in

কিভাবে একজন আদর্শ মুসলিম নারী হয়ে উঠবেন

how-to-become-an-ideal-muslim-woman

একজন নারীর জন্য ইসলামিক যে বিধিবিধানগুলো রয়েছে তা পশ্চিমা সংস্কৃতি থেকে অনেক বেশী ভিন্ন। তবে আপনার মনে যদি আপনার রবের প্রতি সত্যিকারের ভালোবাসা থেকে থাকে তাহলে আপনি পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুন না কেন একজন কর্তব্যপরায়ণ মুসলিম নারী হওয়া সম্ভব। ধরুন আপনি ধর্মীয় কোন অনুশাসনের অবহেলা করেছেন এবং এই কারনে আপনার চরম অনুশোচনা হচ্ছে এর অর্থ হল আপনি যাই করে থাকুন না কেন, ইসলামের পথে ফিরে আসতে পারবেন।

শিশুরা বিশেষ করে মেয়ে শিশুরা ইসলামিক জ্ঞান ও শিক্ষা সর্ব প্রথম তার পরিবার থেকেই পেয়ে থাকে। এর পর বড় হওয়ার সাথে সাথে স্কুল ও পারিপার্শিক পরিবেশ থেকেও শিক্ষা পেতে থাকে। আপনার ঘরেও যদি একটি কন্যা সন্তান থেকে থাকে তাহলে এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন কিভাবে সে একজন আদর্শ মুসলিম নারী হয়ে উঠতে পারে।

১। আল্লাহর উপর পূর্ন বিশ্বাস স্থাপন করা

এটা কেবল নারী নয় একজন মুসলিম পুরুষের জন্যেও অত্যাবশ্যকীয়। আপনাকে মনে প্রানে এটা বিশ্বাস রাখতে হবে যে সব কিছুই ভালো হবে যদি আপনি আল্লাহর উপর পূর্ন ভরসা রাখেন। আল্লাহ চাইলে আপনার সব গুনাহ মাফ করে দিতে পারেন কারণ তিনি সর্বজ্ঞ ও ক্ষমাশীল।  

২। ধর্মীয় অনুশাসনগুলো মেনে চলতে না পারার কারণ খুঁজে বের করুন

আপনি হয়তো ইতোমধ্যে অনুধাবন করতে পেরেছেন যে, ধর্মীয় বিধিনিষেধগুলো আপনি মেনে চলতে পারছেন না। তাই আর দেরি না করে এর কারনগুলো খুঁজে বের করুন। ধরুন আপনার এমন কিছু বন্ধু আছে যারা আপনাকে ইসলামের পথ থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে তাহলে অনতিবিলম্বে তাদের কাছ থেকে সরে আসুন।

হিজাব শুধু এক টুকরো কাপড় নয় যা আপনাকে আবৃত করবে, এটি আপনার আচরণ, কথাবার্তা, আপনার দৃষ্টি এবং আপনার হৃদয় সহ আপনার সমগ্র আত্মকে আবৃত করে এবং রক্ষা করে। একটি পরিপূর্ন পর্দা আপনাকে মুসলিম হিসেবে চিহ্নিত করার মাধ্যমে আপনাকে মানসিক ও আধ্যাত্মিকভাবে পরিবর্তন করে।

৩। পূর্ববর্তী গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন

তওবাকারী আল্লাহর নিকট অতীব প্রিয়। তাই আপনার কৃতকর্মের জন্য তওবা করুন এবং আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, তিনি তওবাকারীকে ভালোবাসেন এবং তাকে ক্ষমা করতেও ভালোবাসেন। অতীতে যে ভুলগুলো করে ফেলেছেন সেগুলো পুনরাবৃত্তি করবেন না বলে ওয়াদা করুন। সারাদিন ইস্তেগফার পাঠ করাকে অভ্যাসে পরিনত করে নিন।

৪। পরিপূর্ন পর্দা করুন

মনে রাখবেন হিজাব শুধু এক টুকরো কাপড় নয় যা আপনাকে আবৃত করবে, এটি আপনার আচরণ, কথাবার্তা, আপনার দৃষ্টি এবং আপনার হৃদয় সহ আপনার সমগ্র আত্মাকে আবৃত করে এবং রক্ষা করে। একটি পরিপূর্ন পর্দা আপনাকে মুসলিম হিসেবে চিহ্নিত করার মাধ্যমে আপনাকে মানসিক ও আধ্যাত্মিকভাবে পরিবর্তন করে। পর্দা করার সাথে সাথে আপনার আত্মসম্মান এবং মূল্যবোধের পরিবর্তন হবে। বিবি আয়েশা কর্তৃক বর্ণিত একটি হাদিসে বলা হয়েছে যে আল্লাহ বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছে যাওয়া মহিলার প্রার্থনা কবুল করবেন না যদি না সে পর্দা করে।

৫। ফরজ ইবাদতগুলো পালন করুন

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের অভ্যাস করুন। বয়ঃসন্ধির পর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ প্রত্যেক মুসলমানের জন্য বাধ্যতামূলক। খাওয়া, ঘুমানো যেমন আমাদের প্রতিদিনের আবশ্যিক কাজ ঠিক তেমনভাবে নামাজকেও আবশ্যিকভাবে গ্রহন করুন। প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন নফল নামাজ আদায়ের অভ্যাস করুন।

৬। নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করুন

নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করুন। শুধু তেলাওয়াত নয় এর অর্থ বোঝার জন্য প্রয়োজনে বাংলা অনুবাদ ও শানে নযুল পড়ুন। মনে রাখবেন যে কুরআনের বাণীগুলো আল্লাহর, তাই কুরআন পাঠ আপনাকে আল্লাহর সাথে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনে সহায়তা করবে এবং আপনাকে ধর্মের সৌন্দর্য আবিষ্কার করার সুযোগ দেবে। আপনার পছন্দের কিছু আয়াত মুখস্থ করুন, সারাদিন সেগুলি আবৃত্তি করুন এবং আপনার প্রতিদিনের নামাজে সেগুলো পাঠ করুন।

৭। ইসলামকে গভীরভাবে জানার চেষ্টা করুন

ইসলামকে আরো গভীরভাবে জানার চেষ্টা করুন। ফরজ কাজগুলো বাদেও ওয়াজিব, নফল ইবাদতগুলো সম্পর্কে জানুন। সেগুলো সময় সুযোগমত পালন করার চেষ্টা করুন। নিয়মিত জিকির করুন। হারাম হালাল মেনে চলুন। ইসলামে নারীদের জন্য মাহারাম মেনে চলাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাই কারা আপনার মাহারাম এবং কারা মাহারাম নন তা জানুন এবং প্রয়োজন ব্যাতিরেকে তাদের সাথে কথপোকথন বন্ধ করুন।   

৮। বুঝে শুনে বান্ধবী নির্বাচন করুন

আমরা বন্ধু বান্ধবী দ্বারা খুব দ্রুত প্রভাবিত হয়ে পড়ি। তাই এমন বান্ধবী নির্বাচন করুন যারা পরিপূর্নভাবে ইসলামি বিধান মেনে চলে। এতে আপনিও তাদের দেখে অনুপ্রাণিত হবেন এবং ইসলামের প্রতি আপনার ভালোবাসা আরো দৃঢ় হবে।

ইসলামী বিধিবিধান মেনে একজন আদর্শ মুসলিম নারী হয়ে উঠা খুব বেশী একটা কঠিন কাজ না কিন্তু কঠিন হল এই ধারা অব্যাহত রাখা। তাই আপনাকে শুরুতেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে। আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও ভালোবাসা বুকে ধারন করতে হবে। কবরের আজাব ও জাহান্নামের আগুন সম্পর্কে জানতে হবে। সর্বোপরি কেয়ামতের দিন সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং আল্লাহর আনুগত্যে জীবন উৎসর্গ করে জান্নাতের আশায় বেঁচে থাকুন।

What do you think?

Written by সানজিদা আলম

একজন ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটার। টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, প্রোডাক্ট রিভিউ এবং ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। লেখালেখির পাশাপাশি ভালোবাসি পড়তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

ঘন চুলের উপায়

চুল ঘন করার উপায়

ইসলামে অনিদ্রার নিরাময়

ঘুম না আসার কারণ ও প্রতিকার