আপনার ত্বক কি শুষ্ক (ড্রাই স্কিন)? তাহলে শীতের শুষ্কতায় আরো বেহাল দশা হয়েছে নিশ্চয়? যাদের ত্বক শুষ্ক কেবল তারাই বোঝে শীতকালের শীতল বাতাস তাদের ত্বকের জন্য কতটা ক্ষতিকর। শীত এলেই শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বক নিত্য দিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে আমরা সর্বোচ্চ রকমের চেষ্টা করতে থাকি। তবুও আশানুরূপ ফলাফল সবসময় পাই না।
শীতে বাতাসের আদ্রতা কমে যায়, ফলে ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়ে, কুঁচকে যায়, মসৃনতা হারায় এমনকি চুলকানিও হতে পারে। তবে আপনি জানেন কি, শুষ্ক ত্বককে প্রানবন্ত করতে ঘরোয়া প্রতিকারের জুড়ি মেলা ভার। হ্যা, ঠিক শুনেছেন! খুব সহজলভ্য উপকরন দিয়ে ঘরোয়া প্রতিকারের মাধ্যমেই আপনার শুষ্ক ত্বককে কোমল, উজ্জ্বল, ও মসৃণ করা সম্ভব। চলুন সেই সব ঘরোয়া প্রতিকারগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক।
১। নারিকেল তেল ও মধু
নারিকেল তেল ও মধু দুটোই ত্বকের শুষ্কতা ও রুক্ষতা দূর করতে অবিশ্বাস্য কাজ করে। বিশেষকরে শীতকালে ত্বক যে স্বাভাবিক কোমলতা হারায় তা পুনরুদ্ধারে চমৎকার কাজ করে। এটা ব্যবহার করাও খুব সহজ। এই মাস্কটিতে হাইড্রেটিং ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় এটা ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
১ টেবিল চামচ পরিমান খাঁটি নারিকেল তেল ও সম পরিমান মধু একসাথে মিশিয়ে মুখ, ঘাড়, ও হাতে লাগিয়ে নিন। ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নারিকেল তেলের পরিবর্তে আপনি অলিভ অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন।
শীতে বাতাসের আদ্রতা কমে যায়, ফলে ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়ে, কুঁচকে যায়, মসৃনতা হারায় এমনকি চুলকানিও হতে পারে। তবে আপনি জানেন কি, শুষ্ক ত্বককে প্রানবন্ত করতে ঘরোয়া প্রতিকারের জুড়ি মেলা ভার। হ্যা, ঠিক শুনেছেন! খুব সহজলভ্য উপকরন দিয়ে ঘরোয়া প্রতিকারের মাধ্যমেই আপনার শুষ্ক ত্বককে কোমল, উজ্জ্বল, ও মসৃণ করা সম্ভব।
২। পাকা কলা ও মধু
ত্বকে শুষ্কতার কারনে যদি সংক্রমণ ও অ্যালার্জির উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে এই মাস্কটি আপনাকে দারুন উপকৃত করবে। এর ময়েশ্চারাইজিং ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান এই সংক্রমণ ও অ্যালার্জির উপসর্গগুলো কমিয়ে ত্বককে নরম করে ও কোমলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
১টি পাকা কলা ও ২ টেবিল চামচ মধু একসাথে মিশিয়ে পেষ্ট বানিয়ে নিন। এই পেষ্ট ত্বকে ২০-২৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন।
আপনার ত্বকে এই মাস্কটি সহনীয় কিনা জানার জন্য ত্বকের অল্প অংশে প্রথমে লাগিয়ে দেখুন।
৩। অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরা আমাদের দেশে খুবই পরিচিত একটি ছোট গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এটি যে কোন মাটিতে এবং যে আবহাওয়াতে হয়ে যায়। এই ছোট্ট গাছটির স্বাস্থ্য উপকারীতা অসীম। এই চুল এবং ত্বক উভয়ের জন্যই দারুন উপকারী। বিশ্বব্যাপী প্রায় সকল বিশেষজ্ঞরাই এর পুষ্টিগুনের ব্যাপারে একমত হয়েছেন।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
অ্যালোভেরার একটি পাতা নিন। সাবধানে পাতাটি থেকে জেল বের করে নিন। এই জেলটি সরাসরি আপনার মুখে লাগান। ২০-২৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। আপনি আপনার ত্বকে লক্ষ্যনীয় মাত্রার পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
৪। ডিমের কুসুম ও কাঠবাদামের তেল
ডিমের কুসুমের বেশীরভাগ অংশই চর্বি দিয়ে তৈরি তাই এটি চমৎকার ময়েশ্চারাইজিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে, বাদাম তেল ভিটামিন ই, মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, পটাসিয়াম, জিঙ্ক এবং অন্যান্য খনিজ এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ, যা ত্বকের যত্নে দারুন কাজ করে। তাই বিভিন্ন সৌন্দর্য পণ্যেও এই তেল ব্যবহার করা হয়।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
ডিমের কুসুম এবং বাদাম তেল একসাথে মিশিয়ে নিন। পা, কনুই, হাটু ও অন্যান্য শুষ্ক ও আক্রান্ত ত্বকে এটি সুন্দর করে লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষন পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ডিমের গন্ধ দূর করতে এতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস চেপে নিতে পারেন।
৫। পাকা পেঁপে
পাকা পেঁপেতে উচ্চ মাত্রায় ময়শ্চারাইজিং এবং ত্বক-উজ্জ্বলকারী উপাদান থাকে। এই এনজাইম-সমৃদ্ধ ফলটি পুষ্টিগুণে ভরপুর যা ত্বককে সুস্থ, পুষ্ট এবং উজ্জ্বল রাখতে দারুন কাজ করে। পেঁপে রোদে পোড়া দাগ এবং ত্বকের প্রদাহ প্রশমিত করতেও সাহায্য করে। এটি ত্বকের পোড়গুলো কমিয়ে দিতে পারে এবং পিগমেন্টেশনের উপরও কাজ করে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
এক টুকরো পাকা পেঁপের খোসা ও বীজ ছাড়িয়ে নিন। অল্প পানি দিয়ে ব্লেন্ড করুন। এবার এই পাল্পে একটি পরিস্কার তুলার বল ডুবিয়ে ত্বকে লাগান। কিছুক্ষন পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আপনার ত্বকের পরিবর্তন দেখে আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন।
আশাকরি এবার শীতে আপনার ত্বক আর রুক্ষ ও শুষ্ক থাকবে না। ঘরোয়া এইসব উপকরন ব্যবহারের মাধ্যেমে খুব সহজেই আপনার ত্বকের মসৃণতা ও উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে পারবেন। তবে উপরে উল্লেখিত ঘরোয়া মাস্কগুলো ব্যবহারের পাশাপাশি আপনার উচিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুমানো এবং প্রচুর পানি পান করা। তবেই আপনার ত্বক হবে প্রাণোচ্ছল।
GIPHY App Key not set. Please check settings