in

LoveLove

ইয়ারবাডস নাকি নেকব্যান্ডঃ কোনটি চাই

earbuds vs neckband

কিছুদিন আগে আমার ইয়ারবাডস নিয়ে একটি আর্টিকেল নিশ্চয়ই পড়েছেন। সেখানে আমি চেষ্টা করেছি ব্যাখ্যা করার জন্য যে, ইয়ারবাড এর কি কি সুবিধা এবং কি কি অসুবিধা রয়েছে। আমি সেখানে ইয়ারফোনের সাথে কিছুটা তুলনাও দেখিয়েছিলাম। আজকে আমি নিয়ে এলাম ইয়ারবাডস এবং নেকব্যান্ড এর মাঝে তুলনা নিয়ে একটি ছোট্ট আর্টকেল কোনটিতে আপনি কমফোর্ট সেটি এই আর্টিকেল পড়েই বুঝতে পারবেন আশা করছি। তো চলুন শুরু করা যাক।

ব্যাটারি ব্যাকআপ কোনটির কেমন

আমরা কোনো ডিজিটাল ডিভাইস কেনার আগে সর্বপ্রথম যেটি দেখি সেটি হচ্ছে চাজিং ব্যাটারি ব্যাকআপ। আমাদের আছে আসলেই ব্যাটারি ব্যাকআপটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে যদি ইয়ারবাডসের কথা বলি তবে মিড রেঞ্জের একটি ডিভাইসে চার্জ ব্যাকআপ পাবেন ৩ থেকে ৪ ঘন্টা পর্যন্ত। এবং বাডস কেস দিয়ে আপনি ৭-৮ বার চার্জ করতে পারবেন।

সেই হিসেবে বলা চলে  ২৫-৩০ ঘন্টার মতো ব্যাকাপ পাচ্ছেন একটি ইয়ারবাডস এবং ইয়ারবাডস কেস থেকে। যেটি মোটেও কম নয় কিন্তু। এখানে বলা বাহুল্য যে ইয়ারবাডস গুলো পকেট ফ্রেন্ডলি হয়, এই জন্য ব্যাটারি বেশি বড় দেয়া হয় না। আরেকটু বড় ব্যাটারি দিলে আরো বেশি ব্যাকাপ পেতাম আমরা হয়তো।

এবার আসি নেকব্যান্ড এর কাছে। আপনি যদি মিড রেঞ্জের কোনো ন্যাকব্যান্ড এর কথা বলেন, তবে ২০ ঘন্টার চেয়ে বেশি ব্যাকআপ পাবেন না। আপাত দৃষ্টিতে এটি কম মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে মোটেও ইয়ারবাডস থেকে কম নয়।

আসুন বুঝিয়ে বলি, আপনি ইয়ারবাডস ৩ ঘন্টা ব্যবহার করতে পারবেন সর্বোচ্চ। ধরুন আপনি অনলাইন ক্লাশে বসছেন। ৪ ঘন্টার ক্লাশ, এর মাঝে কিন্তু আপনাকে ইয়ারবাডস খুলে কেসে ঢুকিয়ে চার্জ করিয়ে নিতে হবে। এভাবে ৭/৮ বার চার্জ করতে আপনার সময় লাগবে ৬/৭ ঘন্টার মতো। এবার আপনি নিজেই হিসেব করে দেখুন কোনটির সুবিধা কেমন।

অন্যদিকে নেকব্যান্ড শুধু একবার চার্জ দিলেই কাজ শেষ! ২০ ঘন্টার মাঝে আর খুলাখুলির কারবার নেই। তাহলে চার্জের দিক থেকে কিন্তু এগিয়ে থাকলো নেকব্যান্ড।

কোনটি সহজে বহনযোগ্যঃ

এবার আসি পোর্টেবিলিটির দিক দিয়ে কোনটি সুবিধাজনক সে বিষয়ে। আমরা বেশির ভাগ সময়-ই ইয়ারবাডস কিংবা নেকব্যান্ড দুটিই ব্যবহার করে থাকি রুমের বাইরে। চলার পথে বা যানজটে বসে থাকা কালে সবচেয়ে বেশি এই ডিভাইস দুটি কাজে লাগে।

ইয়ারবাডস সাধারণত একটি কেস-এ  থাকে। যেখান থেকে মূলত চার্জ হয়। আপনাকে ইয়ারবাডস এবং কেস একসাথে চার্জ দিতে হয় না। আপনি চাইলেই গান শুনতে শুনতে কেসটি চার্জ দিয়ে নিতে পারেন।
অন্যদিকে নেকব্যান্ড চার্জিং টাইমে ব্যবহার কর‍তে পারবেন না। এটা একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
নেকব্যান্ড কাঁধে ঝুলানো থাকে। অনেক সময় রাস্তাঘাটে নেকব্যান্ড কাঁধে ঝুলিয়ে হাঁটা দেখতে একটু উইয়ার্ড লাগে। ব্যাটারি বড় থাকলে তো কাঁধ ব্যাথা পর্যন্ত হয়ে যায়। সারাক্ষন বুকের সামনে ঝুল ঝুল করতে থাকে। অনেকেই এ বিষয়টি পছন্দ করেন না।

