in

LoveLove

মোবাইল ফোন চার্জারঃ কেনার আগে জানা দরকার

Mobile phone charger buy in BD

জীবনে মোবাইল ফোন চার্জার কিনতে গিয়ে ঠকে আসেনি এমন লোক হয়তো পাওয়া যাবে না।ইলেকট্রনিক যেকোনো ডিভাইস কিনে না ধরা খেলেও চার্জার কিনে ধরা খেয়েছে এমন লোক অহরহ আছে। আপনি দোকানে গিয়ে বললেন আমাকে একটা আসল চার্জার দিন। দাম সমস্যা না, কিন্তু আসল ব্র‍্যান্ডের চার্জার দিতে হবে। বেশ দাম দিয়ে কিনে বাসায় নিয়ে যান। দুই থেকে তিনদিন ভালো চার্জ উঠে, কিন্তু এরপর থেকে সমস্যা শুরু করে দেয়। এই সমস্যাগুলো এক রকম জাতীয় সমস্যা!

দোকানদারকে মনে মনে গালি দেয়া ছাড়া আসলে আর কিছু করার থাকে না। কিন্তু আসলে দোকানদাররাও সঠিক ভাবে চার্জার সম্পর্কে জানেন না। কোন ফোনের জন্য কোন চার্জার ব্যবহার করতে হবে, কোন চার্জার ভালো সাপোর্ট দিবে এই জিনস গুলো সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকায় দোকানদাররাও ভুল করে বসে।

আমি আগের একটি আর্টিকেলে লিখেছিলাম যে শুধুমাত্র আপনার নিজের ফোনের চার্জার দিয়েই আপনি মোবাইল চার্জে দিবেন। অন্য কোনো চার্জার ব্যবহার করবেন না। কিন্তু যদি মোবাইলের সাথে দেয়া চার্জারটি নষ্ট হয়ে যায় কিংবা হারিয়ে যায় তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া তো বাধ্যতামূলক। এই জন্যই আজকে আমি আলোচনা করব মোবাইলের চার্জার কেনার সময় কোন দিকগুলা সম্পর্কে ভালো করে দেখে নিতে হবে। তো আর কথা না বাড়িয়ে আসুন শুরু করি।

ইলেকট্রনিক যেকোনো ডিভাইস কিনে না ধরা খেলেও চার্জার কিনে ধরা খেয়েছে এমন লোক অহরহ আছে। আপনি দোকানে গিয়ে বললেন আমাকে একটা আসল চার্জার দিন। দাম সমস্যা না, কিন্তু আসল ব্র‍্যান্ডের চার্জার দিতে হবে। বেশ দাম দিয়ে কিনে বাসায় নিয়ে যান। দুই থেকে তিনদিন ভালো চার্জ উঠে, কিন্তু এরপর থেকে সমস্যা শুরু করে দেয়।

আপনার মোবাইলের চার্জার কেনার সময় নিচের ৩ টি বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

  • ভোল্টেজঃ একটি চার্জারের ভোল্টেজ হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনার আগের চার্জার যত ভোল্টের ছিলো ঠিক তত ভোল্টের চার্জারই আপনাকে কিনতে হবে। ধরুন আপনার চার্জার ছিলো ৫.২ ভোল্টের। আপনি দোকানে গিয়ে দেখলেন ৫.০ ভোল্টের চার্জার। আপনি ভাবলেন মাত্র ০.২ এর ব্যবধান কিছুই না। কিন্তু না, এইটাও অনেক বড় একটি সমস্যা তৈরি করে।চার্জারের ভোল্ট যদি কম বেশি হয়ে যায় তবে আপনার ব্যাটারির একটা বিশাল ক্ষতি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই সবসময় চেষ্টা করবেন সঠিক ভোল্টের চার্জার-ই কিনার।
  • ওয়াটঃ এরপর আসে ওয়াট এর ব্যাপার। এই ক্ষেত্রে আপনি একটু কম্প্রোমাইজ করতে পারেন।কেননা ওয়াট মূলত থাকে আপনার মোবাইল কত দ্রুত চার্জ হবে তার উপর। আপনি যদি চান আপনার মোবাইল দ্রুত চার্জ করতে। তবে আপনি বেশি ওয়াট এর চার্জার নিতে পারেন। আর যদি চান যে ধীরে ধীরেই চার্জ হোক তাহলে কম ওয়াট এর। এই দিকটা সম্পূর্ন আপনার উপর।কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, রিয়েল চার্জার যে ওয়াট এর ছিলো সেই ওয়াট এর চার্জার-ই কিনা।এতে তেমন একটা পার্থক্য তৈরি হবে না।
  • প্লাগ-ইনঃ এরপর আসে প্লাগ-ইন এর ব্যাপারটা। অনেকেই এটাকে গুরুত্ব দেয় না। চার্জারের পোর্ট ২ পিনের নিবেন নাকি ৩ পিনের নিবেন সেইটা নির্ভর করে আপনার বাসার মাল্টিপ্লাগের উপর। আপনার বাসার মাল্টিপ্লাগ অনুযায়ী চার্জার নিবেন। সেই অনুযায়ী না নিলে দেখা যায় অতিরিক্ত একটা ছকেট লাগাতে হয় চার্জারের সাথে। যেটা চার্জারের বাহ্যিক সৌন্দর্য নষ্ট করে ফেলে।

