অ্যাপল এয়ারট্যাগ -এর প্রয়োজন নেই এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে প্রাসঙ্গিক কিছু কারণে সবার পক্ষে এয়ারট্যাগ ব্যবহার করা সম্ভব হয় না।
আমরা মানুষ বড় বেখেয়ালি। দৈনন্দিন জীবনে আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সম্পর্কে আমরা যথাযথ খেয়াল রাখতে পারি না। পরবর্তী সময়ে এটিকে অনেক হন্যে হয়ে খুঁজতে হয়। আর এই খোঁজার কাজ কে সহজ করে দেওয়ার জন্যই অ্যাপল এয়ারট্যাগ। অ্যাপল এয়ারট্যাগ কী এবং কিভাবে কাজ করে জানতে নিচের লিংকটি ভিজিট করুন।
এয়ারট্যাগ কি এবং কিভাবে কাজ করে?
তবে সবচাইতে বড় সমস্যাটি হলো, অনেকে অ্যাপল এয়ার ট্যাগ ব্যবহার করতে চান আবার অনেকের কাছে এটি থাকার সত্ত্বেও, এটা কি কি কাজে লাগে বা কোথায় কোথায় ব্যবহার করা হয় তা সম্পর্কে জানেন না। বিষয়টি না জানার কারণে আপনাকে বিভ্রান্তিতে পরতে হতে পারে।
আজকে আমি এই লেখাটির মাধ্যমে শেয়ার করতে যাচ্ছি অ্যাপল এয়ারট্যাগ এর সেরা কয়েকটি ব্যবহার নিয়ে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক এটি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায়।
১. চাবি ট্র্যাক করুন
চাবি হারানোর দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার করতে পারেন অ্যাপল এয়ারট্যাগ। প্রয়োজনীয় সকল চাবি একত্রিত করে এর সাথে অ্যাপল এয়ারট্যাগ সংযুক্ত করুন। এবার যখনই এটি কোথাও ফেলে আসবেন, অ্যাপল এয়ারট্যাগের মাধ্যমে আপনি এর অবস্থান এক নিমিষেই নিণর্য় করতে পারবেন এবং আপনার চাবিগুলো পুনরায় ফিরে পাবেন।
২. বাইক ট্র্যাক করুন
কে চায় তার পছন্দের বাইকটি/ স্কুটারটি হারিয়ে যাক। নিশ্চয় না? বাইক হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা বর্তমানে অহরহ ঘটছে। এ ধরনের দূর্ঘটনা থেকে পরিত্রান পেতে অ্যাপল এয়ারট্যাগ ১০০% কার্যকর।
এয়ারট্যাগটিকে আপনার বাইকের সাথে যুক্ত করে রাখুন, যে কেউ বাইকটিকে যেকোনো জায়গায় নিয়ে রাখুক, অ্যাপল এয়ারট্যাগ যাদুর মত আপনাকে স্মরণ করিয়ে দেবে এর লোকেশন। তাই আপনার বাইকে অ্যাপল এয়ারট্যাগ যুক্ত করুন আর এটি হারানোর ভয় থেকে নিশ্চিতে থাকুন।
৩. পোষাপাখি বা প্রানী ট্র্যাক করুন
আপনার যদি আদরের কুকুরছানা, বিড়ালছানা অথবা যেকোনো পোষাপাখি বা প্রানী থাকে। তাহলে অবশ্যই এয়ারট্যাগ আপনার জন্য একটি উপকারী যন্ত্র। কেননা, আদর করে পোষ মানানো এসব প্রানীর সাথে আমাদের সম্পর্ক ঠিক মানুষের মতই। আপনজন নিখোঁজ হলে যেমন কষ্ট অনুভব হয় ঠিক পোষা প্রানী গুলোও হারিয়ে গেলে একই কষ্ট লাগে।
বিভিন্ন কারনে পোষা প্রানী গুলো হারিয়ে যেতে পারে। যেমন কখনো চোরের হাতে পরে আবার কখনো পথ ভুলে। আপনি যদি এয়ারট্যাগটি আপনার পোষা প্রানীর গলায় একটি চেইন অথবা লুপ দ্বারা সংযুক্ত করেন তাহলে এ প্রানীটি আপনার হাতছাড়া হবার ভয় একেবারেই নেই।
৪. মানুষকে ট্র্যাক করুন
শুনতে অবাক মনে হলেও এটাই সত্য যে অ্যাপল এয়ারট্যাগ একজন মানুষের লোকেশন ট্র্যাক করার জন্য চমৎকার একটি ডিভাইস। মানসিক ভারসাম্যহীন কোনো আত্নীয় কখন কোথায় যাচ্ছে তা জানতে এই এয়ারট্যাগ আপনাকে সর্বোচ্চ সাহায্য করবে। তাছাড়া প্রিয়জনের লোকশন জানতেও আপনি এটি ব্যবহার করতে পারেন।
