in

এয়ারট্যাগ কি এবং কিভাবে কাজ করে?

Apple AirTag in Bangladesh

শুনতে বিস্ময়কর হলেও এটাই সত্যি যে, আপনার মহামূল্যবান জিনিস আপনি হারানোর পর পুনরায় তা ফিরে পাবেন। আর এ কাজটি যার মাধ্যমে সম্পাদিত হয় তার নাম হলো এয়ারট্যাগ। দৈনন্দিন জীবনের কাজের ব্যস্ততায় আমরা অনেক সময় অনেক কিছু মিসিং করে থাকি।

পরবর্তীতে তা খুঁজে পেতে পোহাতে হয় নানান ধরনের বিপত্তি। আপনি যদি এয়ারট্যাগ ব্যবহার করেন। তাহলে খুব সহজেই আপনার হারানো জিনিসকে উদ্ধার করতে সক্ষম হবেন তাও আবার অল্প সময়ের মধ্যেই।

অ্যাপল এয়ারট্যাগের ব্যবহার এবং ভ্রমনের সময় এর উপকারিতা

সেজন্য আপনাকে আগে জানতে হবে এয়ারট্যাগ কি এবং এটি কিভাবে কাজ করে তার সাথে প্রাসঙ্গিক আরও তথ্য। এ সকল বিষয় জানতে পুরো লেখাটি মন দিয়ে পড়তে থাকুন।

এয়ারট্যাগ আসলে কি?

এয়ারট্যাগ মূলত একটি ট্র্যাকিং ডিভাইস যাকে লোকেটার ও বলা যেতে পারে। দেখতে কেবল মাত্র একটি মূদ্রার আকারের। এটির আকার ক্ষুদ্র হলেও এটি আপনাকে বৃহৎ সুবিধা প্রদান করতে সক্ষম। যেমন ধরেন, আপনার বাসার সমস্ত চাবি একত্রে বাঁধা আছে। বাজারে অথবা অন্য কোথাও বেখেয়ালি ভাবে চাবিগুলো পরে গেলো।

এখন বাসায় এসে দেখলেন বাসার সমস্ত চাবির ছড়াটি কোথাও হারিয়ে গেছে। ঠিক এই মহূর্তে আপনার একমাত্র ভরসা হলো এই এয়ারট্যাগ। যদি এই এয়ারট্যাগটি আপনার চাবির সাথে সংযুক্ত করে রাখেন তাহলে আপনার স্মার্ট ফোন থেকে ট্র্যাকিং করে অল্প সময়েই চাবিটি খুঁজে পেতে সমক্ষ হবেন।

এটি আ্যাপল কোম্পানির তৈরি একটি ইলেক্ট্রিক ডিভাইস যেটি কেবল মাত্র আইফোনে (iOS স্মার্টফোন) কাজ করে। এটি আপনি আপনার সকল প্রয়োজনীয় জিনিসের সাথে যুক্ত করতে পারেন। আপনার ওয়ালেট, চাবিসহ অন্যান্য সকল মূল্যবান জিনিস হারানোর পর পুনরায় ফিরে পেতে আ্যাপল এয়ারট্যাগ ব্যবহার করতে পারেন।

অ্যাপল এয়ারট্যাগ কিভাবে কাজ করে 

অ্যাপল এয়ারট্যাগ ডিভাইসটি আপনার হারানো জিনিসকে ফিরে পেতে দারুনভাবে সাহায্য করতে সক্ষম। এই ডিভাইসে লোকেটার অ্যাপ্লিকেশন যুক্ত রয়েছে এবং এটি এ্যাপল ইকোসিস্টেমের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা একটি যন্ত্র। 

কোনোকিছু হারিয়ে গেলে এই ডিভাইসটি জিপিএস (GPS) এবং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে হারানো জিনিসটির লোকেশন প্রদর্শন করে এবং একই সাথে সংকেত প্রেরন করে আপনার হারিয়ে যাওয়া জিনিসটি খুঁজে পেতে যাদুর মত কাজ করে।

