in

যে ৫টি ফাইবার সমৃদ্ধ ফলে ওজন কমে

5 foods that are rich in fiber results in weight loss

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার মানেই তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। স্বাস্থ্যকর ডায়েটের জন্য তাই ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া খুব জরুরী। আপনি কী ওজন কমাতে চান? তাহলে ডায়েটে কিছু ফাইবার সমৃদ্ধ ফল রাখতে পারেন। চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

সৌভাগ্যক্রমে আমাদের দেশে প্রচুর পরিমানে ফাইবার সমৃদ্ধ ফল পাওয়া যায়। এই ফলগুলো যে কেবল সুস্বাদু তাই নয় সাথে স্বাস্থ্য রক্ষায় দারুন কাজ করে। আপনাদের সুবিধার জন্য আমরা এখানে বিশেষ কিছু ফল নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলোতে প্রচুর পরিমানে ফাইবার আছে এবং আপনার ওজন কমাতেও গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করবে।  

ফাইবার সমৃদ্ধ ফলের উপকারীতা

ফাইবার সুষম খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ন উপাদান যার উপকারিতা অনেক।

প্রথমত: এটি নিয়মিত মলত্যাগে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাটিন্য প্রতিরোধ করে হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে।

দ্বিতীয়ত: ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার আপনাকে তৃপ্ত করতে সাহায্য করে, ক্ষুধা নিবারন করে এবং অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে।

তৃতীয়ত: ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, এবং বিশেষ কিছু ক্যান্সার সহ বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি কমাতে পারে।

চতুর্থত: ফাইবার অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমকে উন্নত করে। সাথে উপকারী ব্যকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে ইমিউনিটি বাড়ায় এবং সামগ্রীক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।

চলুন তাহলে দারুন সুস্বাদু ও ফাইবারে ভরপুর কিছু ফলের সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেয় যেগুলো আপনাদের ওজন কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

ওজন কমাতে ৫টি ফাইবার সমৃদ্ধ ফল

১। স্ট্রবেরি

স্ট্রবেরি স্বাদে, পুষ্টিগুনে ও দেখতে এক অসাধারণ ফল। এটি যে কেবল খেতে সুস্বাদু তা নয়, পেটের চর্বি কমাতেও এটি দারুন কাজ করে। ফাইবারে ভরপুর স্ট্রবেরি তৃপ্তি বাড়ায়, ক্ষুধা কমায় ফলে অনেক বেশি ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা যায়। সকালের নাস্তার সাথে অথবা স্মুদি তৈরি করে খেতে পারেন। এই চমৎকার সুস্বাদু ফলটির প্রতি ১০০ গ্রামে মাত্র ৩২ ক্যালোরি থাকে। তাই ওজন কমানো চেষ্টায় থাকলে নিঃসন্দেহে এই ফলটি আপনার ডায়েটে রাখতে পারেন।

২। পেয়ারা

অতি সুপরিচিত এই দেশী ফলটিকে খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ হয়ত খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। তাজা চকচকে সবুজ, পুষ্টিতে ভরপুর পেয়ারা হল প্রোটিন এবং উচ্চমানের ফাইবারের পাওয়ার হাউস। এর ফাইবার হজমে সহায়তা করে, বিপাক নিয়ন্ত্রন করে এবং আপনার পাকস্থলীকে পূর্ন রাখে। এর ফলে ওজন কমানো সহজ হয়।

সকালে নাস্তার সাথে, সালাদে, অথবা স্ন্যাক্সে যেভাবেই খান না কেন, পেয়ারা হল আপনার ফাইবার গ্রহনের সবেচেয়ে সুস্বাদু উপায়গুলোর একটি।   

ম্যাক্রোবায়োটিক নিউট্রিশনিস্ট এবং হেলথ প্র্যাকটিশনার, শিল্পা অরোরার মতে, “পেয়ারা একটি কম জিআই ফল এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না। তাছাড়া, ফলটি ‘নেগেটিভ ক্যালোরি ফুড’ পরিবারের একটি অন্যতম সদস্য।” প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারায় প্রায় ৫২ ক্যালোরি এবং সামান্য চর্বি থাকে।

