সামনে আসছে পবিত্র রমজান মাস। মহিমান্বিত এই মাসের অপেক্ষায় মুসলমানেরা সারাবছর পথ চেয়ে থাকে। রোজা থাকা অবস্থায় আমাদের দিনের একটা বড় সময় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়। এই সময় অনেকেরই কাজের চাপ কম থাকে। অনেক স্কুল কলেজ বন্ধ থাকে, গৃহিণীদের দিনে রান্নার কাজ থাকে না ফলে বড় একটা অবসর সময় পাওয়া যায়।
রোজার সবচেয়ে কঠিন অংশ হল খাবারের জন্য অপেক্ষা করা। কারণ এই সময় মনে হয় যেন সময় কাটতেই চায় না। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীরা যারা নতুন রোজা রাখা শুরু করেছে তারা অনেক সময় ক্ষুধায় কাতর হয়ে যেতে পারে। কিন্তু রোজা সম্পূর্ন করার জন্য খাবার থেকে দূরে থাকতেই হবে। তাই আজকে আমরা রোজা থাকা অবস্থায় ক্ষুধা ভুলে সময় পার করবেন কীভাবে সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। চলুন তাহলে শুরু করি।
১। কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করুন
রমজানে কুরআন শরীফ তেলাওয়াত করা জরুরি। আপনি রমজানের শুরুতেই প্রতিদিন কতটা তেলাওয়াত করতে চান তা ঠিক করে নিন। অনেকেই পুরো রমজান মাসে একবার কোরআন খতম দেয়ার পরিকল্পনা করেন। তাই প্রথম থেকেই আপনার দৈনিক কোরআন তেলাওয়াতের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করে নিন।
কোরআন তেলাওয়াত নিঃসন্দেহে অনেক ভালো একটি ইবাদত। তাই এটি পাঠ করার মাধ্যমে একদিকে যেমন আপনার চমৎকার একটি ইবাদত করা হবে একই সাথে খুব সুন্দর একটা সময় কাটবে। আবার কোরআন তেলাওয়াতের কারনে আপনার ক্ষুধাবোধও কম হবে।
কোরআন তেলাওয়াত নিঃসন্দেহে অনেক ভালো একটি ইবাদত। তাই এটি পাঠ করার মাধ্যমে একদিকে যেমন আপনার চমৎকার একটি ইবাদত করা হবে একই সাথে খুব সুন্দর একটা সময় কাটবে।
২। সূরা মুখস্ত করুন
রমজান মাস সূরা মুখস্ত করার খুব ভালো একটা সময়। একদিকে এই সময় দিনের বেলা খুব একটা কাজ থাকে না। তার উপর পারিপার্শিক ধর্মীয় আবেশ এমনিতেই আপনাকে উদ্বুদ্ধ করবে ইসলাম চর্চা করতে। তাই এই রমজানেই আপনিও সূরা মুখস্ত করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামতে পারেন। পবিত্র কুরআন মাজীদে ছোট বড় ১১৪টি সূরা আছে। আপনি এখান থেকে কয়েকটি পছন্দ করে নিয়ে মুখস্ত করা শুরু করে দিন। এতে আপনার সময়ও কাটবে আবার বেশ কিছু সূরাও শেখা হয়ে যাবে।
৩। নফল নামাজ পড়ুন
রমজান মাস মূলত ইবাদতের মাস। তাই শুধু ফরজ ইবাদত করেই থেমে যাবেন না। কিছু নফল ইবাদতও করুন। সবচেয়ে বেশী ভালো হয় যদি নফল নামাজ পড়তে পারেন। এতে একদিকে নেকি হাসিলও হবে আবার সুন্দর একটা সময়ও কাটবে। ফজর নামাজের পর পড়তে পারেন ইশরাকের নামাজ। এরপর যোহরের নামাজের আগে পড়তে পারেন যাওয়ালের নামাজ। মাগরিবের নামজের পর

আউয়াবিনের নামাজ পড়তে পারেন। এছাড়া রমজানে প্রতিদিন তারাবীর নামাজ তো আছেই। এই সব কিছু বাদেও আরো একটি অতি গুরুত্বপূর্ন নফল ইবাদত হল তাহাজ্জুদ। আপনি এই নামাজটিও প্রতিদিন পড়তে পারেন।
মসজিদে নামাজ পড়ার পর সাথে সাথে বাসায় না ফিরে সেখানে আরো কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে পারেন। আলেমগণের সাথে ইসলামী আলোচনা করতে পারেন। যিকর, দুআ ইত্যাদিও করতে পারেন।
৪। ঘরে অবস্থান করুন
এখন রোজা হয় গরমে। একটানা প্রায় ১৬-১৭ ঘন্টা খাবার পানীয় থেকে দূরে থাকতে হয়। তাই দিনের বেলা অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে না যাওয়ায় ভালো। এতে শরীর ডিহাইড্রেড হয়ে যেতে পারে। ক্ষুধা ও পিপাসাও বেড়ে যেতে পারে। তবে আপনি চাইলে কোন বন্ধুর বাড়ি বা ঘরোয়া তাবলীগে অংশগ্রহন করতে পারেন। এতে বেশ খানিকটা সময় পার হয়ে যাবে।
৫। ঘরের কাজে সাহায্য করুন
আপনি রোজা আছেন তার মানে এই নয় যে সারাদিন শুয়ে থাকবেন। আপনার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও রোজা আছেন। তাই সারাদিন অলস বসে না থেকে আপনার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কাজে সাহায্য করুন। ছোট ভাইবোনদের পড়া দেখিয়ে দিতে পারেন। আপনার ঘরটি গুছিয়ে রাখতে পারেন। ফুলের গাছগুলর যত্ন নিতে পারেন। অথবা বিকালে রান্নার কাজেও সাহায্য করতে পারেন।
৬। ইসলামিক অনুষ্ঠান দেখুন
রমজান মাসে আমাদের দেশের টিভি চ্যানেলগুলোতে নানারকম ইসলামিক অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়ে থাকে। অবসর সময়ে আপনি চাইলে এই অনুষ্ঠানগুলো উপভোগ করতে পারেন। এতে যেমন আপনি ইসলাম সম্পর্কে বেশ কিছু বিষয় জানতেও পারবেন একইসাথে আপনার অবসর সময়টাও সুন্দর কাটবে।আর কিছুদিন পরেই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। যারা নতুন রোজা রাখবেন বিশেষ করে কিশোর কিশোরীরা ক্ষুধা অনুভব করে বেশী। আবার সারাদিন তেমন কোন কাজ না থাকায় ক্ষুধার কথা বেশী মনে পড়তে পারে। আশাকরি উপরে আলোচিত টিপসগুলো অনুস্বরণ করলে রোজা থাকা অবস্থায় ক্ষুধা ভুলে সুন্দর সময় পার করতে পারবেন। রমজান মোবারক!
GIPHY App Key not set. Please check settings