  • আপনি যখন অ্যাপল এয়ারট্যাগটি আনবক্স করবেন, দেখতে পাবেন একটি প্লাস্টিক এবং সিলভারের কাভারেজ করা একটি মুদ্রার আকারের ডিভাইস। এটির উপরে একটি কাগজ লাগানো থাকে এবং এই কাগজটি খুলে ফেলার সাথে সাথেই ডিভাইসটি একটি শব্দ করে এক্টিভেট হয়ে যাবে।
  • তারপর ঠিক যেভাবে আমরা ব্লুটুথ কানেক্ট করি সেলফোনের সাথে, ঠিক একই ভাবে এটি আপনার সেলফোনের সাথে পেয়ার করতে হবে।
  • এর জন্য তেমন কিছু করতে হবে না। শুধুমাত্র ডিভাইসটিকে আপনার সেলফোনের কাছে রেখে দিলেই আপনার ফোনে এর কয়েকটি অপশন শো করবে। যেমন, চাবি, ল্যাগেজ, ঘড়ি ইত্যাদি। তার মানে আপনি যেই জিনিস টা হারিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা বেশি মনে করেন, ফোন থেকে সেই অপশনটিকে সিলেক্ট করুন।
  • এরপর আপনার ফোনে দুইটি অপশন শো করবে একটি হলো ফাইন্ড অন্যটি লোকেশন বা ডিটেকশন। ফাইন্ড এ গেলে আপনার এ্যায়ারট্যাগটি সাউন্ড করে আপনাকে জানিয়ে দেবে সে কোথায় আছে। অবশ্য এটি আপনার আশেপাশের এরিয়ার ভিতরে। যেখান থেকে আপনি শব্দটি শুনতে পাবেন।
  • অন্যটি হচ্ছে লোকেশন বা ডিকেটশন। এই অপশনে গেলে আপনার এয়ারট্যাগটি কোথায় আছে, আপনার থেকে এয়ারট্যাগের দূরত্ব কতটুকু তা নির্ধারণ করে দিবে। সেই লোকেশন অনুযায়ী আপনি গেলে আপনার হারানো জিনিসটি ফেরৎ পাবেন।

এখানে ২টি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন। প্রথমটি হলো ডিভাইসটি আপনার সেলফোনের সাথে সংযুক্ত করার সময় আপনার ইমেল এবং ফোন নাম্বার দিতে হয়। এতে করে যদি অন্য কোনো ব্যক্তি আপনার এয়ারট্যাগ লাগানো জিনিসটি খুঁজে পায় তাহলে সে আপনার ইমেইল এবং ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারবে।

দ্বিতীয়টি হলো, এয়ারট্যাগ যেহেতু একটি ছোট আকৃতির ডিভাইস মাত্র তাই এটিকে যেকোনো জিনিসের সাথে সংযুক্ত করতে লুপ অথবা কে-রিং এর মত রিং ব্যবহার করতে হবে।

এভাবে একটি অ্যাপল এয়ারট্যাগ আপনার মহামূল্যবান হারানো জিনিসটিকে ফেরৎ পেতে সাহায্য করে থাকে। 

অ্যাপল এয়ারট্যাগ এর সুবিধা

অ্যাপল এয়ারট্যাগ এর অনেক গুলো সুবিধা রয়েছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৫ টি হলো:

  • আকারে ছোট হওয়ায় যেকোনো পকেটে রাখা যায় এবং সহজেই বহনযোগ্য। 
  • ট্র্যাকিং ছাড়াও এটি আপনি চাবির রিং হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
  • অল্প সময়ে আপনার প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
  • আপনার ব্যাকপ্যাক নিরাপদে রাখে।
  • অফিসিয়াল চাবি, বাড়ির চাবি, গাড়ি ইত্যাদিকে নিরাপত্তা প্রদান করে।

কেন আপনার এ্যাপল এয়ারট্যাগ থাকা উচিত?

তাড়াহুড়ো এবং ভুলে যাওয়ার মূহুর্তে এ্যাপল এয়ারট্যাগ অসামান্য ভূমিকা পালন করে। আপনার যে কারনে একটি অ্যাপল এয়ারট্যাগ থাকা প্রয়োজন তা নিম্নে প্রদান করা হলো:

  • ডিভাইসটির ব্যাটারি খুব সহজেই প্রতিস্থাপন করা যায়
  • খুব সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়
  • ওয়াটারপ্রুফ
  • কম সেলুলার ডেটা খরচ করে
  • ডেটার গোপনীয়তা সুরক্ষা করে

অ্যাপল এয়ারট্যাগ ইতিমধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। হারানো জিনিসের পাশাপাশি আপনার প্রিয়জন বা সন্তানের লোকেশনও এর মাধ্যমে জানা সম্ভব।

What do you think?

Written by নুসরাত জাহান

পেশায় একজন নার্স হলেও ইসলামিক বিষয় নিয়ে পড়তে ও লিখতে ভালো লাগে। আমার লেখা থেকে যদি কেউ বিন্দুমাত্র উপকৃত হয় তবেই আমার প্রশান্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

জ্বর

জ্বরে বেহাল দশা? জ্বরকে ভাগিয়ে ইমিউনিটি বাড়ানোর উপায়

how to save money taka

সংসার খরচ কমানোর দুর্দান্ত কিছু টিপস