৩। আপেল

কথায় আছে, প্রতিদিন একটি করে আপেল খান, ডাক্তার থেকে দূরে থাকুন। আপেল আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশী ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখতেও সাহায্য করে। পর্যাপ্ত পরিমানে ফাইবার সহ, আপেল তৃপ্তি বাড়ায়, হজম প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রন করে এবং খাদ্যের চর্বি শোষনে সহায়তা করে। সকালের নাস্তার সাথে অথবা স্ন্যাক্স টাইমে আপেল হতে পারে আপনার সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবার যেটা আপনার ক্ষুধা নিবারনের সাথে সাথে ওজনও নিয়ন্ত্রনে রাখবে।

প্রখ্যাত ভারতীয় পুষ্টিবিদ ডাঃ অনজু সুড বলেন যে, ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্ট্মেন্ট অফ এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) অনুসারে একটি মাঝারি সাইজের আপেলে প্রায় ৪.৪ গ্রাম ফাইবার থাকে যা মহিলাদের জন্য প্রয়োজনীয় ফাইবারের ১৬ শতাংশ এবং পুরুষদের জন্য ১১ শতাংশ পূরন করতে সক্ষম।

৪। আম

মিষ্টি স্বাদের হলেও ওজন কমানোর যুদ্ধে আম আপনার বিশেষ সহযোগী হতে পারে। আম ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এনজাইম সমৃদ্ধ যা হজমে সাহায্য করে। এটি তৃপ্তি বাড়ায় এবং ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। টুসটুসে পাকা আম আপনি সরাসরি খান অথবা জুস বা স্মুদি বা অন্য কোন ডেজার্ট বানিয়ে খান, আপনার পুষ্টি পূরনের সুস্বাদু এক উপায় হচ্ছে এই ফল।

ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) অনুসারে, ১০০-গ্রাম আমে ৬০ কিলোক্যালরি থাকে। আমাদের দৈনন্দিন ক্যালোরি গ্রহণ প্রধানত আমাদের বয়স, লিঙ্গ, ওজন, এবং কার্যকলাপ স্তরের উপর নির্ভর করে। USDA অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক ক্যালোরির চাহিদা ১,৬০০ থেকে ৩,০০০ পর্যন্ত। খোসা ছাড়া একটি আমে প্রায় ২০০ ক্যালোরি থাকে, যা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিদিনের গড় ক্যালোরির প্রায় ১০ শতাংশ।

৫। কলা

কলা ছোট বড় সকলেরই পছন্দের ফল। প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম ছাড়াও এতে পর্যাপ্ত পরিমানে ফাইবার রয়েছে যা ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। একটি মাঝারি আকৃতির কলায় আনুমানিক ৩ গ্রাম ফাইবার থাকে যা যথেষ্ট শক্তি প্রদানকারী স্ন্যাক্সের বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে। দই বা ওটমিলের সাথে ছোট করে কেটে কলা খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও লাচ্ছি, স্মুদি বা সরাসরিও পাকা কলা খাওয়া যেতে পারে।

কলায় থাকা দ্রবনীয় ফাইবার আমাদের অন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে, ক্ষুধা নিয়ন্ত্রন করে এবং ক্যালোরি কম গ্রহনেও সাহায্য করে।

অতএব, যদি ওজন কমাতে চান তাহলে এই সুস্বাদু ৫টি ফল আপনার ডায়েটে অবশ্যই রাখুন। এতে আপনার পুষ্টির চাহিদা পূরনের পাশাপাশি ওজনও নিয়ন্ত্রনে থাকবে।

What do you think?

Written by সানজিদা আলম

একজন ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটার। টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, প্রোডাক্ট রিভিউ এবং ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। লেখালেখির পাশাপাশি ভালোবাসি পড়তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

গরমে ত্বকের যত্ন

গরমে ত্বকের যত্নে ৫টি উপায়

questions answers digital blood pressure monitor machine

ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মনিটর মেশিন সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর