যদি আপনি এখনো নিজের স্কিন টাইপ কোনটি তা না জেনে থাকেন, তাহলে এই লেখাটি আপনারই জন্য।
বর্তমান সময়ে স্কিন হেলদি ও গ্লোয়িং রাখার জন্য প্রোডাক্টের অভাব নেই। তবে হ্যাঁ, সব প্রোডাক্ট কিন্তু সবার স্কিনের জন্য উপযোগী নয়। কেননা একেকটি প্রোডাক্ট একেক ধরণের স্কিনের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়ে থাকে। এখন একটু ভেবে বলুন তো, যদি আপনারা নিজেদের স্কিন টাইপ না জানেন, তাহলে কি এই প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার করে কোনো উপকার পেতে পারবেন? একদমই নয়! তাই আজকের ফিচারে আপনাদের জানাবো কিভাবে আপনারা খুব সহজে মাত্র কয়েক মিনিটেই নিজের স্কিন টাইপ বুঝতে পারবেন সে সম্পর্কে।
বিভিন্ন স্কিনটাইপ সম্পর্কে জানুন
স্কিন টাইপ বলতে অনেকে শুধুমাত্র অয়েলি বা ড্রাই স্কিনকে বুঝে থাকেন, যা একটি ভুল ধারণা। সাধারণত মানুষের স্কিন ৫ ধরনের হয়ে থাকে। চলুন জেনে আসা যাক বিভিন্ন স্কিন টাইপের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে।
১। নরমাল স্কিন
নরমাল স্কিনে কোনো অতিরিক্ত ড্রাইনেস বা অয়েলিনেস থাকেনা। আবার এই স্কিনে সেভাবে কোনো অ্যালার্জি বা সেনসিটিভিটিও থাকেনা।
২। অয়েলি স্কিন
যখন স্কিনে সেবাম বা ন্যাচারাল অয়েলের প্রোডাকশন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে,তখন তাকে অয়েলি স্কিন বলা হয়। অতিরিক্ত তেলের কারণে এ ধরণের স্কিনে শাইনি বা চকচকে ভাব লক্ষ্য করা যায়। শুধু তাই নয়, অয়েলি স্কিনে ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস কিংবা অ্যাকনির সমস্যাও অনেক বেশি থাকে।
৩। ড্রাই স্কিন
ড্রাই স্কিনের বৈশিষ্ট্য অয়েলি স্কিনের একদম বিপরীত। এ ধরণের স্কিনে ন্যাচারাল অয়েলের প্রোডাকশন কম থাকায় রুক্ষতা ও টানটান ভাব বেশি থাকে।
৪। কম্বিনেশন স্কিন
কম্বিনেশন স্কিনে ড্রাই ও অয়েলি দুই ধরনের স্কিনের বৈশিষ্ট্যই বিদ্যমান থাকে। সাধারণত যাদের কম্বিনেশন স্কিন, তাদের কপাল, নাক ও থুতনির অংশ অয়েলি থাকলেও মুখের বাকি অংশে ড্রাইনেস দেখা যায়।
৫। সেনসিটিভ স্কিন
যদি কোনো স্কিনকেয়ার বা মেকআপ প্রোডাক্ট ব্যবহার করার পর স্কিনে অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন অর্থাৎ লালচে ভাব, চুলকানি বা র্যাশ দেখা যায়, তাহলে সে স্কিনকে সেনসিটিভ স্কিন হিসেবে ধরে নেয়া হয়।
নিজের স্কিন টাইপ বুঝার জন্য কী করবেন?
অনেকেই অভিযোগ করেন, ভালো কোয়ালিটির স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করার পরেও তাদের স্কিনে সমস্যার কোনো শেষ নেই। এর অন্যতম কারণ হলো স্কিন টাইপ না বুঝে প্রোডাক্ট ব্যবহার করা। যদি আপনারা নিজেদের স্কিন টাইপ অনুযায়ী প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন, তাহলে খুব তাড়াতাড়ি পজেটিভ চেঞ্জ দেখতে পাবেন। তাহলে চলুন এবার জেনে আসা যাক নিজের স্কিন টাইপ বুঝার সহজ দু’টো উপায় সম্পর্কে।
পদ্ধতি ১ (মুখ ধোয়ার পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে)
প্রথমেই নিজের পছন্দের যেকোনো মাইল্ড ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে দিন। তারপর মুখে কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহার না করে ২০-২৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার স্কিনের দিকে ভালোমতো লক্ষ্য করুন।
- যদি মনে হয় স্কিন টানটান হয়ে আছে এবং ড্রাই লাগছে, তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনার স্কিন টাইপ ড্রাই।
- যদি স্কিনে কোনো চকচকে ভাব বা অয়েলিনেস লক্ষ্য করেন, তাহলে আপনার স্কিন অয়েলি।
- যদি মুখের টি জোন অর্থাৎ কপাল, নাক ও থুতনির এরিয়ায় অয়েলিনেস ও বাকি অংশে ড্রাইনেস অনুভব করেন, তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনার স্কিন টাইপ কম্বিনেশন।
- যদি স্কিনে ড্রাইনেস বা অয়েলিনেস কিছুই অনুভূত না হয়, তাহলে আপনার স্কিন টাইপ নরমাল।
পদ্ধতি ২ (ব্লটিং পেপারের সাহায্যে)
যারা জানেন না তাদের জন্য বলছি, ব্লটিং পেপার আমাদের স্কিনের অতিরিক্ত অয়েল শুষে নিতে সাহায্য করে। যদি আপনার হাতের কাছে ব্লটিং পেপার থাকে, তাহলে আপনি খুব সহজেই সেটির সাহায্যে নিজের স্কিন টাইপ বুঝতে পারবেন। কিভাবে? শুরুতেই একটি ব্লটিং পেপার নিয়ে আপনার মুখের বিভিন্ন অংশে আলতো করে চেপে ধরুন। তারপর পেপারের দিকে লক্ষ্য করুন –
- যদি পেপারে শুষে নেয়া অয়েলের পরিমাণ বেশি হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে আপনার স্কিন টাইপ অয়েলি।
- যদি পেপারে অয়েলের উপস্থিতি সেভাবে না থাকে, তাহলে আপনি ড্রাই স্কিনের অধিকারী।
- যদি লক্ষ্য করেন ব্লটিং পেপার আপনার মুখের টি-জোন থেকে অয়েল অ্যাবজর্ব করেছে, কিন্তু মুখের অন্য কোনো এরিয়া থেকে সেভাবে করেনি, তাহলে আপনার স্কিনের ধরণ কম্বিনেশন।
এটুকুই ছিলো আজকের আলোচনা। এ দু’টো পদ্ধতির যেকোনো একটি অনুসরণ করলেই আপনারা নিজেদের স্কিনটাইপ বুঝতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী স্কিন কেয়ার করতে পারবেন।
GIPHY App Key not set. Please check settings