৫. পাকিং লোকেশন ট্র্যাক করুন
বিভিন্ন সময় আপনাকে নতুন কোনো জায়গায় যেতে হতে পারে এবং সেখানকার পার্কিং এরিয়া আপনার অপরিচিত হওয়ায় বেশ কিছু দিন পর আপনি ভুলে যেতে পারেন যে, সর্বশেষ আপনি কোথায় পার্কিং করেছিলেন। এমন সময় একজন জ্ঞানী বন্ধুর মত অ্যাপল এয়ারট্যাগ আপনাকে সেই সর্বশেষ পার্কিং লোকেশনটি মনে করিয়ে দেয়।
ভ্রমণের সময় এয়ারট্যাগ কিভাবে কাজে লাগে
বর্তমানে ভ্রমনের জন্য এয়ারট্যাগ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভ্রমন মানে আনন্দ, তবে ভ্রমণের জন্য যাবতীয় জিনিসপত্র সংরক্ষণ করে রাখা লাগেজটি যখন হারিয়ে যায় বা হারানোর ভয় সর্বদা মনের ভিতরে কাজ করে, তখন ভ্রমনের পুরু আনন্দটাই যেন ভেস্তে যায়।
১. লাগেজের সুরক্ষা
আপনার লাগেজকে সুরক্ষিত রাখতে একটি এয়ারট্যাগ আপনাকে দূর্দান্তভাবে সাহায্য করতে পারে। এর মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আপনার লাগেজের সার্বক্ষনিক অবস্থান। অ্যাপল এয়ারট্যাগ আপনার সুটকেস বা লাগেজে ঝুলিয়ে রাখতে হবে না বরং এটিকে আপনি ব্যাগে আটকে রাখতে পারেন। এটি আপনার লাগেজের সাথে রেখে আপনার ভ্রমণকে আপনি নিশ্চিন্তে উপভোগ করতে পারেন।
২. ওয়ালেটের সুরক্ষা
বিশাল জনসমাগমের স্থানে ভ্রমণে গেলে আপনি যখন আপনার ওয়ালেটের খবর রাখতে ব্যর্থ হন। কোথাও যাওয়ার পর যখন দেখেন আপনার মানিব্যাগটি নেই এবং কখন থেকে নেই বা কোথায় হারিয়ে গেছে তাও জানেন না। তখন এর মধ্যে থাকা আপনার ব্যাংক কার্ডসহ যাবতীয় ডকুমেন্টসের জন্য আপনি অস্থির হয়ে যেতে পারেন।
ঠিক এই মহূর্তে এয়ারট্যাগ আপনার মানিব্যাগের অবস্থানের সন্ধান দিতে সক্ষম। এয়ারট্যাগ আকারে ছোট হওয়ায় আপনি সহজেই এটি আপনার মানিব্যগের সাথে যুক্ত করতে পারেন এবং আপনার মূল্যবান ওয়ালেটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেন।
৩. ফ্লাইটে এয়ারট্যাগের ব্যবহার
যখন আপনি একটি ফ্লাইটে থাকেন তখন লাগেজ হারানোর চিন্তা অথবা আপনার লাগেজ কোথায় আছে এটা জানার জন্য আপনি সারাক্ষণ ভাবনার মধ্যে থাকতে পারেন। এখানে এয়ারট্যাগ ব্যবহার করলে আপনি আপনার লাগেজ বা পাসপোর্টসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস গুলোর সাবর্ক্ষনীক খবর রাখতে পারবেন।
সর্বপরী, ভ্রমনের সময় নিজের ব্যক্তিগত সকল জিনিসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অ্যাপল এয়ারট্যাগ একটি চমৎকার ডিভাইস।
আসলে, এয়ারট্যাগ অ্যাপল কোম্পানির একটি বিশেষ উপহার। যার মাধ্যমে হারানো জিনিস ফিরে পাওয়ার মত অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। আপনি চাইলে আপনার যে-কোনো মূল্যবান জিনিসের সুরক্ষার জন্য একটি অ্যাপল এয়ারট্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। সুস্থ থাকুন এবং এয়ারট্যাগ ব্যবহার করে ব্যক্তিগত জিনিসগুলোর সবসময় খবর রাখুন।
GIPHY App Key not set. Please check settings