in

LoveLove CuteCute OMGOMG

শীতে ঠোঁট ভালো রাখার কার্যকরী টিপস

Lip-Balm-Lip-Therapy

শীতের হাওয়া সাড়া দেয়া মাত্রই সব কিছু শুষ্ক হতে শুরু করে। ঝরে পড়ে গাছের পাতা-ও। আর ঠোঁট ফাটা তো নিত্যদিনের সমস্যা৷ শুধু ঠোঁট ফেটে যাওয়া-ই নয়, ঠোঁট নিয়ে আরো বিভিন্ন রকম বাজে পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় শীতকালে। আজ আমরা এই লেখা থেকে শীতকালে ঠোঁটকে সুরক্ষিত রাখার ১১ টি দারুন উপায় সম্পর্কে জানব।

১. ভ্যাসলিন ব্যবহার

ঠোঁট ফেটে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিলে আর যা-ই করুন না কেন, প্রতিটি দিনের তালিকায় অবশ্যই ভ্যাসলিন রাখবেন। কারণ, ভ্যাসলিন ব্যবহার করার ফলে আপনার ঠোঁট রুক্ষ বাতাসের স্পর্শ পাবে না। ফলে ঠোঁট ফাটার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিকে এড়ানো যাবে সহজেই৷ ভ্যাসলিনের ছোট একটি কৌটা সবসময় হাতের কাছে রাখবেন। ঘুমানোর আগে নিয়মিত ভ্যাসলিন ঠোঁটে মেখে ঘুমালে তা ভালো ফল দেয়।

২. লিপবাম ব্যবহার করুন

লিপবাম ব্যবহার করার ফলে ঠোঁটকে ফেটে যাওয়া থেকে রক্ষা করার পাশাপাশি, ঠোঁট মসৃন-ও করা যায়। অনেকেই ঠোঁটে সবসময় লিপস্টিক ব্যবহার করেন। তবে এটা শীতের সময়ে অবশ্যই এড়ানো উচিত। একান্ত প্রয়োজনে ময়েশ্চারাইজার যুক্ত লিপস্টিক ব্যবহার করতে পারেন। এটা ঠোঁটকে রুক্ষ করে তোলে না।

সবাই-ই ঠোঁটে শীতের সময়ে লিপবাম ব্যবহার করতে পারবেন। এতে, ঠোঁট সুন্দর থাকবে। শীতে যখনই অনুভব করবেন যে, ঠোঁট একটু রুক্ষ লাগছে, তখনই লিপবাম ব্যবহার করুন। সবসময় হাতের কাছে, পকেটে বা ব্যাগে লিপবাম রাখার চেষ্টা করুন।

৩. নিয়মিত ঠোঁট স্ক্রাব করুন

ঠোঁট স্ক্রাব করার জন্য আপনি ঘরোয়া উপাদান গুলোকেই ব্যবহার করতে পারবেন। ঠোঁট এর মসৃনতা বজায় রাখার জন্য যেমন ঠোঁট স্ক্রাব করা জরুরি, তেমনি ঠোঁটের মৃত কোষ গুলো দূর করতে স্ক্রাবিং সহায়তা করে।

ঠোঁট স্ক্রাব করার জন্য প্রথমে একটি চামচে সামান্য চিনি নিন। এরপর হাতের আঙুলে তা নিয়ে আলতো ভাবে ঠোঁটে ঘষুন। খুব জোরে ঘষা যাবে না। এরকম করে অন্তন ৫ মিনিট ঘষে ঠান্ডা পানি দিয়ে ঠোঁট ধুয়ে ফেলুন। অতঃপর লিপবাম বা ভ্যাসলিন ব্যবহার করুন। সপ্তাহে অন্তত তিনবার এই নিয়ম পালন করুন। এতে অল্প কদিনের মাথায় ঠোঁট হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত।

৪. মধুর ব্যবহার

মধু খাওয়ার জন্য, বা ত্বকের যেকোনো যত্নেই ব্যবহার করা হয়। তবে, আপনি যদি ঠোঁটকে গোলাপী ও মসৃন রাখতে চান, তাহলে মধু ব্যবহার করতে পারেন। শুধু মধুর প্রলেপ দিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে পারেন। অথবা, উপরোক্ত নিয়মে চিনির সাথে মধু নিয়ে স্ক্রাব করতে পারেন। এতে ঠোঁটকে মসৃন করা ও স্ক্রাবিং দুটোরই কাজ হয়ে যাবে।

৫. দুধের সরের ব্যবহার

রূপচর্চায় দুধের সর ব্যবহার করার বিষয়টি এখন সাধারন। ত্বকের যত্নে অহরহ ব্যবহৃত হয়। ঠোঁটের মৃত কোষ দূর করতে দুধের সর সহায়ক। এতে থাকা ল্যাকটিক এসিড (Lactic Acid) মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করার পাশাপাশি ঠোঁটের সজীবতা বজায় রাখে।

