মার্চ মাসেই সূর্যের তাপ বাড়তে শুরু করেছে। প্রয়োজন হচ্ছে ফ্যানের। এই গরম দিন দিন বাড়তে থাকবে। সেই সাথে গত বছরের মত হয়ত এই বছরেও শুরু হয়ে যাবে লোড শেডিং। ভাবছেন এই সমস্যার সমধান কিভাবে করা যায়? চিন্তা কি? গরমে সস্তি দিবে রিচার্জেবল ফ্যান। বাজারে এখন নানা ব্র্যান্ড এবং দামের রিচার্জেবল ফ্যান পাওয়া যায়। এদের আকারে যেমন ভিন্নতা রয়েছে তেমন সুবিধাও রয়েছে কম-বেশী। তবে গরমের কষ্ট কমাতে নিঃসন্দেহে এই ফ্যানগুলো দারুন উপকারী। তাই আজকে কথা বলব এই রিচার্জেবল ফ্যান কি ও এর ব্যবহার ও বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ে। চলুন তাহলে শুরু করি।
রিচার্জেবল ফ্যান কি?
রিচার্জেবল ফ্যান সাধারন ফ্যানের চেয়ে খুব ভিন্ন কিছু নয়। এটি সিলিং ফ্যানও হতে পারে আবার ছোট আকারের টেবিল বা স্ট্যান্ড ফ্যানের মতও হতে পারে। আকারে অনেক ছোট, হাতে/ব্যাগে বহনযোগ্য পোর্টেবল ফ্যানও হতে পারে। তবে এই দুয়ের মধ্যে পার্থক্য কেবল মাত্র নির্মান পদ্ধতিতে। রিচার্জেবল ফ্যান এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে এটি শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে পারে। পরবর্তিতে বিদ্যুৎ না থাকলে এই শক্তি ব্যবহার করে ফ্যানটি চলতে পারবে। এই ধরনের ফ্যানগুলোতে সাধারনত শক্তিশালী ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই ব্যাটারিগুলো সংরক্ষিত শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ না থাকলেও দীর্ঘ সময় চলতে পারে।
রিচার্জেবল ফ্যানের ব্যবহার
যখন কোন একটি পন্য বাজারে ছড়িয়ে পড়ে তখন তার জনপ্রিয়তার পেছনে একাধিক কারণ থাকে। রিচার্জেবল ফ্যানের দেশজুড়ে এত বেশী জনপ্রিয়তারও একাধিক কারণ রয়েছে। আসুন এখন এর কিছু বৈশিষ্ট্যের দিকে নজর দেওয়া যাক যেগুলো এটিকে বাজারে একটি বিশেষ অবস্থান তৈরি করতে এবং তা ধরে রাখতে সাহায্য করেছে।
১। আকার
আগেই বলেছি, এই ফ্যানগুলো বিভিন্ন আকার এবং আকৃতির হয়ে থাকে। অনেকেই ছোট আকারের ফ্যান পছন্দ করে কারন আকারে ছোট হলে ঘরের যে কোন কোনায় রাখা যাবে এবং খুব বেশী জায়গাও দখল করবে না। আবার অনেকেই হোম অ্যাপ্লায়ান্স এর লুকে ভিন্নতা খুঁজে থাকেন। এই ফ্যানগুলোর ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে যে সকল ক্রেতারই চাহিদা পূরন করতে সক্ষম।
যাইহোক, এই ধরনের ফ্যানগুলোর মধ্যে আকারে ছোটগুলোই বেশী জনপ্রিয় কারন এগুলো কম জায়গা দখল করে এবং সহজে বহন করা যায়। তবে আপনি কোথায় এবং কিভাবে ব্যবহার করবেন তার উপর নির্ভর করেই ফ্যানের আকার নির্বাচন করা উচিত।
২। একাধিক ব্যবহার
আজকাল রিচার্জেবল ফ্যানগুলোর অনেক ধরনের ফাংশন থাকে। যেমন অনেক ফ্যানের সাথে উজ্জ্বল এলইডি লাইট থাকে যেটা বিদ্যুৎ না থাকলে অনেক বেশী কাজে লাগে। এছাড়াও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডানে বামে ঘোরার কারনে বাতাস অনেকদূর পর্যন্ত যায়।
এছাড়াও কিছু ব্র্যান্ডের স্মার্ট ফ্যান এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে যেগুলোতে রয়েছে চোখ ধাঁধানো সব আধুনিক ফিচার। যেমন আমাজন স্পিকার ও গুগল স্পিকার সাপোর্ট, একাধিক স্পিড লেভেল, রিমোর্ট কনট্রোল ছাড়াই স্মার্টফোনের মাধ্যমে কনট্রোল ইত্যাদি।
৩। স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
যে সকল ব্যক্তিরা শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে ভুগছেন তাদের জন্য রিচার্জেবল ফ্যান বেশ উপকারী। এই ফ্যানের বাতাস চারিদিক জুড়ে প্রবাহিত হতে পারে এই কারনে শ্বাস প্রশ্বাস আরামদায়ক হয়। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বায়ু দূষণের কারনে অনেক মানুষই শ্বাসতন্ত্রের জটিলতায় ভুগছেন। এই ফ্যানের বাতাস গতিশীল এবং নিরবিচ্ছিনভাবে প্রবাহিত হয় যার কারনে শ্বাসতন্ত্রের জটিলতায় ভোগা রোগীদের জন্য এই ফ্যানের বাতাস উপকারী।
৪। উন্নতমানের ব্যাটারি
এই ফ্যানগুলো ব্যাটারির মাধ্যমে চলে। যেহেতু ব্যাটারি ছাড়া এই ডিভাইসগুলোর কাজ করার অন্য কোন উপায় নেই তাই এগুলো কেনার সময় অবশ্যই এই ব্যাটারির কোয়ালিটি ও কার্যকারিতা দেখে কেনা উচিত। কারণ এই ব্যাটারির কোয়ালিটি ও কার্যকারিতার উপরেই নির্ভর করবে যে বিদ্যুৎ না থাকলে ফ্যানটি আপনাকে কতক্ষন পর্যন্ত সার্ভিস দিতে পারবে। এছাড়াও ব্যাটারির কোয়ালিটি ভালো না হলে দেখা যাবে বছর না ঘুরতেই আপনার সাধের ফ্যানটি নষ্ট হয়ে বসে আছে।
আশাকরি এ বছর গরমে রিচার্জেবল ফ্যান আপনার ঘরেও সস্তি এনে দিবে। রিচার্জেবল ফ্যান নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনার প্রথম পর্বে এই ফ্যানের ব্যবহার ও বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ে আলোচনা করলাম। কারণ ফ্যান কেনার সময় এর ফিচারগুলো ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করে কেনা জরুরী। আগামী পর্বে আমরা এই ফ্যান ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। ততক্ষন আমাদের সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ।
রিচার্জেবল ফ্যানঃ ২য় পর্ব – রিচার্জেবল ফ্যান ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা
রিচার্জেবল ফ্যানঃ ৩য় পর্ব – রিচার্জেবল ফ্যানের ধরন এবং ব্যবহার
GIPHY App Key not set. Please check settings