in

LoveLove

অ্যালার্ম ক্লক: সময়ের কাজ সময়েই হোক

আছে কিছু নেতিবাচক দিক

Alarm Clock

ছাত্রছাত্রী হোক বা চাকুরীজীবী, অথবা কেবলমাত্র গৃহিণী, অ্যালার্ম ক্লক সবার জন্যই সমান গুরুত্বের। তবে আপনি যদি খুব বেশী ঘুম কাতুরে হয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয় এর কর্কশ শব্দ আপনার মনে আনন্দের উদ্রেক ঘটাবে না তবে আপনাকে সঠিক সময়ে জাগিয়ে দিতে ঠিকই সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।

স্মার্টফোনের এই জামানায় আপনি হয়ত মনে করতে পারেন অ্যালার্ম ক্লকের কি কাজ? রবি ঠাকুর ছোট গল্পের কথা যেমন বলেছেন শেষ হইয়াও হইলো না শেষ ঠিক সেরকমই স্মার্ট ডিভাইসের এই জামানায় অ্যালার্ম ক্লকের ভুমিকাও শেষ হইয়াও হইলো না শেষের মতই। কিভাবে? চলুন দেখি-

১। সকালটা শুরু হয় সময়মত

হ্যা, সকালে সময় মত ঘুম থেকে উঠতে পারলে সারাদিনের সময়সূচিতে অপ্রয়োজনীয় পরিবর্তনের দরকার পড়ে না। কিন্তু দিনের শুরুটাই যদি সময়মত না হয় তাহলে সারাদিনের সব কাজই এলোমেলো হয়ে যায়। আর তাই, যুগে যুগে কালে কালে অ্যালার্ম ঘড়ির একটাই কাজ, সময় মত জাগিয়ে দেয়া। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, যারা নিয়মিত ঘুম থেকে সঠিক সময়ে জেগে ওঠার জন্য অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করে তাদের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ঘুম ভেঙ্গে যায়। এর ফলে দিনভর ক্লান্তি ও অবসন্ন ভাব আর থাকে না।

২। সামাজিকভাবে সময়ানুবর্তী করে তোলে

আমরা সমাজে বাস করি আর সমাজের সকলের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে চেষ্টা করি। সঠিক সময়ে অফিস বা স্কুলে পৌঁছানো অথবা ব্যবসায়িক কাজে যোগ দেয়া তাই অত্যন্ত জরুরী। এই ছোট্ট ঘড়িটি তাই দিনের শুরুতে ঠিক সময়ে জাগিয়ে দিয়ে সামাজিকভাবে সময়ানুবর্তী করে তুলতে সাহয্য করে।

অ্যালার্ম ক্লক এখন আর কেবল ঘুম ভাঙ্গানোর কাজে সীমাবদ্ধ নেই। বরং এটি একটি স্মার্ট ডিভাইজ যেখানে থাকতে পারে স্পিকার, হিউমিডিফাইয়ার, মোবাইল ফোন চার্জার ইত্যাদি। বর্তমান বাজারে শাওমি, বাসাস সহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এমন কিছু স্মার্ট ডিভাইজ পাওয়া যায় যেখানে নানা স্মার্ট ফিচারের সাথে অ্যালার্ম ক্লক যুক্ত থাকে।

৩। ঘুমের একটি নির্দিষ্ট সিডিউল গড়ে তোলে

রাত জেগে কাজ করা, পড়া অথবা স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ নিয়ে সময় কাটাতে গিয়ে আমরা অনেক সময় অনেক বেশী রাত জেগে ফেলি। ফলস্বরুপ পরদিন ভোরে আর ঠিক সময়ে ঘুম ভাঙ্গে না। কিন্তু নিয়মিত একই সময়ে যদি ওঠার অভ্যাস তৈরি হয়ে যায় তাহলে রাতে অপ্রয়োজনে খুব বেশি সময় জেগে থাকাও সম্ভব হবে না। আর এভাবে সহজেই ঘুমের একটা নির্দিষ্ট সিডিউল গড়ে তুলতে পারবেন।

৪। গভীর ঘুম

দেহ যন্ত্রকে সুস্থ ও সঠিকভাবে চালাতে হলে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় ঘুমের প্রয়োজন। কিন্তু দেখা যায় দিনে বা রাতে যখনই ঘুমান সময়মত ওঠার তাগিদে হয়ত নির্ধারিত সময়ের আগেই আপনার কয়েকবার ঘুম ভেঙ্গে যায়। ফলে ঘুম কোনভাবেই গভীর হয় না। ফলে মাথা ঝিমঝিমভাব, ক্লান্তিবোধ, কাজে অমনোযোগীতা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। তাই ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রাখলে সময়মত উঠতে পারবেন কিনা সেই দুশ্চিন্তা নিয়ে ঘুমাতে যেতে হবে না, ফলে ঘুমও হবে বেশ গভীর।  

অ্যালার্ম ক্লক যে কেবল একটি উপকারী বস্তু তা কিন্তু নয়, অন্য সব কিছুর মতই এরও কিছুটা নেতিবাচক দিক রয়েছে। যেমন ধরুন-

১। ঘুমের ব্যাঘাত

বর্তমানে বেশীরভাগ ঘুম বিশেষজ্ঞরা বলেন ঘুম গভীর ও নিরবচ্ছিন্ন করতে ঘরে থাকা ঘড়িকে ঢেকে রাখতে। এর কারন হল যাদের ঘুম দেরিতে আসে বা বার বার ঘুম ভাংগার সমস্যা হয় তারা বার বার ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকান, এতে ঘুম আরো বেশী ব্যাহত হয়।

২। মানসিক চাপ

স্ট্রেস হরমোন কর্টিসেলের মাত্রা স্বাভাবিকভাবে ঘুম থেকে উঠার পর বেড়ে যায়, তার উপর যদি কোন বেসুরো কর্কশ শব্দে ঘুম ভাঙ্গে তাহলে তো কথাই নেই এক লাফে আরো বেশী বেড়ে যেতে পারে হরমোনের মাত্রা।

৩। শারীরিক সমস্যা

আপনার ঘুম যদি অপর্যাপ্ত হয় তাহলে নানবিধ শারীরিক সমস্যা হতে পারে। বয়স্ক ব্যক্তিদের তুলনায় অল্প বয়সী তরুনরা সাধারনত রাত জাগে বেশী ফলে প্রয়োজনের তুলনায় তাদের ঘুমের পরিমান কম হয় আর এই কারনে তাদের মধ্যে ওজন বৃদ্ধি, স্থুলতা, হতাশা ইত্যাদি নানবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

৪। অন্যের বিরক্তির কারন

সকাল সকাল আপনার ওঠার প্রয়োজন হলেও আপনার সাথে যিনি ঘুমাচ্ছেন বা পাশের ঘরে আছেন তার প্রয়োজন নাও হতে পারে। কিন্তু ঘড়ির কর্কশ শব্দ আপনার সাথে সাথে অন্যদেরও ঘুম থেকে জাগিয়ে দিতে পারে।

আধুনিক এলার্ম ক্লকের অসাধারন সব ফিচার

অ্যালার্ম ক্লক এখন আর কেবল ঘুম ভাঙ্গানোর কাজে সীমাবদ্ধ নেই। বরং এটি একটি স্মার্ট ডিভাইজ যেখানে থাকতে পারে স্পিকার, হিউমিডিফাইয়ার, মোবাইল ফোন চার্জার ইত্যাদি। বর্তমান বাজারে শাওমি, বাসাস সহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এমন কিছু স্মার্ট ডিভাইজ পাওয়া যায় যেখানে নানা স্মার্ট ফিচারের সাথে অ্যালার্ম ক্লক যুক্ত থাকে।

এসব স্মার্ট ডিভাইসে সাধারনত নিচের বৈশিষ্ট ও ফিচারগুলো পাওয়া যায়।

  • আকর্ষনীয় রঙ এবং ডিজাইন।
  • সহজ ব্যবহারবিধি, এমনকি মাত্র একটি বোতাম দিয়েই ঘড়িগুলো অপারেট করা সম্ভব।
  • অডিও স্পিকার।
  • এডজাস্টেবল ব্যাকলাইট যা দিয়ে ব্রাইটনেস কমবেশী করা যায়।
  • ব্লুটুথ কানেকশন।
  • ওয়্যারলেস চার্জিং ফাংশন।
  • টেমপারেচার হিউমিডিটি মনিটর ইত্যাদি।
  • মোবাইলের সাথে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দূর থেকে অপারেট করার সুবিধা।

এই সমস্ত ফিচার ব্র্যান্ড এবং মডেল ভেদে ভিন্ন হতে পারে।

যেখানে সুবিধা আছে সেখানে অসুবিধাও থাকবে এটাই স্বাভাবিক তাহলে এখন কি উপায়? এখানে বলে রাখি ঘুম থেকে ওঠার স্বাস্থ্যকর মধ্যবর্তী কিছু উপায়ও রয়েছে। যেমন ধরুন-

ঘুমাতে যাওয়ার আগে চমৎকার কিছু প্রস্তুতি নিয়ে নিন। পরিপাটি করে বিছানা তৈরি করুন, আরামদায়ক পোশাক পড়ুন। ঘর অন্ধকার রাখুন এবং পুষ্টিকর খাবার খান।

ঘুমাতে যাওয়ার কয়েকঘন্টা আগে থেকে চা কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। বিছানায় মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহার করা বন্ধ করুন।

মানুষ অভ্যাসের দাস তাই চেষ্টা করুন প্রতিদিন একই সময় বিছানায় যেতে এবং একই সময়ে উঠতে। এতে কোন প্রকার সাহায্য ছাড়াই আপনার সময়মত ওঠার অভ্যাস তৈরি হয়ে যাবে। পরিশেষে, গুরুত্বপূর্ন কাজ সময়মত করার জন্য অভ্যাসের অপেক্ষা না করে অ্যালার্ম ব্যবহার করায় উত্তম তবে এক্ষেত্রে আপনি স্মার্ট অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করতে পারেন। বর্তমানে এমন অনেক ঘড়িই পাওয়া যায় যেগুলো কর্কশ শব্দ না করে উজ্জ্বল আলো, এবং ভাইব্রেট করে যার ফলে উচ্চ শব্দে মাথা ব্যাথা ছাড়াই সময়মত আপনার ঘুম ভাঙ্গবে।

What do you think?

Written by সানজিদা আলম

একজন ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটার। টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, প্রোডাক্ট রিভিউ এবং ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। লেখালেখির পাশাপাশি ভালোবাসি পড়তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

Green Tea

গ্রিন টির গুনাগুন ও ৮ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

টিডব্লিউএস ইয়ারবাডস সম্পর্কে অজানা তথ্য!