কেমন হবে যদি বলি যে আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ব্যবহার করতে আর সিম লাগবে না। মানে ফোনের ভেতর আলাদা করে আর সিম কার্ড লাগাতে হবেনা। কি অবাক হলেন? অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই। নাম থেকেই অনেকে ব্যাপারটা আন্দাজ করতে পেরেছেন। যারা স্মার্টফোন নিয়ে খোঁজখবর রাখেন তারা ইতোমধ্যে জানেন জিনিসটি কি। অনেক স্মার্টফোন কোম্পানি এখন তাদের সিম স্লটে জায়গা কমিয়ে ই-সিম যুক্ত করতে শুরু করেছে। কেন করছে সে আলাপ পড়ে করছি। প্রথমে আপনাদের সন্দেহ দূর করা জরুরি।
ই-সিম নিয়ে এখনও অনেকের মনে জল্পনা-কল্পনা রয়ে গেছে। এই সিম কি সব ফোনেই ব্যবহার করা যাবে? আর ই-সিম নেয়ার ক্ষেত্রে কি করতে হবে? সব জল্পনা-কল্পনাই আজ দূর হয়ে যাবে এই একটি লেখায়।
ই-সিম কী? এর সুবিধাই বা কি?
মোবাইল কেনার সময় অবশ্যই একটি সিম কার্ড স্লট থাকে। সেখানে সচরাচর দুটো সিম কার্ড রাখার সুযোগ থাকে। অনেক ফোনে একটিও থাকে। কিন্তু কিছু কিছু ফোন আছে যেখানে আপনি একটি ফিজিক্যাল সিম কার্ড আরেকটি ই-সিম রাখার সুযোগ পাবেন। এই কাজটি করায় স্মার্টফোন মডেলে সিমের জন্য বাড়তি জায়গা রাখতে হচ্ছে না। ফলে স্মার্টফোন কোম্পানি চাইলে ব্যাটারি বাড়াতে পারে বা অন্য কোনো অংশ জুড়ে দিতে পারে। এ তো গেল স্মার্টফোন কোম্পানির সুবিধা। কিন্তু আপনার সুবিধা কি?
এতক্ষণে তো বুঝে গেছেন ই-সিম এর জন্য স্লট লাগে না। মানে এটার ফিজিক্যাল রূপ নেই। আপনার স্মার্টফোনের ভেতরে কোম্পানি থেকেই একটা সিমের চিপ জুড়ে দেয়া থাকবে (এটি শুধু সাপোর্টেড ডিভাইসের ক্ষেত্রে)। আপনি যখন ই-সিম কিনে আনবেন, তখন সেই ই-সিমটির নাম্বার আপনাকে ফোনে এড করে নিতে হবে। এটি ডিভাইসের সেটিং অপশন থেকেই সহজে করা যাবে। প্রক্রিয়াটি জটিল না।
এভাবে আপনার কয়েকটা সুবিধা হচ্ছে—
প্রথমত, অনেকে দুটির বেশি সিম কার্ড রাখেন। বাড়তি সিম কার্ড অনেক সময় মানিব্যাগ বা অন্য কোথাও রাখতে হয়। অনেক সময় এই সিম কার্ড হারিয়েও যেতে পারে। ই-সিম থাকলে কিন্তু আপনার এই ঝামেলায় পড়তে হবে না। শুধু সেটিং এ গিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে সিমটি ব্যবহার করতে পারবেন।
দ্বিতীয়ত, আপনাকে স্লট খুলে অথবা পিন দিয়ে স্লট খোলার যন্ত্রণাও মাথায় নিতে হবেনা। এটাও একটা বড় সমাধান বটে।
কিভাবে পাবেন ই-সিম
এখন প্রশ্ন হলো, ই-সিম কিনতে গেলে বাড়তি ঝামেলা নিতে হবে? অবশ্যই না। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত গ্রামীনফোন এবং বাংলালিংক ই-সিম চালু করেছে। সেজন্য আপনার নিকটস্ট গ্রামীন কিংবা বাংলালিংক সেন্টারে গিয়ে সিম কেনার সুযোগ আছে। সিম কেনার জন্য এই কটি বিষয় মাথায় রাখুন—
- আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে নিন
- বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেজিস্টার করুন
মনে রাখবেন, যদি ফিজিক্যাল সিম বদল করে ই-সিম বানাতে চান সেক্ষেত্রেও উপরের দুটি বিষয় প্রয়োজন হবে।
কীভাবে ই-সিম আপনার স্মার্টফোনে একটিভ করবেন?
- প্রথমে আপনার ফোনের ডাটা কানেকশান চালু করতে হবে। ওয়াই-ফাই ব্যবহার করলেও অসুবিধা নেই।
- ই-সিম কেনার পর সিম কোম্পানি থেকে পাওয়া ছোট প্যাকেজে একটি QR Code পাবেন। এই কোডটি দিয়ে ই-সিম এক্টিভেট করা যাবে।
কোন ডিভাইসগুলো ই-সিম সাপোর্টেড?
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বাজারে মূলত ৩টি ব্র্যান্ড এর ফোনে ই-সিম সাপোর্ট করে। আইফোন, স্যামসাং আর গুগল পিক্সেল এর কিছু সংখ্যক ডিভাইস গুলোই বর্তমানে ই-সিম সাপোর্টেড।
সুবিধার জন্য মডেলগুলোর নাম দিয়ে দেওয়া হলো
অ্যাপল
- আইফোন ১৪ সিরিজ
- আইফোন ১৩ সিরিজ
- আইফোন ১২ সিরিজ
- আইফোন এসই
- আইফোন ১১ সিরিজ
- আইফোন এক্সএস সিরিজ
- আইফোন এক্সআর
স্যামসাং
- স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২২ ৫জি
- স্যামসাং গ্যালাক্সি আল্ট্রা ৫জি
- স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২২
- স্যামসাং যে ফ্লিপ সিরিজ
- স্যামসাং যে ফোল্ড ৪
- স্যামসাং গ্যালাক্সি ফোল্ড
- স্যামসাং গ্যালাক্সি নোট ২০ সিরিজ
- স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২০ সিরিজ
গুগল পিক্সেল
- গুগল পিক্সেল ৭ সিরিজ
- গুগল পিক্সেল ৬ সিরিজ
- গুগল পিক্সেল ৫ সিরিজ
- গুগল পিক্সেল ৪ সিরিজ
- গুগল পিক্সেল ৩ সিরিজ (লিমিটেড সাপোর্ট)
GIPHY App Key not set. Please check settings