেজন্য ১ কাপ গোলাপের পাপড়ি নিন। এর রস তৈরি করুন। তারপর এই রস আপনার ঠোঁটে লাগান। কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। তারপর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন এই রসটি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। এটি আপনার ঠোঁটকে গোলাপি করে তুলবে।
- গোলাপের পাপড়ির সাথে মধু মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। তাই একটি পাত্রে ২ চা চামচ গোলাপের পাপড়ি পেস্ট এবং ১ চা চামচ মধু নিন। ভালো করে মিশিয়ে নিন। আপনার ঠোঁটে লাগান। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন এবং ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এটিও আপনার ঠোঁটকে গোলাপি করে তুলবে।
- গোলাপের সাথে দুধ,মধু, গ্লিসারিন মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। কিছু গোলাপের পাপড়ি সামান্য দুধে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সেই দুধে কিছু মধু ও গ্লিসারিন মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন এবং ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এটি ব্যবহারের পর আপনার ঠোঁট আগের থেকে অনেক বেশি সুন্দর হবে।
পাকা কলা
পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কলা ত্বকের জন্য যেমন ভালো তেমনি ঠোঁটের জন্যও উপকারী। এতে রয়েছে পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স ইত্যাদি অনেক কিছু। এগুলোর সবই আমাদের ঠোঁটের জন্য খুব উপকারী।
কলার ব্যবহার:
- কলার সাথে টকদই মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। ১ চা চামচ পাকা কলার পেস্ট এবং ১ চা চামচ টক দই নিন। ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর এটি আপনার ঠোঁটে লাগান। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন এবং ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এটির নিয়মিত ব্যবহারে ঠোঁটের কালো দাগ সহজেই দূর হবে।
- মধুর সাথে কলা : ১ টেবিল চামচ পাকা কলার পেস্ট এবং ২ চা চামচ মধু নিন। ভালো করে মিশিয়ে নিন। এটি আপনার ঠোঁটে লাগান। ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন এবং তারপরে ভালভাবে ধুয়ে ফেলুন।
উপরের সব প্রাকৃতিক উপাদান আমাদের সবার ঘরেই রয়েছে। কেমিক্যাল মুক্ত, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে স্বাস্থ্যকর ঠোঁট পেতে খুব বেশি আয়োজনেরও প্রয়োজন নেই। তাহলে আর দেরি কিসের? ঘরে বসেই সুন্দর, গোলাপি ঠোঁট পেতে উপরের নিয়মে আজই ব্যবহার শুরু করুন।
Thanks for this useful article.
thanks
nice
চুল গজানোর তেলের নাম