মৃত কোষ দূর হওয়ার ফলে ঠোঁটের রং সুন্দর হতে শুরু করে৷ দুধের সরের ব্যবহার সম্পর্কে জানতে দুধের সরে ত্বকের যত্ন কতটা যুক্তিযুক্ত লেখাটি পড়তে পারেন।

৬. লেবুর ব্যবহার

লেবুর ব্যবহারে ঠোঁট ভিটামিন সি এর ছোঁয়া পায়, ফলে তা হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। লেবুর রসের সাথে চিনি মিশিয়ে-ও স্ক্রাব করা যায়। আবার লেবুর রস ও মধু একত্রিত করে কিউব বক্সে করে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। পরে তা জমে গেলে, একটি কিউব নিয়ে ঠোঁটে আলতো ভাবে ৫ থেকে ৭ মিনিট করে ঘষতে পারেন। এটা আপনাকে আরামও যোগাবে।

তবে যদি ঠোঁট অনেকটা ফাটা থাকে বা চামড়া ওঠা থাকে, তাহলে তখন লেবুর ব্যবহার না করাই ভালো, এতে সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ প্রয়োজনে শুধু চিনি ব্যবহার করবেন।

৭. প্রচুর পানি পান

এই পয়েন্টটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পানি পান করলে তার পরশ আপনার ঠোঁটও পায়। ঠোঁট পানির পরশ পেলে সতেজ থাকবে, এটাই স্বাভাবিক।

৮. অলিভ অয়েল

নিয়মিত জলপাই তেল (Olive Oil) এর ব্যবহার শীতকালে আপনাকে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে। হাত, পা-সহ আপনি শরীরের যেকোনো স্থানে জলপাই তেল ব্যবহার করতে পারেন। ঠোঁটে অলিভ অয়েলের ব্যবহার ঠোঁট ফাটা ও চামড়া ওঠা থেকে মুক্তি দেয়। ঠোঁটের চামড়া উঠে গেলে অবশ্যই অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। এটা দ্রুত এই সমস্যা থেকে মুক্তি দেবে।

৯. গোলাপ জল

গোলাপ জল বা Rose Water হয়তো সবার বাড়িতেই থাকে। প্রতিদিন অন্তত ১ বার ঠোঁটে গোলাপ জল ব্যবহার করুন। অলিভ অয়েল নিয়ে তার সাথে সমপরিমাণ গোলাপ জল মিশিয়ে নিতে পারেন। ছোট কাঁচের বয়ামে করে তা রোদে রাখুন। ঘুমানোর আগে বা ঘুম থেকে উঠে এটা ঠোঁটে প্রয়োগ করতে পারেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ভালো ফলাফল পাবেন।

১০. জিব দিয়ে ঠোঁট না ভেজানো

ঠোঁট শুকিয়ে গেছে, অথচ হাতের কাছে কোনো লিপবাম বা ভ্যাসলিন নেই। এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে, অনেকেই দেখ যায় ঠোঁট জিহ্বা দিয়ে ভেজান। তবে এটা একেবারেই অনুচিত। এতে কাজ তো হয়ই-না, উল্টো ঠোঁটের ক্ষতি হয়।

১১. চামড়া না তোলা

ঠোঁটের চামড়া উঠে গেলে তা তুলে ফেলার অভ্যাস লক্ষ্যনীয় অনেকের মাঝেই। তবে, এতে ঠোঁট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বরং সেই উঠে যাওয়া চামড়ার উপরেই লিপবাম ব্যবহার করুন। এর ফলে একসময় চামড়া নরম হয়ে ঝরে যাবে।

সবশেষে, এসব নিয়ম গুলো মেমে চললে শীতের সময়টাতেও ঠোঁটকে সুস্থ ও সুন্দর রাখা সম্ভব৷ তাই, যদি শীতকালে ঠোঁটের যত্ন নিতে চান, অবশ্যই উপরের ১১ টি টিপস মেনে চলবেন। এরকম আরো লেখা পেতে অবশ্যই ব্লগ সাইটটি ফলো করে রাখবেন।

What do you think?

Written by বিবি মরিয়ম লাবণ্য

আসসালামু আলাইকুম। আমি বর্তমানে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ভোলা সরকারি কলেজে পড়াশোনা করছি। এর পাশাপাশি অনলাইনে একজন কনটেন্ট রাইটার ও ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

ইসলামে-মানসিক-শান্তি-লাভ

ইসলামে মানসিক শান্তি লাভের ৩টি সহজ উপায়

Oily-Skin-Care-in-Winter

শীতে তৈলাক্ত ত্বকের বিশেষ যত্ন