ওজন কমানোর যুদ্ধে একটা ব্যাপারে আমরা সবাই একমত হতে পারি আর সেটা হলো সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে পেটের চর্বি কমানো। কারণ এমন অনেক বিষয় রয়েছে যেগুলোর কারণে পেটের চর্বি কমানো খুব কঠিন হয়ে পড়ে, যার মধ্যে রয়েছে অস্বাস্থ্যকর ডায়েট, ব্যায়ামের অভাব, ঘুমের অভাব, জেনেটিক্স এবং মানসিক চাপ। যদিও এই সব কারণগুলো ওজন বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে তবে বিশেষ করে পেটের চর্বি বৃদ্ধির সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল পুষ্টিকর খাবার কম খাওয়া।
ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যের সমন্বয়ে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা গড়ে তোলা খুব জরুরী। ভারতের প্রখ্যাত পুষ্টিবিদ রূপালী দত্তের মতে পেটের চর্বি কমানোর জন্য একটি পুষ্টিকর ও সুশৃঙ্খল ডায়েট এর পাশাপাশী সুনির্দিষ্ট ব্যায়ামও চালিয়ে যেতে হবে। এর বাইরে পেটের মেদ কমানোর আর কোন শর্টকাট নেই। তবে আনন্দের বিষয় হলো যে, কিছু সাধারণ পানীয় আছে যা পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করতে পারে। আপনাদের সুবিধার্থে আমরা এখানে কিছু স্বাস্থ্যকর সবুজ পানীয় নিয়ে আলোচনা করবো যা পেটের মেদ কমাতে দুর্দান্ত কাজ করে। চলুন দেখি সেগুলো কি কিঃ
১। পালং শাক এবং বাধাকপির জুস
সবুজ জুস (গ্রিন জুস) এর মানে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন? হ্যা, সবজি দিয়ে তৈরি জুস যা আপনার শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করবে। এই জুসটি তৈরি করতে প্রয়োজন হবে পালং শাক, বাধাকপি, ও শশার। শীত মৌসুমে এই সবজিগুলো বাজারে প্রচুর পাওয়া যায়। এই সবজিগুলোতে ফাইবার বেশী থাকে এবং পানির পরিমাণও অনেক থাকে। তাই ওজন কমানোর জন্য এই জুস একটি আদর্শ খাবার হতে পারে।
যেভাবে তৈরি করবেনঃ ২০০ গ্রাম শশা, ৫০ গ্রাম পালং শাক, ৫০ গ্রাম বাধাকপি এবং ১/৪ ইঞ্চি আদা একসাথে ব্লেন্ড করে নিন। এতে স্বাদ বাড়াতে সামান্য লবন ও লেবুর রস যোগ করুন।
ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যের সমন্বয়ে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা গড়ে তোলা খুব জরুরী। ভারতের প্রখ্যাত পুষ্টিবিদ রূপালী দত্তের মতে পেটের চর্বি কমানোর জন্য একটি পুষ্টিকর ও সুশৃঙ্খল ডায়েট এর পাশাপাশী সুনির্দিষ্ট ব্যায়ামও চালিয়ে যেতে হবে। এর বাইরে পেটের মেদ কমানোর আর কোন শর্টকাট নেই।
২। শসা এবং কিউই এর জুস
কিউই আমাদের দেশীয় ফল না হলেও এখন প্রায় সকল বড় বড় সুপার সপে এটি পাওয়া যায়। শশা এবং কিউই উভয়ই পুষ্টিগুণে ভরপুর। শশায় প্রায় ৯৫% পানি রয়েছে এবং এটি ভিটামিন কে সমৃদ্ধ। এতে ক্যালোরির পরিমান অনেক কম থাকায় অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। কিউই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি এবং শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য একটি অন্যতম সেরা ফল।
যেভাবে তৈরি করবেনঃ ৪টি কিউই, ২টি শশা, সামান্য আদা কুঁচির সাথে ১ কাপ পানি যোগ করে ব্লেন্ড করুন। স্বাদ বাড়াতে গোল মরিচের গুড়া ও লবন যুক্ত করতে পারেন।
৩। লাউ এর জুস
আরো একটি সবজির জুসের সাথে চলুন আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেয়। এই সবুজ জুসটি হল লাউ এর জুস। লাউ কম ক্যালোরি এবং উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ একটি সবজি তাই এটি ওজন কমানোর জন্য আদর্শ একটি খাবার। এটি আপনার পাকস্থলীকে দীর্ঘ সময়ের জন্য পূর্ণ রাখতে সাহায্য করে। এর জুস তৈরির সময় আনারস এবং কমলা যুক্ত করে এটিকে আরও সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর করে তোলা যায়। এছাড়া এ দুটি ফলই ভিটামিন সি-এর বড় উৎস হওয়ায় শরীরে ভিটামিন সি এর চাহিদাও পূরন হয়।
যেভাবে তৈরি করবেনঃ ১ কাপ লাউ, এক কাপ আনারস, ১ কাপ কমলা, ১ কাপ শশা, কিছু পুদিনা ও ধনে পাতা একসাথে ব্লেন্ড করে নিন। প্রয়োজন অনুসারে সামান্য পানি মেশাতে পারেন। ইচ্ছে হলে এই জুস ছেঁকেও পান করতে পারেন।
৪। আমলকির জুস
আমলকি আমাদের দেশে খুবই সুপরিচিত একটি ফল। এটি দীর্ঘকাল ধরে ঘরোয়া প্রতিকারের একটি প্রাকৃতিক উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং এর ঔষধি গুণাবলীর জন্য অনেক বেশী মূল্যবানও। কিন্তু আপনি কি জানেন যে আমলকির রসও আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে? আমলকির রস প্রকৃতিকভাবে ক্ষারীয় এবং পাচনতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে ফলে আমাদের মেটাবলিজম উন্নত হয়। এটি আমাদের শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতেও সাহায্য করে।
যেভাবে তৈরি করবেনঃ এক কাপ পরিমান আমলকি (বীজ ছাড়া), সামান্য লবন, ভাজা জিরার গুড়া, ও পুদিনা অথবা ধনে পাতা একসাথে দেড় কাপ পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিয়ে পান করুন।
নানারকম ফল ও সবজি দিয়ে তৈরি কয়েকটি জুস নিয়ে এখানে আমরা আলোচনা করলাম। সবগুলোই খুব সহজে বাড়িতেই তৈরি করে নেয়া যাবে। আপনার স্বাদ ও সুবিধা অনুযায়ী ডায়েটে যে কোন সবুজ জুস যুক্ত করে নিতে পারেন। সাথে পুষ্টিকর খাবার ও ব্যায়াম চালিয়ে গেলে অচিরেই পেটে জমে থাকা জেদি মেদের হাত থেকে সহজেই মুক্তি পেয়ে যাবেন।
GIPHY App Key not set. Please check settings