রমজান মাসে সারাদিন রোজা রেখে ইফতারের সময়টাই ক্লান্তি মেটানোর জন্য বরাদ্দ থাকে। আর ইফতারে খেজুরের পর পানীয়-ই অন্যতম। আর গরমের এই সময়টাতে রমজান মাস শুরু হওয়ার কারণে, এখন পানীয়ের চাহিদা থাকে প্রচুর।
কিন্তু, আমরা ইফতারে যে পানীয়টা খাচ্ছি, সেটা কতটা স্বাস্থ্যসম্মত, তা-ও ভাববার বিষয়। আজ শপিং সেবা সাইটের এই লেখায় জানবো ইফতারের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত এবং তৃপ্তিদায়ক পানীয় সম্পর্কে।
১. ডাবের পানি
ডাবের পানি এসময়ের ইফতারের খাদ্যতালিকায় রাখাই যায়। ডাবের পানি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। ডাবের পানিতে আছে নানা রকমের ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান, যা আমাদেরকে পুষ্টির যোগান দেয়। ডাবের পানিতে বিদ্যমান-
- ক্যালসিয়াম
- পটাসিয়াম
- ম্যাগনেসিয়াম
- ভিটামিন সি
- রিবোফ্লেভিন
- কার্বোহাইড্রেট
জেনে রাখা ভালো, ডাবের পানি শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক। তাই, ইফতারের সময়ে ডাবের পানি পান করা যেতেই পারে।
২. বেলের শরবত
বেল আমাদের সকলেরই চেনা একটি ফলের নাম। পাকা বেল থেকে প্রস্তুত করা শরবত, যতটা আরামদায়ক, তার থেকেও বেশি উপকারী। বেলে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদানগুলো হলো-
- ভিটামিন এ
- ভিটামিন সি
- ক্যালসিয়াম
- ফসফরাস
- পটাসিয়াম
এগুলো আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে দারুণ সহায়তা করে। বেলের শরবত পান করলে আরও যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়-
- হজমশক্তি বাড়ায়
- শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক
- জন্ডিস রোগ নিরাময় করতে সহায়ক
- শিশুদের স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য উপকারী
তাই, বেলের শরবতকে-ও রাখা যেতে পারে ইফতারের তালিকায়।
৩. ফলের রস
বেল বাদে অন্যান্য নানা রকমের সুমিষ্ট ফল পাওয়া যায়। বিশেষ করে তরমুজ। এগুলো থেকে তৈরি করা জুস পান করা যেতে পারে ইফতারে। মূলত, আমাদের শরীরের জন্য পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর, তরমুজ থেকে আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পাই। তরমুজ থেকে রসটা আলাদা করে সামান্য চিনি কিংবা লবণের মিশ্রণে তরমুজের রস পান করা যেতে পারে। এটা শরীরের জন্য আরামদায়ক হবে, পাশাপাশি অনেক পুষ্টি যোগাবে। কারণ তরমুজে আছে-
- ভিটামিন এ
- ভিটামিন বি
- ভিটামিন সি
- এতে পানি আছে শতকরা প্রায় ৯৩ থেকে ৯৫ ভাগ পর্যন্ত, যা আনাদের পানির চাহিদার অনেকাংশ পূরণ করে।
- আছে কোলাজেন, আমাদের ত্বকের সংকোচন রোধ করে।
তাই, ইফতারে তরমুজের জুস রাখতে পারেন। তাছাড়াও, আপেল, কলা, আঙুর, লেবু এসব ফল দিয়ে জুস তৈরি করে পান করতে পারেন। এগুলো আপনাকে তৃপ্তি দেয়ার পাশাপাশি শরীরে পানির চাহিদাও অনেকাংশে পূরণ করবে। বিশেষ করে লেবুর শরবত।
ইফতারে সোডা পান করা কতটা যুক্তিযুক্ত?
ইফতারের সময়ে কেউ যদি সোডা পান করেন, তাহলে তা শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে বাধ্য। আমাদের পাকস্থলী যেহেতু সেহরীর পর থেকে ইফতারের সময় পর্যন্ত খালি থাকে, তাই এসময় হাইড্রোক্লোরিক এসিড সরাসরি পাকস্থলীতে পড়ে।
এজন্য, ইফতারো সোডা পান করার ফলে কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়ার কারণে, শরীর মারাত্মক দূর্বল হয়ে যেতে পারে। এবং পরবর্তীতে পেটে ব্যাথা, আলসার এর মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই, যতটা সম্ভব ইফতারে সোডা এড়িয়ে চলা উচিত।
ইফতারের পর চা পান কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?
এটার উত্তর অভ্যাসের উপর ভিত্তি করে ২ ভাবে দেয়া যায়। প্রথমত, আপনি যদি সাধারণ সময়ে প্রতিদিন অন্তত এক কাপ কিংবা দুই কাপ করে চা পান করতে থাকে, তাহলে ইফতারের পর চা পান করার ফলে আপনার তেমন কোনো অসুবিধা বোধ হবে না। বরং, এটা আপনার মাইগ্রেনের সমস্যা কিছুটা কমাতে সক্ষম। তবে, রমজানে ১ দিন পর পর চা পান করা উত্তম।
আবার, আপনি যদি সাধারণ সময়ে চা কিংবা কফি খুব একটা পান না করে থাকেন, তাহলে ইফতারের পর চা, কফি পান করলে অস্বস্তি বোধ হতে পারে। অভ্যাসগত কারণে, এটা স্বাভাবিক একটি বিষয়।
তবে চা প্রেমী কিংবা অপ্রেমী সবারই উচিত রমজান মাসে অন্তত ১ দিন পর পর চা পান করা, বিশেষ করে দুধ চা। কিন্তু, পুদিনা পাতার চা, তুলসী পাতার চা, এগুলোর মতো স্বাস্থ্যকর চা পান করতে চাইলে প্রতিদিনের ইফতারের তালিকায় রাখা যেতে পারে।
GIPHY App Key not set. Please check settings