in

গরমে ইফতারের খাদ্যতালিকা কেমন হওয়া উচিত

ইফতার

এবার রমজান মাস শুরু হয়েছে বাংলা চৈত্র মাসেই। এসময়ের খাঁ খাঁ রোদ্দুরের তাপ খুব একটা অচেনা নয়। আর রমজানে যেহেতু, আমরা সারাদিন কোনো কিছু পান কিংবা খাওয়া থেকে বিরত থাকি, তাই আমাদের ইফতারের সময়ের খাদ্যতালিকা হতে হবে মানানাসই। 

গরমের এই সময়ে পেটে যেনো কোনো সমস্যা না দেখা দেয়, শরীরে যেনো কোনো ক্লান্তি বাসা না বাঁধে, এসব দিকে লক্ষ্য রেখে তৈরি করতে হবে খাদ্যতালিকা। চলুন জেনে নেয়া যাক, কোন খাবারগুলো রাখবেন, আর কোনগুলো রাখবেন না এই সময়ের ইফতারে। 

. শরবত বা হালাল পানীয়

ইফতারের সময় শরবত বা পানীয় থাকবে না, এটা হতেই পারে না। তবে, সেটা হতে হবে হালাল এবং স্বাস্থ্যসম্মত। কারণ শরবতেরও কিছু রকমফের আছে। গরমের এই সময়টাতে ইফতারে যে সকল শরবত খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন-

  • ইসবগুলের ভুসি
  • তরমুজের জুস
  • বেলের শরবত
  • ডাবের পানি

এছাড়াও, ঠান্ডা পানি রাখতে পারেন খাদ্যতালিকায়। রমজানের এই সময়টাতে ইফতার থেকে শুরু করে সেহরী পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা উচিত। প্রাপ্তবয়স্কদের অন্তত ২ লিটার পানি পান করা উচিত।

. খেজুর 

খেজুর আমাদের ইফতারের অন্যতম অনুসঙ্গ। আর গরমের সময়ে আপনি ইফতারে অন্তত ২টি খেজুর খাবেন। এটা শরীরে ভালো প্রভাব ফেলে। চাইলে, খেজুর দিয়ে স্মুদি তৈরি করেও খেতে পারেন। 

. চিড়া

চিড়া, সেহরি এবং ইফতার দুই সময়ের জন্যই ভালো একটি খাবার। তবে এটা একটু ভিন্নভাবে। প্রথমে দুপুর দেড়টার দিকে কিছুটা চিড়া পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এবার, ইফতারের আধ ঘন্টা আগে পানিটুকু ফেলে দিয়ে চিড়াটা কচলে নিন। 

স্বাদের জন্য চাইলে গুড়/ মিঠাই ব্যবহার করা যায় এবং অল্প পরিমাণ লবন। এবং এর সাথে টক দই একটি ভালো মিশ্রন। টক দই না হলে সামান্য পানি (ঠান্ডা পানি ব্যবহার করা যেতে পারে) যোগ করুন। চিড়ার এই রেসিপিটা ট্রাই করতে পারেন। গরমের দিনে এটা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করবে। আর প্রশান্তিও এনে দেবে।

. ফলমূল 

ফলমূল থেকে পাওয়া পুষ্টি উপাদানগুলো আমাদের শরীরে নানারকম সাহায্য করে। বিশেষ করে, পানির চাহিদা পূরণ করে। আমরা অনেকেই হয়তো ইফতার থেকে সেহরী পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে পারি না। 

তাই উচিত, পরিমাণ মত ফল খাওয়া৷ কারণ, রসালো ফলগুলো পানির বিকল্প হিসেবে কিছুটা কাজ করে। তরমুজ এদের মাঝে অন্যতম। তরমুজ আমাদের শরীরে প্রচুর পানির যোগান দেয়। 

তাই, ইফতারের সময় আঙুর, তরমুজ, আপেল, পেয়ারা, শসা এসব খওয়া যেতে পারে। কিন্তু, কমলা এবং মাল্টা এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এসময় এ ফলগুলো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

. দই

টক দই খাবেন নাকি মিষ্টি দই? এটা আপনার রুচির উপর নির্ভর করে। তবে, টকদই স্বাস্থ্যসম্মত। হালকা ঠান্ডা দই রাখা উচিত এসময়ের ইফতারে। 

এছাড়াও, ইফতারে ডাবের পানি, ডাব, কাঁচা ছোলা রাখতে পারেন। আর সকল খাবার যেনো তাজা হয় সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

ইফতারে যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত

ইফতারে ভাজা পোড়া খাননা, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। এগুলো মুখরোচক হয় ঠিকই, কিন্তু শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার কারণে, শরীর খারাপ করা অস্বাভাবিক কিছু নয়। 

তেলে ভাজা যেমন- বেগুনী, আলুর চপ, পেঁয়াজু  ইত্যাদি খাওয়ার ফলে এসময়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যা, শরীরকে দূর্বল করে তোলে। তাছাড়া, ছোলা বুট খেলেও কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

এজন্য, ভাজা পোড়া জাতীয় খাবার এখন এড়িয়ে চলতে হবে। তবে, চাইলে অবশ্যই ৩-৪ দিন পরপর খেতে হবে। আর ছোলা বুট দৈনন্দিন ইফতারের খাদ্যতালিকায় রাখলেও তেমন একটা সমস্যা নেই। কিন্তু, অধিক খাওয়া যাবে না।

সবশেষে এই লেখাতে আজ আমরা ইফতারে কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত, আর কোনগুলো খাওয়া উচিত নয়, তা সম্পর্কে আলোচনা করেছি। বর্তমানে ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী উপরিউক্ত খাদ্যগুলোর তালিকা দেয়া হয়েছে। আশা করি, সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে ইফতারে এটুকু নিয়ম মেনে চলাই কার্যকর এবং উপকারী। এরকম আরো উপকারী লেখা পেতে অবশ্যই ফলো করুন shoppingsheba.com ব্লগ সাইট।

What do you think?

Written by বিবি মরিয়ম লাবণ্য

আসসালামু আলাইকুম। আমি বর্তমানে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ভোলা সরকারি কলেজে পড়াশোনা করছি। এর পাশাপাশি অনলাইনে একজন কনটেন্ট রাইটার ও ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

হালাল খাদ্যের উপকারীতা

হালাল খাদ্যের স্বাস্থ্য উপকারীতা

রিচার্জেবল ফ্যানের সুবিধা

রিচার্জেবল ফ্যান ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা