in

LoveLove CuteCute OMGOMG

স্বাস্থ্যকর খাবারের ৭টি টিপস যা অবশ্যই জানা উচিত

Healthy-diet-tips

মানুষের মৌলিক চাহিদার একটি হল খাদ্য। খাদ্য খেলে শরীরের বৃদ্ধি ঘটে, পুষ্টি সরবরাহ হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। কিন্তু সব খাবারই কি পুষ্টিকর? শরীরের জন্য সবই কি উপকারী? উত্তর হলো না। আমাদের খেতে হবে সঠিক এবং সুষম খাবার এবং সঠিক সময়ে। এসব বিষয় নিয়ে আরো আলোচনা করা যাক এই আর্টিকেলে।

আমরা আমাদের দেহের যে পরিমাণ শক্তি ব্যবহার করি তার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালরি গ্রহণ করা দরকার। আমাদের ক্যালরি গ্রহণ ও শক্তি খরচের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। আর এটাই স্বাস্থ্যকর খাবারের চাবিকাঠি। আজকের আর্টিকেলে স্বাস্থ্যকর খাবারের ৭ টি টিপস নিয়ে লিখেছি যা সত্যিই আমাদের দেহের জন্য দরকারি। 

আমরা যদি আমাদের শরীরের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাই বা পান করি তবে আমাদের ওজন বাড়বে এবং শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হবে। কারণ শরীরের অতিরিক্ত যে শক্তি অব্যবহৃত থাকে তা চর্বি হিসাবে সঞ্চিত হয়। আবার যদি খুব কম খাই এবং পান করি তবে আমাদের ওজন হ্রাস পাবে। তাতেও শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হবে। শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেবে।

স্বাস্থ্যকর খাবার বলতে আসলে কি বুঝি

স্বাস্থ্যকর খাবার মানে হল যে খাবারে সব খাদ্য উপাদান যথাযথ পরিমাণে উপস্থিত থাকে। এরকম খাবার হল সুষম খাদ্য। সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে আমাদের শরীর তার প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি পায়। এছাড়া খাদ্য গ্রহনের নির্দিষ্ট সময়ও আছে। অসময়ে খাবার গ্রহণও ঠিক নয়।

গবেষণায় দেখা যায় যে, পুরুষদের খাবারে দিনে প্রায় ২,৫০০ ক্যালোরি এবং মহিলাদের খাবারে প্রতিদিন প্রায় ২,০০০ ক্যালোরি থাকা উচিত। এবার চলুন জেনে নিই স্বাস্থ্যকর খাবারের ৭ টি টিপস নিয়ে।

আমরা অনেকে সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাই কারণ মনে করি যে এটি  ওজন কমাতে সাহায্য করবে। কিন্তু রাতের দীর্ঘ সময় ঘুম থেকে ওঠার পরে সকালে আমাদের পাকস্থলি খালি থাকে। এজন্য সকালবেলা ফাইবার, কম চর্বি, চিনি এবং লবণ সমৃদ্ধ একটি সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে আমরা প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে পারি।

১/ দৈনন্দিন খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে শর্করা গ্রহণ

স্বাস্থ্যকর খাবারের ৭ টি টিপসের মধ্যে প্রথম টিপসটি হল আমাদের প্রাত্যহিক খাবারের এক তৃতীয়াংশের বেশি শর্করা হওয়া উচিত। এসব শর্করার মধ্যে রয়েছে আলু, রুটি, ভাত এবং সিরিয়াল বা ওটস।

দানাদার শস্যে উচ্চ মানের ফাইবার উপস্থিত থাকে। এজন্য ভাত, লাল আটার রুটি, আলু ইত্যাদি আমাদের প্রতিদিনই গ্রহণ করা উচিত। কারণ এ খাবারগুলোতে পরিশ্রুত স্টার্চি কার্বোহাইড্রেটের চেয়ে বেশি ফাইবার থাকে এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য শরীরে শক্তি জমা রাখতে সহায়তা করে।

এজন্য প্রতিটি প্রধান খাবারের সাথে কমপক্ষে ১ টি শর্করা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কেউ কেউ মনে করেন এসব শর্করা ওজন বাড়াচ্ছে। কিন্তু এ কথা ঠিক নয়, যেমন ছোলায় যে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে তা অর্ধেকেরও কম ক্যালরি ও চর্বি সরবরাহ করে।

তাছাড়া যখন এই ধরনের খাবার রান্না বা পরিবেশন করা হয় তখন সেগুলোতে যোগ করা চর্বি বা তেল যা ক্যালরির পরিমাণ বাড়ায় – উদাহরণস্বরূপ, আলুর চিপস ভাজতে গিয়ে তেল লাগে, রুটি বানাতে বা ভাজতে গিয়ে মাখন বা তেল ব্যবহৃত হওয়ায় এসব খাবারের ক্যালরি বেড়ে যায়। যা স্থূলতার সহায়ক হতে পারে।

২/ নিয়মিত ফলমূল এবং সবজি খেতে হবে

আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন ধরনের ফল এবং সবজির অন্তত ৫টি অংশ খাওয়া দরকার। অর্থাৎ এগুলো তাজা, হিমায়িত, টিনজাত, শুকনো বা রসযুক্ত হতে পারে। তবে একদিনে একসাথে এরকম ৫ টি অংশ নাও খাওয়া হতে পারে। তাই সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে যেন দৈনন্দিন খাবারে ফল ও সবজির উপস্থিতি রাখা।

এজন্য আমরা  সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নানা ধরণের ফলমূল ও সবজি পর্যায়ক্রমে খেতে পারি। কখনও ভরা পেটে, কখনও বা খালি পেটে এসব ফল খাওয়া যায়। মৌসুমি ফল যেমন আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ, বাঙ্গি, বাতাবি লেবু, আমড়া ইত্যাদি খেতে পারি। বিভিন্ন সাইট্রাস ফল যেমন পেয়ারা, কদবেল, তেঁতুল, বড়ই, চালতা, আমলকী, গাজর, শসা, আনারস ইত্যাদিও খেতে পারি। আর সাথে আপেল, পেয়ারা, কমলা, আখ, কলা, বেদানা, নাশপাতি তো পাওয়া যায় সবসময়ই। শুকনো ফলের মধ্যে খেজুর, কিশমিশ, বাদাম ইত্যাদি খাওয়া যায়। এছাড়া বেলের শরবত, তরমুজের জুস, আনারসের জুস, বেদানার জুস, কলার স্মুদি, ফলের চাট, ফলমিশ্রিত ফালুদাও খেতে পারি। আর প্রতিদিনের খাবারে তাজা, টিনজাত বা হিমায়িত ফল এবং সবজি অন্তত ৮০ গ্রাম এবং শুকনো ফল ৩০ গ্রাম রাখা উচিত।

৩/ মাছ হল প্রোটিনের একটি ভালো উৎস

মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে। সপ্তাহে কমপক্ষে ২ দিন ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন। আর অন্তত ১ দিন তৈলাক্ত মাছ খান। কেননা মাছের তেল শরীরের জন্য ভালো।তৈলাক্ত মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাট বেশি থাকে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে, রক্তচাপ কমাতে, ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পুরণ করতে, এ্যাজমা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তৈলাক্ত মাছের মধ্যে রয়েছে – ইলিশ, টুনা, সার্ডিন, স্যামন, ট্রাউট, হেরিং, কডসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ। এ ধরণের মাছ ওমেগা ফ্যাট তথা প্রাণিজ তেলের বড় উৎস।

৪/ স্বাস্থ্যকর খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং চিনি কমিয়ে দিন

আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় চর্বিরও প্রয়োজন, তবে সেটা যেন বাড়াবাড়ি না হয়ে যায় তার দিকে মনোযোগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সিদ্ধ, আধা সিদ্ধ, কাঁচা কোন খাবার খাওয়া সম্ভব হলে সেগুলো বেশি খাওয়া দরকার। এর ফলে রান্না করতে গিয়ে তেলের ব্যবহারটা অন্তত হবে না। আবার একই তেলে বারবার ভাজাভাজি করা উচিত নয়। এতে তেলে ক্ষতিকর ট্রান্স ফ্যাট তৈরি হয়। 

আর খাবারে চিনি বা মিষ্টির ব্যবহারও যত কম হবে ততই তা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কারণ মিষ্টি আমাদের ওজন বাড়াতে পারে এবং দাঁতের ক্ষতি করতে পারে।

৫/ খাবারে লবণের পরিমাণ কমিয়ে আনা

আমরা বাঙালিরা যখন ভাত খাই তখন আলাদা করে লবণ খাই। এছাড়া রান্নার সময় খাবারে দেওয়া লবণ তো আছেই। এভাবে অতিরিক্ত লবণ খেলে উচ্চ রক্তচাপ বাড়তে পারে এবং অন্যান্য সমস্যাও হতে পারে। আমরা বিভিন্ন প্রসেসড ফুড খাই যেমন সস, আচার, সালাদ, মেয়নিজ বা দোকানের ফাস্টফুড যেগুলোতে আগে থেকেই লবণ থাকে। এ অবস্থায় আলাদা লবণ না খেলেও রুটি, সবজি, মাছ, মাংস রান্নায় লবণ থাকার ফলে আমাদের হয়তো অনেক বেশি লবণ খাওয়া হয়ে যায়। তাই সুস্বাস্থ্যের জন্য অতিরিক্ত লবণ পরিহার করতে হবে। 

প্রতি ১০০ গ্রাম খাবারে ১.৫ গ্রামের বেশি লবণ মানে লবণের পরিমাণ বেশি। ১১ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশুদের দিনে ৬ গ্রামের বেশি লবণ (প্রায় এক চা চামচ) খাওয়া উচিত নয়। ছোট বাচ্চাদের আরও কম হওয়া উচিত।

৬/ পিপাসা পেলে পানি খেতে হবে

ডিহাইড্রেটেড হওয়া বন্ধ করতে প্রচুর পানি বা তরলজাতীয় খাবার পান করতে হবে। প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ গ্লাস পান করা দরকার। তবে প্রতিদিনের খাবারে ব্যবহৃত পানি এ হিসেবের বাইরে। চিনি ছাড়া শুধু ফলের রস, কম চর্বিযুক্ত দুধ এবং চা ও কফি সহ কম চিনিযুক্ত পানীয় স্বাস্থ্যকর খাবারের অন্তর্ভুক্ত।

অপরদিকে চিনিযুক্ত কোমল পানীয় এড়াতে চেষ্টা করতে হবে, কারণ এতে ক্যালরি বেশি থাকে।  এগুলো দাঁতের জন্যও খারাপ। আর ফলের রস, উদ্ভিজ্জ রস বা সবজির রস এবং স্মুদি থেকে গৃহিত মোট পানীয় দিনে ১৫০ মিলির বেশি হওয়া উচিত নয়। গরম আবহাওয়ায় বা ব্যায়াম করার সময় বেশি করে পানি পান করতে হবে।

৭/ সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাবেন না

আমরা অনেকে সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাই কারণ মনে করি যে এটি  ওজন কমাতে সাহায্য করবে। কিন্তু রাতের দীর্ঘ সময় ঘুম থেকে ওঠার পরে সকালে আমাদের পাকস্থলি খালি থাকে। এজন্য সকালবেলা ফাইবার, কম চর্বি, চিনি এবং লবণ সমৃদ্ধ একটি সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে আমরা প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে পারি।

বাঙালিরা সকালে ভাত খেলেও স্বাস্থ্য রক্ষায় তা পরিহার করা উচিত। কারণ ভাত খেলে সাথে সবজি, ভাজি, ডাল, ডিম খেতে হয়। এগুলো বেশি ক্যালরি তৈরি করবে। এজন্য ২/৩ টি রুটি ও সাথে সবজি, ডিম নিয়ে সকালের নাশতা শেষ করা যেতে পারে। এতে পেট ভরার পাশাপাশি ক্যালরির ভারসাম্যও বজায় থাকবে।

স্বাস্থ্যকর খাবারের ৭ টি টিপস জেনে কোন উপকার পেলে আর্টিকেল টি লেখা সার্থক হবে মনে করছি।আর খারাপ লাগলেও জানাবেন কমেন্ট করে। 

What do you think?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

Mobile phone charger buy in BD

মোবাইল ফোন চার্জারঃ কেনার আগে জানা দরকার

Why eat food supplements? What are its benefits?

ফুড সাপ্লিমেন্ট কেন খাবেন? এর সুবিধাগুলো কি কি?