নকল চার্জার চেনার উপায়ঃ

এতোক্ষন তো আলোচনা করলাম আপনার জন্য সঠিক চার্জারটি কিভাবে নির্বাচন করবেন সেই উপায় নিয়ে। এইবার আলোচনা করব নকল চার্জার চিনার উপায় গুলো কি কি। নিচের কিছু বিষয়ে মাথায় রাখলে খুব সহজে আসল নকল চার্জার চিনতে পারবেন। এই বিষয়গুলোর দিকে খুব ভালোভাবে খেয়াল করে তারপর-ই চার্জার কিনবেন।

  • ফিনিশিং ভালো হয় নাঃ নকল চার্জারের পোর্টে সবসময়ই কিছু না কিছু সমস্যা থাকে। যেমন ধরুন ফিনিশিংটা ভালো দেয় না।হালকা একটু তার বের হয়ে থাকে কিংবা পিনগুলো উচু হয়ে থাকে। আপনি যদি একটু ভালো করে চার্জারের দিকে খেয়াল করেন তাহলে চোখে পরবে। দেখতেও অনেকটা বেমানান লাগবে। আসল চার্জারের পোর্ট ইউএসবি ক্যাবলের সাথে মিল রেখেই তৈরি করা থাকবে। অন্যদিকে নকল চার্জারে দেখা যাবে পোর্টটা একটু বড় কিংবা ইউএসবি ক্যাবল ঢুকালে ফাকা যায়গা থেকে যাচ্ছে।
  • ক্যাবল কানেকশনঃ অরজিনাল চার্জারের পিন যখন মোবাইলে প্রবেশ করানো হবে তখন একেবারে খাপে খাপ বসে যাবে। পিনের অতিরিক্ত অংশ বাইরে থেকে দেখা যাবে না। অন্যদিকে নকল চার্জারের পিন মোবাইলে প্রবেশ করানো হলে ঠিকঠাক ভাবে প্রবেশ করবে না। নড়বড়ে হবে কিংবা একটু অংশ দেখা যাবে বের হয়ে আসছে।
  • চার্জারের ওজনঃ হাতে নিলেই কিন্তু বোঝা যায় কোনটা আসল চার্জার এবং কোনটা নকল চার্জার। নকল চার্জারে একটা কমদামি প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয় যা ঢুস ঢুস শব্দ করে। অন্যদিকে অরজিনাল চার্জারে এই সমস্যা দেখা যাবে না। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে ওজন।অরজিনাল চার্জার অনেকটা ভারী হয়ে থাকে। ৪০০-৫০০ গ্রামের মতো হয়ে থাকে। অন্যদিকে নকল চার্জার ২৫০ গ্রামও হয় না। তাই এই ওজনের দিকে একটু খেয়াল করে চার্জার কিনা উচিত।
  • ক্যাবলঃ অরজিনাল চার্জারের ক্যাবল থাকবে অনেকটা পুরু। কারণ তার যত মোটা হবে তার র‍্যাজিস্ট্যান্স তত কম হবে এবং ভোল্টেজ ড্রপ করবে না। অথচ ফেইক চার্জারের ক্যাবল থাকবে চিকন। ভোল্টেজ ড্রপ করে ব্যাটারির মারাত্মক ক্ষতি করে দিতে পারে। আরজিনাল চার্জারের ক্যাবল কখনই চিকন হতে পারে না এইটা মাথায় রাখবেন চার্জার কিনার সময়।
  • চার্জারের লোগোঃ ফেইক চার্জারের লোগো দেখা যাবে যে দায়সারা ভাবে বসানো হয়েছে। মাপ ঠিকমতো হয়নি, বেশি গাঢ় বা বেশি হালকা করে ফেলছে এমন দেখা যাবে। অন্যদিকে অরিজিনাল চার্জারে দেখতে পাবেন যে, খুব সুন্দর ভাবে লোগো বসানো হয়েছে। খালি চোখেই এই লোগো গুলো খুব স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যাবে।

ভালো ভালো ব্র‍্যান্ডের কিছু চার্জারঃ

বাইরের খোলা মার্কেট থেকে যেনোতেনো চার্জার না কিনে সবচেয়ে ভালো হয় কোনো বিশ্বস্থ দোকান বা অনলাইন শপ থেকে কিনা। বর্তমানে ভালো ব্র‍্যান্ডের কিছু চার্জারের মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি হলো- এ্যানকর, বাসাস, শাওমি, ওয়ানপ্লাস। তবে আপনি যে ব্র্যান্ডের ফোন ব্যবহার করছেন যদি সেই ব্র্যান্ডেরই ভোল্ট-ওয়াট অনুযায়ী অরিজিনাল চার্জার বাজারে থেকে থাকে তবে সেটাই আপনার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত।

অনেক কিছুই তো বলে ফেললাম চার্জার নিয়ে। আর কিছু লিখতে চাচ্ছি না। অনেক বড় হয়ে যাবে।অন্যদিন দেখা হবে অন্য কোনো আর্টিকেল নিয়ে। আজ এ পর্যন্ত-ই।

What do you think?

11 Points
Upvote Downvote

Written by এস এম কাফি

নটরডেম কলেজ, ব্যাচ-২২। ওয়ার্ডপ্রেসে দক্ষ্য, যেকোনো বিষয়ের উপর আর্টিকেল এবং ডকুমেন্টারি লিখতে পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

what-to-eat-what-not-to-eat-for-a-new-mother

স্তন্যদানকারী মা কি খাবেন আর কি খাবেন না

Healthy-diet-tips

স্বাস্থ্যকর খাবারের ৭টি টিপস যা অবশ্যই জানা উচিত