অন্যদিকে ইয়ারবাডসে এই সমস্যাগুলো দেখতে পাই না। ছোট্ট পিচ্চি পিচ্চি দুইটি বাডস একটু দূর থেকে দেখাও যায় না ভালোমতো। রাস্তায় কারো চোখেও পরে না তেমন একটা। যখন ইচ্ছা টুস করে কেস এ ঢুকিয়ে নিতে পারেন। উইয়ার্ড লাগার কোনো সুযোগই তৈরি হয় না বাডস এ। এইদিক থেকে কিন্তু ইয়ারবাডস এগিয়ে থাকলো। ইয়ারবাডসে শুধু একটি সমস্যা দেখা দেয় যে, ছোট্ট বাডস দুটি টুস করে যদি কান থেকে খুলে পরে যায় তাহলেই আর খুজে পাওয়া যাবে না। অর্থাৎ ইয়ারবাডস হারানোর একটি ভয় থেকেই যায়। অন্যদিকে নেকব্যান্ড এর সাথে তার যুক্ত থাকে। যত কিছুই হোক না কেনো, হারানোর কোনো সুযোগ নেই এতে।

সাউন্ড কোয়ালিটির দিক দিয়ে কোনটি এগিয়েঃ

এবার আসি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায়। যেটার জন্য মূলত আমরা এই জাদুর বাক্সটি আথবা সাপ কিনি। হা হা! আই মিন ইয়ারবাডস এবং নেকব্যান্ডস কিনি।

একটা কথা প্রথমেই বলে নেই একটা সস্তা দামের সাধারণ ইয়ারফোন যে সাউন্ড পারফরম্যান্স দেয় সেখানে এসব ব্লুটুথ ডিভাইসে এমন পারফরম্যান্স পেতে আপনার খরচ করা লাগতে পারে কয়েকগুণ। কি অবাক হলেন তো?

হ্যা! অবাক হওয়ার মতোই কথা। শুধু যে ডিভাইস ভালো হলেই সাউন্ড ভালো দিবে এমনটা কিন্তু না। এর সাথে  প্রয়োজন সফটওয়্যার আপডেট। সফটওয়্যার আমাদের যে আউটপুট দিবে সেটিই আমরা পাব। ইয়ারফোনে আমরা যে সাউন্ডটা শুনি সেটা কনট্রোল করে আমাদের নিজেদের মোবাইলের প্রসেসর। কাজেই সাউন্ড কোয়ালিটি অবশ্যই ভালো হওয়ার কথা। অন্যদিকে এসব ব্লুটুথ ডিভাইস চলে তাদের নিজেদের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারে।

এখন তুলনামূলক আলোচনায় আসা যাক। একটি নেকব্যান্ড তৈরি করতে যে খরচ হয় তার থেকে তুলনামূলক বেশি খরচ হয় ইয়ারবাডস তৈরি করতে। ইয়ারবাডসের চিপগুলো ছোট ছোট এবং ব্যবহার করা হয় লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি, কাজেই বুঝতেই পারছেন। অন্যদিকে নেকব্যান্ড এ ব্যবহার করা হয় সাধারন মানের ব্যাটারি গুলো।

আমার অভিজ্ঞতায় বলতে পারি যে, একটি ২০০০ টাকা দামের নেকব্যান্ড যে কোয়ালিটি দেয় ওই একই কোয়ালিটি দিতে ইয়ারবাডস এ খরচ হবে ৩৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা। এর পিছনে অবশ্য কারণ আছে।যা আমি উপরে ব্যাখ্যা করলাম।

ইয়ারবাডস এ আবার আপনি স্মুথ সাউন্ড কোয়ালিটি পাবেন যদিও ব্যাজ কম দেয়। ব্যাজ লাভারদের জন্য মোটেও পছন্দ হবে না ইয়ারবাডস। অন্যদিকে ব্যাজ এর রাজা হলো ন্যাকব্যান্ড গুলো। অতোটা স্মুথ সাউন্ড না দিলেও ব্যাজ দিবে একদম ধুমধারাক্কা!

কোয়ালিটির দিক থেকে কে এগিয়ে থাকলো এইটা এবার আপনারাই বিচার করুন। এইটা আপনাদের হাতেই ছেড়ে দিলাম।

অনেক কিছু লিখে ফেলেছি। আজ আর লিখব না। আমি আছি এস এম কাফি। আবার হয়তো উপস্থিত হবো নতুন কোনো প্রয়োজনীয় আর্টকেল নিয়ে। আজ এখানেই থামি!

What do you think?

Written by এস এম কাফি

নটরডেম কলেজ, ব্যাচ-২২। ওয়ার্ডপ্রেসে দক্ষ্য, যেকোনো বিষয়ের উপর আর্টিকেল এবং ডকুমেন্টারি লিখতে পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

New Mothers' diet tips

নতুন মায়েদের জন্য পরিপূর্ন পুষ্টি নিশ্চিত করতে ডায়েট টিপস

how-effective-are-dietary-supplements-for-weight-loss

ওজন কমাতে ডায়েটরী সাপ্লিমেন্ট কতটা ফলপ্রসু?