হালের জনপ্রিয় পানীয় গ্রিন জুস বা সবুজ জুস সম্পর্কে এখন কমবেশী সবাই পরিচিত। স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিরা অনেকেই ইতোমধ্যে এই পানীয়কে নিজ নিজ খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেছেন। তবে যারা এখনো এই পানীয়টির সাথে পরিপূর্নভাবে পরিচয় লাভ করেননি তাদের জন্য আমরা ইতোমধ্যে এর উপকারিতা ও কিছু সতর্কতা নিয়ে আলোচনা করেছি। আর আজকে আমরা আলোচনা করব ঘরেই সুস্বাদু গ্রিন জুস তৈরির ৪টি সহজ রেসিপি নিয়ে। আপনি যদি প্রথমবারের মত এই জুসটি খাওয়া শুরু করতে চান তবে নিচে আলোচিত রেসিপিগুলো থেকে করতে পারেন।
১। সবুজ আপেল ও আদার জুস
উপকরণ
- দুটি লেবু খোসা ছাড়িয়ে ছোট টুকরো করে কাটা
- ২টি টাটকা সবুজ আপেল ছোট টুকরো করে কাটা
- ১টি টাটকা শশা ছোট টুকরো করে কাটা
- বাঁধাকপির ১টি কচি পাতা
- ২-৩ ইঞ্চি পরিমান আদা
- ৩ কাপ পানি
প্রস্তুত প্রনালী
১। একটি হাই-স্পিডের ব্লেন্ডারে লেবু, আপেল, শসা, আদা এবং পানি ভালভাবে ব্লেন্ড না হওয়া পর্যন্ত মিক্স করুন। বাঁধাকপির পাতা দিন এবং হাই স্পিডে ব্লেন্ড করুন যতক্ষণ না সবজি ও ফলগুলো সম্পূর্ণরূপে ব্লেন্ড হয়ে তরলে রুপ নেয়।
২। ব্লেন্ড করা সবজি ও ফলগুলো একটি ছাকনিতে ছেঁকে নিন। এই জুসটি ছাকার জন্য আপনি পরিস্কার পাতলা কাপড়ও ব্যবহার করতে পারেন। জুস ভালোভাবে ছাঁকার জন্য একটি চামচ বা স্প্যাটুলা দিয়ে আলতো করে চাপ দিন।
৩। একটি বড় কাচের জগে বা বোতলে জুস ঢেলে রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করুন। জুস ২-৩ দিন ভালো থাকবে। এখন আপনার সুবিধামত সময়ে পরিমানমত পান করুন।
২। পালং শাক ও সজনে পাতার জুস
উপকরণ
১। এক মুঠো সজনে পাতা
২। এক মুঠো পালং শাক
৩। কয়েকটি আমলকী ছাড়িয়ে নেয়া
৪। আদা ১ ইঞ্চি পরিমান
৫। এক মুঠো ধনে পাতা
৬। ১টা লেবু
৭। ১ চা চামচ জিরা
প্রস্তুত প্রনালী
১। সব উপকরনগুলো ভালো করে ধুয়ে কেটে নিন। একটি ব্লেন্ডারে লেবু বাদে সব উপকরণ ও পরিমানমত পানি দিয়ে ব্লেন্ড করুন।
২। থেমে থেমে কিছুটা সময় নিয়ে ব্লেন্ড করুন যাতে শাক পাতা আস্ত না থেকে যায়। ভালোভাবে ব্লেন্ড করা হয়ে গেলে জুসটি একটি ছাকনি বা পাতলা কাপড় দিয়ে ছেঁকে নিন। চামুচ দিয়ে নেড়ে নেড়ে জুস ভালোভাবে বের করে নিয়ে অবশিষ্ট অংশটুকু ফেলে দিন।
৩। জুসে লেবুর রস মিশিয়ে নিন। চাইলে পিঙ্ক সল্টও দিতে পারেন। এই গ্রিন জুসটি সবচেয়ে উপকারী জুসগুলোর একটি।
৩। বিভিন্ন রকম পাতার জুস
উপকরণ
১। থানকুনি পাতা, ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, লেটুস পাতা, পালং শাক, তুলসি পাতা
২। জনপ্রতি ৩-৪টি আমলকী
৩। সামান্য পরিমান আদা
৪। ১ চা চামচ পরিমান জিরা
৫। হিমালয়ান সল্ট/বিট লবণ (পরিমাণমতো)
৬। লেবুর রস, মধু বা গুড় (ঐচ্ছিক)
প্রস্তুত প্রনালী
১। প্রথমে সবুজ পাতাগুলো ভালোভাবে পানিতে ধুয়ে ছোট ছোট করে কেটে নিন। কাঁচা পাতা খেলে অনেকের বদ হজমের সমস্যা হতে পারে। তাই এই পাতাগুলোকে পানির মধ্যে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা পর্যন্ত ভিজিয়ে রাখতে পারেন।
২। আদা সহ শাক পাতা ও আমলকীগুলো এক গ্লাস পানি দিয়ে খুব ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন। ভালোমত মিহি করতে থেমে থেমে ব্লেন্ড করুন।
৩। একটি ছাকনি বা পাতলা কাপড়ে তরলটি ছেঁকে জুস ও পাতার অবশিষ্ট অংশ আলাদা করে নিন।
৪। জুসটির স্বাদ বাড়ানোর জন্য লেবুর রস ও পরিমানমত হিমালয়ান সল্ট/বিট লবণ মেশাতে পারেন। অথবা অরগ্যানিক মধু বা গুড়ও মেশাতে পারেন। পুষ্টিবিদদের মতে এই জাদুকরি পানীয়টি ৩০০টি রোগ থেকে আপনাকে নিরাপদ রাখতে পারে।
৪। সুস্বাদু বাঁধাকপি লেটুসের জুস
উপকরণ
১। ২টি বড় বাঁধাকপির পাতা
২। ১টি গোড়ার দিকের লেটুস পাতা
৩। ১ মুঠো তাজা পার্সলে
৪। ১টি বড় তাজা আপেল খোসা ছাড়িয়ে টুকরো করে কাটা
৫। ২টি লেবু খোসা ছাড়ানো
প্রস্তুত প্রনালী
১। সবগুলো উপকরণ খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিন। খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন যাতে জুসারে সহজেই মিহি হয়ে পেস্ট হয়ে যায়।
২। এবার পরিমানমত পানি দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন। ব্লেন্ড করা হয়ে গেলে একটি ছাকনিতে জুস ছেঁকে নিন। এই জুসটি বেশ সুস্বাদু। তাই দেরি না করে সাথে সাথেই পান করুন।
পরিশেষে, গ্রিন জুসের স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। সবুজ পাতার তৈরি গ্রিন জুস রক্ত পরিস্কার করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানো সহ আরো অনেক উপকার করে। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন এক গ্লাস ফ্রেশ সবুজ জুস।
GIPHY App Key not set. Please check settings