in ,

LoveLove CuteCute

জ্বরে বেহাল দশা? জ্বরকে ভাগিয়ে ইমিউনিটি বাড়ানোর উপায়

জ্বর

এখন সময়টা জ্বরের। প্রায় প্রতি ঘরেই জ্বরে আক্রান্ত রোগীর দেখা মিলছে। তার উপর রমজান মাস হওয়ায় দিনের দীর্ঘসময় খাবার পানীয় থেকে দূরে থাকার কারনে জ্বরের পরবর্তী শারীরিক দূর্বলতা কাটিয়ে উঠা কঠিন হয়ে পড়ছে। তবে কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার, ব্যায়াম, ও ঘরোয়া রেমিডি মেনে চললে সহজেই জ্বরকে ভাগিয়ে ইমিউনিটি বাড়ানো যায়।  

বর্তমানে H3N2 ভাইরাস বেড়েই চলেছে ফলে জ্বরের সাথে কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া, শরীর ব্যাথার মত উপসর্গগুলোও কমবেশী দেখা যাচ্ছে। তাই এই সময় আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা খুবই জরুরী। আবার ঋতুর পরিবর্তনের সাথে সাথে বাতাসে ধুলোবালির পরিমান বেশী থাকায় শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যাও দেখা যাচ্ছে। এই সময় শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা তুলনামূলক বেশী আক্রান্ত হচ্ছে।  

আমাদের ইমিউন সিস্টেম হল অঙ্গ, কোষ এবং প্রোটিনের একটি জটিল নেটওয়ার্ক যা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য রোগজীবাণু থেকে আমাদের রক্ষা করতে একসাথে কাজ করে। তাই আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত রাখতে পরিপূর্ন পুষ্টি অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ।  

খনিজ, ভিটামিন, অ্যামিনো অ্যাসিড, কোলেস্টেরল এবং ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করার জন্য পরিপূর্ন পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন যা আমাদের ইমিউন সিস্টেমের বিকাশ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং কার্যকারিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চলুন দেখি আমাদের শরীরের ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য কি কি প্রয়োজনঃ

ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনী মিনারেল

১। আইরন

ইমিউন সিস্টেমে অক্সিজেনের ভালো সরবরাহ বজায় রাখার জন্য আয়রন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ইমিউন প্রক্রিয়ার সাথেও জড়িত।

উৎসঃ লাল মাংস, মুরগির মাংস, টার্কি, সবুজ শাক, পেয়ারা, শুকনো ফল ইত্যাদি।

আমাদের ইমিউন সিস্টেম হল অঙ্গ, কোষ এবং প্রোটিনের একটি জটিল নেটওয়ার্ক যা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য রোগজীবাণু থেকে আমাদের রক্ষা করতে একসাথে কাজ করে। তাই আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত রাখতে পরিপূর্ন পুষ্টি অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ।  

২। সেলেনিয়াম

সংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য সেলেনিয়াম সবচেয়ে শক্তিশালী মিনারেল। ইমিউন সিস্টেম কাজ করার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উৎসঃ বিভিন্ন বাদাম, টার্কি, মুরগি, গোটা গম, রাজমা এবং ডাল।

৩। জিঙ্ক

নতুন ইমিউন কোষ তৈরির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে জিঙ্ক প্রয়োজন। এটি গোটা ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারীতা অক্ষুন্ন রাখতে প্রয়োজনী পুষ্টি প্রদান করে।

উৎসঃ সামুদ্রিক মাছ, ডিম, মুরগির মাংস, লেবু, বাদাম এবং গোটা শস্য।

ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন

১। ভিটামিন সি

ভিটামিন সি সম্ভবত শ্বাসযন্ত্রের যে কোন সমস্যা মোকাবেলার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বককে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে। এটি ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করার জন্যেও অপরিহার্য।

উৎসঃ সাইট্রাস ফল, কমলালেবু, লেবু, স্ট্রবেরি, গোলমরিচ, টমেটো, সাদা আলু, আমলা এবং পেয়ারা।

২। ভিটামিন ই

ভিটামিন ই আরেকটি খুব শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্রি র‌্যাডিকেলগুলোকে ধ্বংস করে এবং ডিএনএ এর ক্ষতি প্রতিরোধ করে। এটি ২০০ টিরও বেশি বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় এবং ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উৎসঃ বাদাম, চিনাবাদাম, সূর্যমুখী বীজ এবং তেল, ডিমের কুসুম, সয়াবিন তেল, পালং শাক, বীট শাক, কুমড়া, আম এবং অ্যাভোকাডো।

৩। ভিটামিন এ

ভিটামিন এ –তে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। এটি ইমিউন সিস্টেমের বিকাশের জন্য প্রয়োজন এবং ইমিউন প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের সাথে জড়িত।

উৎসঃ গাজর, মিষ্টি আলু, কুমড়া, অর্গানিক মাংশ, আম এবং সবুজ শাক।

৪। ভিটামিন ডি

ভিটামিন ডি ইমিউন সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণের সাথে যুক্ত। এটি প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রোগ জীবাণুর সাথে লড়াইকারী প্রোটিন তৈরি করতে ইমিউন কোষের ক্ষমতা বাড়ায়।

উৎসঃ ভিটামিন ডি এর সবচেয়ে বড় উৎস হল সূর্যের আলো।

৫। ফোলেট এবং ফলিক অ্যাসিড

সুস্থ কোষ গঠনের জন্য ফোলেট এবং ফলিক অ্যাসিড প্রয়োজন। এগুলো ডিএনএ এবং আরএনএ উত্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয়, যা প্রতিটি কোষের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতির কারনে ইমিউন সিস্টেম দূর্বল হতে পারে।

উৎসঃ সবুজ শাক, সব ধরনের ছোলা, তেলবীজ, এবং সয়াবিন।

ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য ঘরোয়া প্রতিকার

১। মধু ও তুলসিপাতা

যুগ যুগ ধরে বাঙ্গালির ঘরে ঘরে সর্দি কাশি উপসমের জন্য মধু ও তুলসিপাতা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তুলসিপাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে খুব দ্রুত গলা পরিস্কার হয় এবং কাশি উপসম হয়।

২। আদা চা

আদা চা খুবই প্রচলিত একটি পানীয়। এটি শুধু প্রচলিত পানীয়ই নয় জ্বর, সর্দি কাশি দূর করতেও খুবই উপকারী। সর্দির কারনে মাথা ব্যাথা করলে আদা পানিতে ফুটিয়ে চা বানিয়ে খেলে দ্রুত আরাম দেয়।

৩। প্রচুর পরিমানে তরল খাবার গ্রহন করুন

শরীরে তাপমাত্রা বেশী থাকার কারনে প্রয়োজনীয় তরলের সরবরাহ না হলে ডিহাইড্রেশন হয়ে যেতে পারে। এই কারনে জ্বর হলে প্রচুর তরল খাবার খেতে হবে। এই সময় বিভিন্ন রকমের স্যুপ স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো। এছাড়াও লেবুর সরবত, ডাবের পানি, ভাতের মাড়, তাজা ফলের রস ইত্যাদিও বেশী বেশী পান করতে হবে।

শেষ কথা

সংক্রমণ এড়াতে একটি শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম বজায় রাখা অপরিহার্য, এবং এর জন্য প্রয়োজন একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা। পুষ্টিকর খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম এবং বিশ্রামের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো গড়ে তুলুন যা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করবে। এই টিপসগুলি অনুসরণ করে, আপনি জ্বরের বেহাল দশা সহজেই কাটিয়ে উঠতে পারবেন এবং ইমিউনিটি বাড়াতে পারবেন।

What do you think?

Written by সানজিদা আলম

একজন ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটার। টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, প্রোডাক্ট রিভিউ এবং ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। লেখালেখির পাশাপাশি ভালোবাসি পড়তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

শবে কদরের ইবাদত

নাজাতের দশ দিনের বিজোড় রাতগুলোতে করণীয় ইবাদত

Apple AirTag in Bangladesh

এয়ারট্যাগ কি এবং কিভাবে কাজ করে?